Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্রতারণার অভিযোগে অবরোধ, অশান্তি

একটি বেসরকারি আইটিআই-এর পড়ুয়াদের পথ অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে অশান্তি ছড়াল আসানসোলে। ছাত্রদের অভিযোগ, কলেজ কর্তৃপক্ষ মিথ্যে কথা বলে তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তাঁদের টাকা ফেরানোর জন্য প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে, এই দাবিতে মঙ্গলবার প্রায় চল্লিশ মিনিট রাস্তা অবরোধ করেন তাঁরা। শেষে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ গিয়ে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে অবরোধ তোলে। কলেজের এক মহিলা আধিকারিককে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে।

পড়ুয়াদের অবরোধ তুলতে লাঠি পুলিশের। —নিজস্ব চিত্র।

পড়ুয়াদের অবরোধ তুলতে লাঠি পুলিশের। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৫ ০০:৪২
Share: Save:

একটি বেসরকারি আইটিআই-এর পড়ুয়াদের পথ অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে অশান্তি ছড়াল আসানসোলে। ছাত্রদের অভিযোগ, কলেজ কর্তৃপক্ষ মিথ্যে কথা বলে তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তাঁদের টাকা ফেরানোর জন্য প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে, এই দাবিতে মঙ্গলবার প্রায় চল্লিশ মিনিট রাস্তা অবরোধ করেন তাঁরা। শেষে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ গিয়ে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে অবরোধ তোলে। কলেজের এক মহিলা আধিকারিককে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুই আগে আসানসোলের এসবি গড়াই রোডের একটি ভাড়া বাড়িতে ওই বেসরকারি আইটিআই তৈরি হয়। পড়ুয়াদের অভিযোগ, কলেজ কর্তৃপক্ষ ভর্তির সময় জানিয়েছিলেন, সেটি ঝাড়খণ্ড সরকার অনুমোদিত। যাঁরা ঝাড়খণ্ডে যেতে পারবেন না তাঁদের সুবিধার কথা ভেবে আসানসোলে একটি শাখা খোলা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ফিটার ও ইলেক্ট্রিসিয়ান, এই দু’টি বিষয়ে এখানে ছাত্র ভর্তি করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, গত দু’বছরে প্রায় চারশো পড়ুয়া এই কলেজে ভর্তি হন।

কিন্তু, আইটিআইয়ের অনুমোদনের বিষয়টি যে ভুয়ো, তা জানাজানি হয় গত ৮ জুন। সে দিন বেশ কয়েক জন পড়ুয়াকে শংসাপত্র দেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তা হাতে পেয়ে তাঁদের সন্দেহ হয়। তাঁরা ইন্টারনেটে কলেজ সম্পর্কে খোঁজখবর করে কোনও হদিস পাননি। রাজেশ মণ্ডল নামে এক ছাত্র এ দিন জানান, তাঁরা এর পরে কলেজের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ইরা মুখোপাধ্যায়কে পুরো বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি কিছু বলতে চাননি। ওই ছাত্র আসানসোল দক্ষিণ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ওই মহিলা আধিকারিককে গত ১০ জুন গ্রেফতার করে। তাঁকে ১১ জুন আসানসোল আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁকে ছ’দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠান। মঙ্গলবার ফের আদালতে তোলা হলে তাঁর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে জেল-হাজতে পাঠানো হয়।

এ দিনই দুপুর সাড়ে ১১টা নাগাদ কলেজের প্রায় শতাধিক পড়ুয়া জড়ো হয়ে আসানসোলের মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁরা দাবি করেন, কলেজ কর্তৃপক্ষকে দেওয়া তাঁদের টাকা পুনরুদ্ধার করে দিতে হবে। কিন্তু মহকুমাশাসকের দফতর থেকে কোনও ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে তাঁরা আসানসোলের বিএনআর মোড়ে গিয়ে জিটি রোড চৌমাথায় অবরোধ শুরু করেন। শুভম কুমার নামে এক ছাত্র জানান, তিনি ২০১৪-১৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য ইলেক্ট্রিসিয়ান বিষয়ে ভর্তি হন। তাঁর মোট ৪৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা। এখনও পর্যন্ত দিয়েছেন ১৫ হাজার টাকা। সেই টাকা ফেরতের ব্যাপারে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দাবি করছেন।

আগাম কোনও খবর ছাড়াই অবরোধ শুরু হওয়ায় যানজট তৈরি হয়। প্রচণ্ড গরমে যাত্রীরা নাজেহাল হন। বিপাকে পড়ে পড়ুয়ারাও। প্রায় চল্লিশ মিনিট অবরোধ চলার পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। পড়ুয়াদের প্রথমে বুঝিয়ে অবরোধ তোলার চেষ্টা করে তারা। কিন্তু ফল না হওয়ায় বিক্ষোভকারীদের লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে পুলিশ। পুলিশ তাদের উপরে লাঠি চালিয়েছে বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের একাংশের। পুলিশ যদিও তা মানেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

asansol agitation police IIT
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE