সবে প্রার্থনা শেষ হয়েছে। পড়ুয়ারা ক্লাসে ফিরছে। তখনই বিকট আওয়াজ। পড়ুয়া ও শিক্ষকেরা দৌড়ে গিয়ে দেখেন, শৌচাগারের দরজার নীচ থেকে রক্ত ভেসে আসছে। দরজাটি ঠেলে খুলতেই দেখা যায়, মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে এক ছাত্র। পায়ের কাছে পড়ে আগ্নেয়াস্ত্র।
মঙ্গলবার সকালে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের দধিয়া গোপালদাস হাইস্কুলে কলিম শেখ (১৫) নামে ওই ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, প্রণয়-সংক্রান্ত কোনও কারণে আত্মঘাতী হয়েছে দশম শ্রেণির ছাত্রটি। কিন্তু পরিবারের অভিযোগ, তাকে খুন করা হয়েছে। যদিও রাত পর্যন্ত খুনের লিখিত অভিযোগ হয়নি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফরেন্সিক পরীক্ষা হবে।’’
কেতুগ্রামের রতনপুরে বাড়ি কলিমের। পুলিশ সূত্রের দাবি, ওই ছাত্রের সঙ্গে একটি মেয়ের প্রণয়ের সম্পর্কের কথা জানা গিয়েছে স্থানীয় সূত্রে। ঘটনার সঙ্গে তার কোনও যোগ রয়েছে কি না, দেখা হচ্ছে। মৃতদেহের পাশে বিহারের মুঙ্গেরে তৈরি ৭ এমএম পিস্তল ও গুলির খোল পড়েছিল। ঘটনাটি আত্মহত্যা হলে কলিম কোথা থেকে পিস্তল পেল, সে প্রশ্নও উঠেছে। ওই ছাত্রের কোনও দুষ্কৃতী-যোগ ছিল কি না, তদন্ত হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।
কলিমের বাবা সেলিম শেখ কর্মসূত্রে চেন্নাইয়ে থাকেন। দুপুরে ছেলের মৃত্যুর খবর পান মা মোসলেমা বিবি। দুষ্কৃতীদের সঙ্গে ছেলের যোগাযোগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ধারদেনা করে সংসার চলে। ছেলে পিস্তল কেনার টাকা পাবে কোথা থেকে? পাশের গ্রামের কিছু ছেলের সঙ্গে ও মেলামেশা করত। বন্ধুরাই ওকে খুন করেছে।’’ স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ ঘোষ তিনি বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের ব্যাগ তল্লাশি করার ব্যবস্থা নেই। তাই কে, কী নিয়ে স্কুলে আসছে বোঝা মুশকিল।’’ এমন ঘটনায় পড়ুয়ারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ায় এ দিন স্কুলে ক্লাস বন্ধ রাখা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy