Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দ্বাদশ শ্রেণিতে স্কুলছুট, কারণ খুঁজবেন শিক্ষক

এ বার থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুল কামাই করলেও তার কারণ খুঁজে বের করবেন পার্শ্বশিক্ষক ও শিক্ষাবন্ধুরা। নভেম্বরের মধ্যে জেলা সর্বশিক্ষা অভিযান দফতরে জমা পড়বে সেই রিপোর্ট।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:১০
Share: Save:

অষ্টম শ্রেণি নয়, এ বার থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুল কামাই করলেও তার কারণ খুঁজে বের করবেন পার্শ্বশিক্ষক ও শিক্ষাবন্ধুরা। নভেম্বরের মধ্যে জেলা সর্বশিক্ষা অভিযান দফতরে জমা পড়বে সেই রিপোর্ট। দফতরের দাবি, ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের কী ভাবে স্কুলমুখী করা যায়, তা নিয়ে বিস্তারিত প্রকল্প তৈরি করা হবে।

জেলা ভাগ হলেও দুই বর্ধমানের সর্বশিক্ষা দফতর এখনও নিয়ন্ত্রিত হয় বর্ধমান শহর থেকেই। সর্বশিক্ষা অভিযান দফতরের কর্তারা জানান, তাঁরা কয়েকটা স্কুল নিয়ে বুথ তৈরি করেছেন। দু-তিনটি বুথের দায়িত্বে রয়েছেন এক জন পার্শ্বশিক্ষক বা শিক্ষাবন্ধু। দুই জেলায় ৫৯টি চক্রে রয়েছে ৩৫২টি ক্লাস্টার। প্রতিটি ক্লাস্টারে রয়েছে গড়ে আটটি করে বুথ। দফতরের প্রকল্প আধিকারিক মৌলি সান্যাল বলেন, “স্কুলে গিয়ে স্কুলছুটদের তালিকা নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানাতে হবে পড়ুয়ারা কেন স্কুলে যাচ্ছে না।’’

সর্বশিক্ষা মিশনে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা বাধ্যতামূলক। কিন্তু এ বার দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার ভাবনা রয়েছে। সেই মতো সর্বশিক্ষার সঙ্গেই চালু হয়েছে রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা মিশন প্রকল্প। ওই প্রকল্প থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে স্কুলগুলিকে উন্নীত করা হচ্ছে। নতুন ভবন তৈরির জন্য মোটা অঙ্কের অনুদানও পাচ্ছে স্কুলগুলি। এ বার ৬ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত নয়, ১৮ বছর পর্যন্ত পড়ুয়ারা যাতে স্কুলে আসতে পারে তা নিশ্চিত করতে জোর দিতে চাইছে প্রশাসন। মৌলিদেবী জানান, এ মাস থেকেই দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলছুটদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত ঠিক হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পড়ুয়ারা স্কুলছুট হলে কাছাকাছি স্কুলে ভর্তি করানো হবে। সেখানে জায়গা না থাকলে মুক্ত বিদ্যালয়েও ভর্তি করার সুপারিশ করা হয়েছে। ভর্তি হওয়ার পরে ওই পড়ুয়ারা নিয়মিত স্কুলে আসছে কি না, পড়াশোনোয় মনোযোগ রয়েছে কি না, তা নজরে রাখবেন সংশ্লিষ্ট পার্শ্ব শিক্ষকেরা। প্রত্যেক পড়ুয়া ধরে ১৫ দিন অন্তর রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসনের কর্তাদের অনুমান, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রদের স্কুলছুটের সংখ্যা বেশি। তুলনায় অনেকটাই কম ছাত্রীদের স্কুলছুটের সংখ্যা। প্রশাসনের কর্তাদের ধারণা, ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে ছাত্রীদের মধ্যে পড়াশোনোর প্রবণতা বেড়েছে। নাবালিকা বিয়ের প্রবণতাও খানিক কমেছে। কিন্তু ওই বয়সের ছাত্রদের একটা অংশ পড়াশোনা ছেড়ে কাজের খোঁজে ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে।

প্রাথমিক ভাবে সর্বশিক্ষা অভিযান দফতর ঠিক করেছে, স্কুলে স্কুলে গড়ে ওঠা কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যদের মাধ্যমে স্কুলছুট ছাত্রীদের ফিরিয়ে আনা হবে। আর শিক্ষকদের মাধ্যমে সচেতন করা হবে অভিভাবকদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education Right to Education Academics Poverty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE