Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

উস্কে দিল স্মৃতি পাতাল-প্রবেেশর

সোমবার রাতে উঠোনে গর্ত দেখে বাড়ি ছেড়ে পালাতে পেরেছিলেন ডিসেরগড়ের শিশুবাগানের বাসিন্দা মহম্মদ ইসরাফিল। কিন্তু পালাতে পারেননি ওই এলাকারই বাসিন্দা, শেখ মুক্তার ও হাসিনা পারভিনের মেয়ে হেনা পারভিন ওরফে খুসবু।

এই গর্তেই তলিয়ে যান হেনা পারভিন।  সেই গর্ত থেকেই বার হচ্ছিল ধোঁয়া। ফাইল চিত্র

এই গর্তেই তলিয়ে যান হেনা পারভিন। সেই গর্ত থেকেই বার হচ্ছিল ধোঁয়া। ফাইল চিত্র

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:২০
Share: Save:

সেটাও ছিল সেপ্টেম্বর মাস। ২৭ তারিখ। ২০১৩ সাল। ভাইয়ের সঙ্গে উঠোনে খেলছিলেন বছর কুড়ির তরুণী। আচমকা গর্ত তৈরি হয় সেই উঠোনেই। সেখানে তলিয়ে যান তরুণী।— মঙ্গলবার রাতে ওই এলাকায় ধস এলাকাবাসীর মনে উস্কে দিয়েছে এই ঘটনার স্মৃতি। সেই সঙ্গে এলাকাবাসীর আক্ষেপ, ওই ঘটনার পরে পাঁচ বছর কেটে গেলেও, এলাকার ধস-বিপত্তির ছবিটা বদলায়নি।

সোমবার রাতে উঠোনে গর্ত দেখে বাড়ি ছেড়ে পালাতে পেরেছিলেন ডিসেরগড়ের শিশুবাগানের বাসিন্দা মহম্মদ ইসরাফিল। কিন্তু পালাতে পারেননি ওই এলাকারই বাসিন্দা, শেখ মুক্তার ও হাসিনা পারভিনের মেয়ে হেনা পারভিন ওরফে খুসবু। কী ঘটেছিল সে দিন? ঘটনার স্মৃতি এখনও টাটকা পড়শিদের মনে। তাঁরা জানান, পরিবারের সদস্যরা দেখেন, উঠোনে তৈরি হয় বিরাট গর্ত। তাতে তলিয়ে যান বছর উনিশের হেনা। সোমবার রাতের মতো সে দিনও গর্ত থেকে গলগল করে ধোঁয়া বার হচ্ছিল। দুলে উঠেছিল পড়শিদের ঘরবাড়ি। আগুনের শিখা আর কটু গন্ধে ভরে গিয়েছিল এলাকা। কথাগুলো বলছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ মুমতাজ। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘ওই অভিশপ্ত ঘটনার পরে এত দিন কেটে গেলেও এখনও ধসের কথা শুনলে বুক কাঁপে।’’

ঘটনার খবর পেয়ে এ দিনের মতো সে দিনও এলাকায় এসেছিল পুলিশ। এসেছিল দমকল, ইসিএলের উদ্ধারকারী দল। ঘটনার প্রায় ৪৮ ঘণ্টা বাদে হেনার দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছিল। মেপে দেখা যায়, গর্তের মুখের কাছাকাছি তাপমাত্রা অন্তত ৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সে দিনের সেই উদ্ধারকারী দলে ছিলেন দেবায়ন পোদ্দার। বর্তমানে দমকলের আসানসোলের আধিকারিক দেবায়নবাবু বলেন, ‘‘ওই দিনটার কথা মনে পড়লে আজও শিউরে উঠি। বহু চেষ্টার পরেও হেনাকে তুলতে পারছিলাম না আমরা।’’

হেনার এমন মৃত্যুর পরে আর এলাকায় থাকেননি পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা চলে গিয়েছিলেন, পুরুলিয়ার পারবেলিয়ায়। বর্তমানে চিনাকুড়িতে থাকেন হেনার জামাইবাবু মহম্মদ মইনুদ্দিন। তাঁর কথায়, ‘‘ওই ঘটনার পরে সবাই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। সব বদলে গিয়েছে তার পরে। কিন্তু ওই এলাকায় ধসের জেরে বিপদের ছবিটা আর বদলাল না।’’ শুধু এই ঘটনায় নয়। ২০১২-য় ওই এলাকায় ইসিএলের বাংলোয় ধস নেমেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Puruliya Landslide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE