তপনকুমার ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
অবসর নিয়েছেন সাত বছর আগে। তবে স্কুলের কোনও সমস্যা হলেই এগিয়ে আসেন তিনি। কৃতী ছাত্রদের নানা ভাবে উৎসাহ দেওয়া, পুরস্কার দেওয়ার সঙ্গে স্কুলের উন্নয়নে চার লক্ষেরও বেশি টাকা দান করেছেন তিনি। মঙ্গলবারও স্কুলের কম্পিউটার রাখার ঘরের জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন তিনি। মন্তেশ্বরের ভাগরামূল পঞ্চায়েতের উজনা গ্রামের ওই শিক্ষকের নাম তপনকুমার ঘোষ।
সিজনা উজনা পঞ্চপাড়া উচ্চবিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে অবসর নেন তপনবাবু। তারপরেও স্কুলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়নি। এখন এলাকায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করলেও মন থাকে স্কুলেই। প্রতি বছর স্কুলের প্রতিটি শ্রেণির কৃতী ছাত্রদের পুরস্কার দেন তিনি। এ বছর থেকে এলাকার তিনটি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে নজরকাড়া ছাত্রছাত্রীদের নগদ অর্থও পুরস্কার হিসেবে দিতে শুরু করেছেন তিনি। স্কুলের শিক্ষকদের দাবি, এখন পড়ুয়ারা সরকারের প্রকল্পে সাইকেল পায়। কিন্তু ২০০১ সাল থেকে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকে স্টার পাওয়া ছাত্রছাত্রীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে সাইকেল দিতেন তপনবাবু। এ ছাড়া কখনও স্কুল ভবন, কখনও স্কুলের মাঠ তৈরির জন্য সাহায্য করতেও কখনও পিছপা হননি তিনি। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, সম্প্রতি স্কুলে ১০টি কম্পিউটার বসানো হয়েছে। কিন্তু সেগুলি চালু করার জন্য একটি ঘরে বৈদ্যুতিন সংযোগ করে সাজিয়ে গুছিয়ে চালু করতে প্রয়োজন ছিল ৫০ হাজার টাকা। অথচ স্কুলের তহবিল কার্যত ফাঁকা। তপনবাবুর কাছে সাহায্য চাইতেই অবশ্য আর পিছু ফিরতে হয়নি। মুশকিল আসান করতে এগিয়ে আসেন ওই শিক্ষক। এক কথায় আশ্বাস দেন, ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার। মঙ্গলবার স্কুলের হাতে চেকও তুলে দেন তিনি।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বীরবল মণ্ডল বলেন, ‘‘ওঁর সন্তান নেই। স্কুলের ছাত্রদের সন্তানের মতো স্নেহ করেন। যখনই হোক সাহায্য চাইলেই এগিয়ে এসেছেন উনি।’’ আর তপনবাবুর কথায়, ‘‘অবসর নিয়েছি ঠিকই। কিন্তু স্কুলের জন্য মন ছটফট করে। স্কুলের প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy