Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রাতেও ঘেরাও উপাচার্য

বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের অভিযোগ, আগেও বহুবার ‘অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারে’ বদল, হস্টেলের সাধারণ সমস্যা নিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে তখনও চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে তখনও চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:০৩
Share: Save:

বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে গিয়েছিলেন উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহা। বিকেলে ফেরার পথে তাঁর পথ আটকান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। দফায় দফায় অভিযোগ শুনে গাড়ি থেকে নেমে আসেন উপাচার্য। পাশে রাখা একটি চেয়ারে বসে পড়েন। অভিযোগ, তাঁকে ঘিরে ক্যাম্পাসের রাস্তায় বসে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে শুরু হওয়া ঘেরাও চলে ঘণ্টা তিনেক। পৌনে ৯টা নাগাদ পাশের একটি ঘরে শুরু হয় আলোচনা।

বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের অভিযোগ, আগেও বহুবার ‘অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারে’ বদল, হস্টেলের সাধারণ সমস্যা নিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। বারবার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও কিছুই হয়নি। এ দিনও পাকাপাকি সুরাহার আশ্বাস না মেলা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে, দাবি তাঁদের। ‘ঘেরাও’য়ের খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে পৌঁছে যান রেজিস্ট্রার তাফাজল হোসেন-সহ বেশ কিছু আধিকারিক। তাঁরা বোঝানোর পরেও বিক্ষোভ অনড় থাকে শ’খানেক পড়ুয়া। ‘জবাব চাই, জবাব দাও’, ‘ছাত্রদের মুখোশধারী দুষ্কৃতীদের শাস্তি চাই’য়ের মতো স্লোগান চলতে থাকে।

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে শুভরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত হাজরারা জানান, জুলাইয়ে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। নভেম্বরেও ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে। তার মধ্যেই জানুয়ারির ৬ তারিখ স্নাতক স্তরে প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষা দিন ঘোষণা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছাত্রদের দাবি, ‘‘ভর্তি শেষ হওয়ার দু’মাসের মধ্যে পরীক্ষা কী ভাবে সম্ভব!’’ এ ছাড়াও অনেক ছাত্রছাত্রী পরিচয়পত্র পাননি। সেই সুযোগে ক্যাম্পাসে বহিরাগত তাণ্ডব বাড়ছে বলেও তাঁদের নালিশ। ক্ষোভ রয়েছে হস্টেলের পরিকাঠামো নিয়েও। পড়ুয়াদের অভিযোগ, ঘরের ছাদ থেকে জল পড়ে। শীতেও জানালার কাচ ভাঙা। অথচ কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই। তাঁরা জানান, দিন সাতেক আগে বিশ্ববিদ্যালয় ও হস্টেলের পরিকাঠামো সংক্রান্ত ১৬ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। আশ্বাস মিলেছিল, এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু কিছুই হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সম্পাদক অভিষেক নন্দীও বলেন, ‘‘যত দূর জানি ছাত্রছাত্রীদের সমস্যার কথা জেনেও ব্যবস্থা নেননি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাই আন্দোলন করছেন ওঁরা। ছাত্র সংসদও চায় সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সমস্যাগুলি গুরুত্ব দিয়ে বুঝুক বিশ্ববিদ্যালয়।’’

এর আগেও বহু রাতজাগা বিক্ষোভ দেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকা, আলো ভেঙে পড়ুয়াদের মারধরেরও অভিযোগ উঠেছে। এ দিনও কী পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ ডাকা হবে? রেজিস্ট্রারের দাবি, তেমন কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে শীতের রাতে খোলা আকাশের নীচে বিক্ষোভ কতখানি সঙ্গত, সে প্রশ্নও উঠেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE