Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

শৌচাগার ব্যবহার করে খুদে পড়ুয়াকে দিয়ে জল দেওয়ানোর অভিযোগ, শিক্ষিকার সঙ্গে ‘হাতাহাতি’

শৌচাগার ব্যবহারের পরে খুদে পড়ুয়াকে দিয়ে জল দেওয়ানোর অভিযোগ উঠল এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, প্রতিবাদ করায় অভিভাবকদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন আউশগ্রামের সুকান্তপল্লি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষিকা। তাঁর শাস্তি চেয়ে স্কুলের একটি ঘরে ওই শিক্ষিকাকে আটকেও রাখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে প্রধান শিক্ষক ক্ষমা চেয়ে নেওয়ায় বিক্ষোভ ওঠে।

স্কুলে বিক্ষোভ অভিভাবকদের। নিজস্ব চিত্র

স্কুলে বিক্ষোভ অভিভাবকদের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:০৭
Share: Save:

শৌচাগার ব্যবহারের পরে খুদে পড়ুয়াকে দিয়ে জল দেওয়ানোর অভিযোগ উঠল এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, প্রতিবাদ করায় অভিভাবকদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন আউশগ্রামের সুকান্তপল্লি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষিকা। তাঁর শাস্তি চেয়ে স্কুলের একটি ঘরে ওই শিক্ষিকাকে আটকেও রাখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে প্রধান শিক্ষক ক্ষমা চেয়ে নেওয়ায় বিক্ষোভ ওঠে।

ওই শিক্ষিকা যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা দাবি, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন আউশগ্রাম-১ চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক অমিত মুখোপাধ্যায়। আউশগ্রাম ১-এর বিডিও চিত্তজিত বসু জানান, স্কুল পরিদর্শকের কাছে ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আউশগ্রাম ১ ব্লকের দিগনগর ২ পঞ্চায়েতের ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৪ জন পড়ুয়া এবং ২ জন শিক্ষক, শিক্ষিকা রয়েছেন। বুলটি ঘোষ নামে ওই শিক্ষিকা বছর দুয়েক আগে সহ শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দেন। স্থানীয় বাসিন্দা রূপা বিশ্বাসের অভিযোগ, ওই শিক্ষিকা বাথরুমে যাওয়ার পরে বাচ্চাদের দিয়ে নিয়মিত জল দেওয়ান। কেন তিনি এ ধরনের কাজ ছেলেদের দিয়ে করান, তা জানতে গেলে মিড-ডে মিলে বিষ মিশিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ। এমনকি, তাঁকে গালে চড় মারেন বলেও রূপাদেবীর দাবি। এই ঘটনার পরেই স্থানীয় বাসিন্দারা একজোট হয়ে ওই শিক্ষিকার কাছে প্রতিবাদ জানাতে যান। অভিযোগ, গ্রামবাসীদের সঙ্গেও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, টেবিলে রাখা বেত উঁচিয়ে গ্রামবাসীদের দিকে তেড়ে যান ওই শিক্ষিকা। কেউ বেতটি কেড়ে নিলে তিনি ফের তা মাটি থেকে তুলে গ্রামবাসীদের মারেন। স্থানীয় কয়েকজন যুবক এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিমাই হাজরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে গ্রামবাসীরা ওই শিক্ষিকার শাস্তি চেয়ে তাঁকে স্কুলেরই একটি ঘরে আটকে রেখে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান। চন্দ্রা রায়, দেবিকা বিশ্বাসদের অভিযোগ, ‘‘ওই শিক্ষিকা কানে হেডফোন লাগিয়ে ক্লাসে পড়ান। পড়ুয়াদের কলমের নিপ, ডাস্টার দিয়ে মারেন। পড়ুয়ারা বাড়ি যেতে চাইলে তাঁদের আটকে রেখে দেন।’’

যদিও ওই শিক্ষিকার দাবি, ‘‘সমস্ত বিদ্যালয়েই পড়ুয়াদের দিয়ে বিদ্যালয় চত্বর পরিষ্কার করানো হয়। আমিও তাই করিয়েছি। গ্রামের মানুষ অকারণে আমার সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন। আমার সম্পর্কে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’ তাঁর পাল্টা অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দারা বিদ্যালয়ে চড়াও হয়ে তাঁকে মারধর করেছেন। অসম্মানজনক কথা বলেছেন। প্রধান শিক্ষক নিমাইবাবু জানান, স্থানীয় বাসিন্দারা কেউ বিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষিকাকে অসম্মান করে না। তবে এ দিন পড়ুয়াদের দিয়ে বাথরুমে জল দেওয়ানো হয়েছে কি না তা তিনি জানেন না বলেও দাবি করেন। আউশগ্রাম ১ চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শকের ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ausgram Teacher Guardian
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE