Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

দরজায় তালা, পাইপ বেয়ে উঠতে গিয়ে পড়ে মৃত ছাত্র

বাইরে থেকে বন্ধ ছিল আবাসনের দরজা। চাবি সহপাঠীদের কাছে, যাঁরা ছিলেন কলেজে। আবাসনে ফিরে ঢুকতে না পেরে পিছনের পাইপ বেয়ে জানালা দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন তিনি। তিন তলা থেকে পড়ে মৃত্যু হল দুর্গাপুরের বেসরকারি একটি ম্যানেজমেন্ট কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রের। বুধবার সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে দুর্গাপুরের বামুনাড়ায়। মৃত সৌরভসুমন শর্মার (২২) বাড়ি বিহারের ধানবাদে।

এই আবাসনেই ঘটে ছাত্র মৃত্যু। —নিজস্ব চিত্র।

এই আবাসনেই ঘটে ছাত্র মৃত্যু। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৪৯
Share: Save:

বাইরে থেকে বন্ধ ছিল আবাসনের দরজা। চাবি সহপাঠীদের কাছে, যাঁরা ছিলেন কলেজে। আবাসনে ফিরে ঢুকতে না পেরে পিছনের পাইপ বেয়ে জানালা দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন তিনি। তিন তলা থেকে পড়ে মৃত্যু হল দুর্গাপুরের বেসরকারি একটি ম্যানেজমেন্ট কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রের।

বুধবার সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে দুর্গাপুরের বামুনাড়ায়। মৃত সৌরভসুমন শর্মার (২২) বাড়ি বিহারের ধানবাদে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বামুনাড়ায় মুচিপাড়া-শিবপুর রাস্তার ধারে একটি বহুতলের চার তলায় আরও তিন সহপাঠীর সঙ্গে ভাড়া থাকতেন সৌরভ। তাঁরা সকলেই স্থানীয় আড়রা এলাকার একটি ম্যানেজমেন্ট কলেজের বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, মৃতের বাড়িতে খবর পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ সৌরভ কলেজ থেকে আবাসনে ফেরেন। বাকি তিন সহপাঠী তখন কলেজেই ছিলেন। সৌরভের কাছে ঘরের কোনও চাবি ছিল না। এ দিকে ইন্টারলকিং সিস্টেম দরজা বন্ধ থাকায় চাবি ছাড়া ভিতরে ঢোকার উপায় ছিল না। সাধারণ তালা হলে তা ভাঙার সুযোগ ছিল। আবাসনের কেয়ারটেকার উত্তম দত্ত জানান, সৌরভ এসে প্রথমে তাঁর কাছে সমস্যার কথা জানান। তিনি সহপাঠীদের জন্য অপেক্ষা করতে। কিন্তু সৌরভ অপেক্ষা করতে রাজি হননি। আবাসনের মালিকের কাছে একটি চাবি থাকে। সৌরভ তাঁকেই ফোন করতে বলেন। উত্তমবাবু জানান, তিনি মালিককে ফোন করছিলেন। কিন্তু তারই মধ্যে সৌরভ দ্রুত আবাসনের পাইপ বেয়ে উপরে উঠতে শুরু করে। পুলিশ জানায়, তিন তলার কাছাকাছি পৌঁছে সৌরভ ভারসাম্য হারিয়ে নীচে পড়ে যান। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে আবাসনের বাসিন্দারা তাঁকে বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান।

এই ঘটনায় আবাসনে শোকের ছায়া নেমে আসে। বাসিন্দারা জানান, বেশ কয়েক মাস আগে ওই পড়ুয়ারা আবাসনে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। তাঁরা কলেজ ও পড়াশোনা নিয়েই থাকতেন। সে ভাবে আবাসনের অন্য বাসিন্দাদের সঙ্গে মিশতেন না। এ দিনের দুর্ঘটনার পরে বাসিন্দারা রীতিমতো মর্মাহত। এক আবাসিক বলেন, ‘‘এ ভাবে ওই ছাত্রের হঠাৎ পাইপ বেয়ে ওঠার কোনও ব্যাখ্যা মিলছে না। গোটা ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত।’’

পুলিশ জানায়, কেন সৌরভ ঘরে যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করেছে তা বলা মুশকিল। সহপাঠীরাও তেমন কোনও জরুরি কারণ জানাতে পারেননি। কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার সময়ে ওই পড়ুয়ার কলেজে থাকার কথা ছিল। কী কারণে তিনি ক্লাস না করে আবাসনে ফিরে গেলেন তা পরিষ্কার নয়। মৃতের বাড়িতে খবর পাঠানো হয়েছে। কলেজের তরফে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানায়, একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE