Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সাজবে যতীন্দ্রনাথের ‘হাট’, খুশি সিঙেরকোন

এ বার প্রাচীন ওই হাটকে কিছুটা দূরে সরিয়ে উন্নত পরিকাঠামো গড়ছে প্রশাসন। হাটের নাম হচ্ছে কবির নামেই। জানা গিয়েছে, পরিকল্পনাটি রূপায়নে রাজ্য সরকার খরচ করছে ২ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা।

এখানেই হাট তৈরির জন্য বরাদ্দ হয়েছে অনুদান। নিজস্ব চিত্র

এখানেই হাট তৈরির জন্য বরাদ্দ হয়েছে অনুদান। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৮ ০১:৩৪
Share: Save:

‘দূরে দূরে গ্রাম দশ বারো খানি/ মাঝে একখানি হাট/ সন্ধ্যায় সেথা জলে না প্রদীপ/ প্রভাতে পড়ে না ঝাঁট’— কালনার সিঙেরকোন এলাকার বাসিন্দাদের বিশ্বাস, কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত ‘হাট’ কবিতাটি লিখেছিলেন ওই গ্রামের হাট দেখেই। এ বার প্রাচীন ওই হাটকে কিছুটা দূরে সরিয়ে উন্নত পরিকাঠামো গড়ছে প্রশাসন। হাটের নাম হচ্ছে কবির নামেই। জানা গিয়েছে, পরিকল্পনাটি রূপায়নে রাজ্য সরকার খরচ করছে ২ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা।

১৮৮৭ সালে ২৬ জুন যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের জন্ম। নদিয়া জেলার শান্তিপুরে পৈত্রিক বাসভূমি থাকলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি কবির জন্ম হয়েছিল কালনা ২ ব্লকে পাতিলপাড়া গ্রামের মাতুলালয়ে। ইতিমধ্যে সেখানে কবির মূর্তি বসেছে। বছর খানেক আগে তৈরি হয়েছে কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত গবেষণাগার। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, মামারবাড়িতে দীর্ঘ সময় কাটাতেন কবি। তাঁর লেখালেখির অধিকাংশের সাক্ষীও এই গ্রাম। ‘হাট’টি কবির স্মৃতিবাহী বলেও বাসিন্দাদের দাবি।

সপ্তাহের বৃহস্পতি এবং শনিবার ওই হাট বসে। আশপাশের অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ আনাজ-সহ নানা জিনিসপত্র কিনতে আসেন সেখানে। তবে মালিক বেশ কিছু জমি বিক্রি করে দেওয়ায় হাটটির পরিসর ক্রমশ কমে আসছিল। শেড না থাকায় বৃষ্টি পড়লে মুশকিলে পড়তেন ক্রেতা বিক্রেতা। এ ছাড়া পর্যাপ্ত পানীয় জল এবং সাফাইয়েরও অভাব ছিল। ফলে বারবারই প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করছিলেন বাসিন্দারা।

এ বছর সেই দাবি মেনেই এগোয় প্রশাসন। সিঙেরকোন হাটতলা থেকে ১০০ মিটার দূরে জেলা পরিষদের একটি তিন একর জমি রয়েছে। সেখানেই হাটটি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগ করে ব্লক প্রশাসন। টাকাও বরাদ্দ হয়। সিঙেরকোনে গিয়ে দেখা যায়, পাকা রাস্তার পাশে জমিতে জ্বলজ্বল করছে ফ্লেক্স। তাতে লেখা এখানেই গড়ে উঠবে কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত হাট। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন তলা ভবন তৈরি হবে। ব্যবসার জন্য বেশ কিছু ঘর, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য হলঘর এবং গেস্ট হাউস থাকবে। ওই ভবনে হাটটি ছাড়াও শিরিষতলা এলাকার একটি পাইকারি বাজার তুলে আনা হবে। ফলে এলাকার মানুষ একই জায়গায় পাইকারি এবং খুচরো বাজার পাবেন। তৈরির পর ঘরগুলি বেকার যুবকদের মধ্যে বিলি করা হবে।

কালনা ২ বিডিও মিলন দেবগড়িয়া জানান, পরিকল্পনাটি রূপায়নের দায়িত্ব রয়েছে পূর্ত দফতরের উপর। প্রাথমিক কাজও এ এগিয়েছে। আশা করা যায়, দ্রুত কাজ শুরু হবে। বিডিওর দাবি, ভবনটিতে বেকারদের জন্য যে ঘরগুলি থাকবে তার ২৫ শতাংশ বরাদ্দ হবে সংখ্যালঘুদের জন্য।

কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত গবেষণাকেন্দ্রের সভাপতি প্রণব রায় বলেনস, ‘‘সিঙেরকোনের হাটটি এলাকায় আবেগের বিষয়। হাটটি ঢেলে সাজার খবরে মানুষ খুশি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE