চাকরির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছেন এই মৃত কর্মীদের নিকটাত্মীয়েরা। —ফাইল চিত্র।
চাকরির দাবিতে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা আন্দোলন করছেন দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের (ডিপিএল) কর্মরত অবস্থায় মৃত কর্মীদের পোষ্যেরা। এত দিন কারখানার বাইরে বসে কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা। শনিবার তাঁরা গেটের ভিতরে ঢুকে আন্দোলন করতে চাইলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
চাকরির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছেন এই মৃত কর্মীদের নিকটাত্মীয়েরা। ২০১৭-র জুলাইয়ে অনশনেও বসেছিলেন তাঁরা। কয়েক জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। পুলিশ অনশন প্রত্যাহারের আর্জি জানালেও তাঁরা শোনেননি। শেষমেশ তৃণমূলের নেতারা তাঁদের বুঝিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করান। অবস্থানকারীদের দাবি, আগে কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু হলে পোষ্যকে চাকরি দেওয়া হতো ডিপিএল-এ। কিন্তু ২০১২-র পরে থেকে তা হয়নি। দ্রুত চাকরির দাবিতে মৃত কর্মীদের শ’খানেক নিকটাত্মীয় চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি থেকে ফের আন্দোলন শুরু করেন।
ওই দিন থেকে কারখানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন তাঁরা। ১৬ দিন ধরে রিলে অনশন করছেন। বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারী দুই মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের চিকিৎসা করাতে হয়। কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও সাড়া না পেয়ে শনিবার গেটের ভিতরে ঢুকে আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁরা জানান, চরম আর্থিক দুরবস্থায় দিন কাটছে। দাবি না মেটা পর্যন্ত এখন থেকে কারখানার ভিতরে আন্দোলন করবেন তাঁরা। আন্দোলনকারীদের তরফে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, তনিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়েরা বলেন, ‘‘৩৭ দিন ধরে টানা আন্দোলন চলছে। কোনও অন্যায় দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি না। অথচ কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও সাড়া নেই।’’
এ দিন আন্দোলনকারীরা গেটের ভিতরে ঢুকতেই ডিপিএল কর্তৃপক্ষ থানায় খবর দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ চলে আসে। ১৪৪ ধারা জারির কথা বলে তাঁদের গেটের বাইরে চলে যেতে বলে পুলিশ। কিন্তু আন্দোলনকারীরা জানান, পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করতে পারে। কিন্তু তাঁরা কিছুতেই বাইরে যাবেন না।
ডিপিএল কর্তৃপক্ষ জানান, দীর্ঘদিন ধরে চরম লোকসানে চলছিল সংস্থাটি। খুব প্রয়োজন ছাড়া যে কোনও রকম নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। তাই ২০১২-র পরে আর পোষ্যদের চাকরি দেওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ডিপিএল-কে রাজ্যের অন্য বিদ্যুৎ সংস্থার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে সেই প্রক্রিয়া পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। ডিপিএল থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী বর্তমান কর্মীদের অন্য বিদ্যুৎ সংস্থায় বদলির প্রস্তাবও রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে পোষ্যদের চাকরি দেওয়ার বিষয়টি আরও জটিল হয়ে গিয়েছে। এ দিন ডিপিএলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ডিপিএলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আসবেন। আন্দোলনকারীদের যা জানানোর, তাঁকে জানাতে বলা হয়েছে। আন্দোলনকারীরা জানান, বিদ্যুৎমন্ত্রীকেও বিষয়টি জানিয়েছেন তাঁরা। ম্যানেজিং ডিরেক্টর যদি ইতিবাচক কোনও কথা না বলেন তাহলে টানা অনশনের হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy