Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Burdwan Medical College

অনলাইনে হাজিরা বেশি মেডিক্যালে

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা যায়, গত ২০ মার্চ, লকডাউন ঘোষণার আগেই কলেজ কাউন্সিল ‘অনলাইন’ ক্লাস চালু করার সিদ্ধান্ত নেন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২০ ০১:৪০
Share: Save:

সাধারণ ক্লাসের চেয়ে অনলাইন ক্লাসে ডাক্তারি পড়ুয়াদের উপস্থিতি বেশি দেখা যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। গত ৩ অগস্ট হংকংয়ে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক আলোচনা-চক্রে (এশিয়া প্যাসিফিক অ্যাডভানস্ড নেটওয়ার্ক ৫০) বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের শারীরবিদ্যার শিক্ষিকা-গবেষক অরুণিমা চৌধুরী ও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল দাবি করেন, অনলাইন ক্লাসে অনেক বেশি ডাক্তারি-পড়ুয়া হাজির থাকছেন। সাধারণ ‘থিওরিটিক্যাল’ ক্লাসের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয়ে পড়ুয়াদের অভিজ্ঞতাও বেশ ভাল। অন্য দিকে, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকস্তরে দু’টি সিমেস্টারে অনলাইন ক্লাস শুরু করতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খুব শীঘ্র ক্লাস শুরু করার জন্য তিন জেলার প্রতিটি কলেজকে ‘মেসেজ’ করেছেন।

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা যায়, গত ২০ মার্চ, লকডাউন ঘোষণার আগেই কলেজ কাউন্সিল ‘অনলাইন’ ক্লাস চালু করার সিদ্ধান্ত নেন। লকডাউন শুরুর পরেই ডাক্তারি-পড়ুয়ারা হস্টেল ছেড়ে দেন। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু ভবনের একটি বড় ঘরে অনলাইন-সুবিধা যুক্ত শ্রেণিকক্ষ গড়ে তোলা হয়। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টে পর্যন্ত সেখান থেকেই পড়ানো হয়। কোন দিন, কী পড়ানো হবে, কোন ক্লাসের পড়ুয়াদের পড়ানো হবে কলেজ কর্তৃপক্ষ তার নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করে দিয়েছেন। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসক-শিক্ষক তথা নোডাল অফিসার কৌস্তভ নায়েকের দাবি, “সাধারণ ক্লাসে ৭০ শতাংশ পড়ুয়া হাজির থাকলে অনলাইন ক্লাসে ৯০ শতাংশ পড়ুয়া হাজির থাকছে।’’ কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের মত নিয়মিত ভাবে অনলাইন ক্লাস রাজ্যের আর কোনও মেডিক্যাল কলেজে চালু নেই।

তবে ‘থিওরি’র ক্লাস হলেও ব্যবহারিক ক্লাস যে অনলাইনে করা অসুবিধার তা মানছেন তাঁরা। তবে তারও উপায় বার করা হয়েছে। কৌস্তভবাবু বলেন, “অনলাইন ক্লাসের সময়ে ক্যামেরার সামনে রোগীকে নিয়ে এসে কী ভাবে চিকিৎসা করা যায়, তা দেখানো হবে। আবার এক্স-রে বা ওই রকম যন্ত্রের ব্যবহারও কী ভাবে করতে হয়, সেটাও দেখানো সম্ভব।’’ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ তথা হাসপাতাল সুপার প্রবীর সেনগুপ্ত বলেন, “ডাক্তারি পড়ুয়াদের কাছে অনলাইনের মাধ্যমে যতটা শিক্ষা দেওয়া সম্ভব, সেই চেষ্টাই করা হবে।’’

ডাক্তারি পড়ুয়া গোলাম কিবরিয়া, অর্ণব পালচৌধুরী, শাহানাজ নাজমিরাও বলেন, ‘‘অনলাইনে ক্লাসের অভিজ্ঞতা খুবই ভাল। বাড়িতে থেকে নিয়মিত ক্লাস করতে পারছি।’’

পক্ষান্তরে, স্নাতক স্তরের অনলাইন ক্লাসে বেশ কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম ও হুগলির ৬২টি কলেজকে মেসেজ করে এক সপ্তাহের মধ্যে সিমেস্টার তিন ও সিমেস্টার পাঁচের অনলাইন ক্লাস শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজসমূহের পরিদর্শক সুজিত চৌধুরী বলেন, “অনলাইন ক্লাস শুরু করার জন্য প্রতিটি কলেজকে বলা হয়েছে। অনলাইন ক্লাসের প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় তরফে প্রকাশ করার কথাও বলা হয়েছে।’’ ওই মেসেজে বলা হয়েছে, যত বেশি পড়ূয়াকে অনলাইন-প্রক্রিয়ায় আনা যায়, সেই চেষ্টা করা হবে। আবার অনলাইন সুবিধা পাচ্ছেন না, এমন পড়ুয়াদের চিহ্নিত করে তাদের কাছে ‘শিক্ষা’ পৌঁছনোরও ব্যবস্থা করতে হবে। পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম ও হুগলির একাধিক কলেজের অধ্যক্ষেরা জানিয়েছেন, তাঁরা এ ব্যাপারে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE