সংঘর্ষে জখম। নিজস্ব চিত্র
রাস্তা তৈরি নিয়ে বিবাদে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ বাধল কালনা ২ ব্লকের আনুখাল পঞ্চায়েতের কদম্বা গ্রামে। মঙ্গলবার ওই সংঘর্ষে ১৩ জন আহত হয়ে কালনা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের কদম্বা গ্রামের বুথ সভাপতি সামসুল আলম শেখ ও পঞ্চায়েত সদস্য হোসেন আলি শেখ। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে পঞ্চায়েত কদম্বা গ্রামে একটি ঢালাই রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা নেয়। সবুজ গোয়েঙ্কার বাড়ি থেকে গ্রামের মাস্টারবাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি তৈরি করতে বরাদ্দ হয় ১,৪৪,৬৮৫ টাকা। তবে রাস্তাটি নিয়ম মেনে তৈরি হচ্ছে না দাবি করে বিজেপির তরফে ২২ অগস্ট প্রশাসনের নানা স্তরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তাতে অভিযোগ করা হয়, রাস্তার কিছুটা অংশ সাত ফুটের জায়গায় তিন-চার ফুট তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রাস্তাটি এ ভাবে তৈরি হলে গ্রামবাসীর তেমন কাজে আসবে না বলে দাবি করা হয়। বিজেপির এ নিয়ে পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিক্ষোভের পরে, তাঁদের কয়েকজন কর্মীর উপরে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি। উত্তেজনা থাকায় কিছু দিন রাস্তা তৈরির কাজ স্থগিত রাখা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে ঠিকাদারের লোকজন ফের রাস্তার কাজ শুরু করেন। তখনই অশান্তি শুরু হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বিজেপি এবং তৃণমূলের লোকজনে লাঠিসোটা নিয়ে পরস্পরের উপরে চড়াও হয়। কালনা থানা থেকে পুলিশের বড় বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের উপস্থিতিতেই এ দিন রাস্তা তৈরির কাজ হয়।
বিজেপি নেতা সুশান্ত পাণ্ডের অভিযোগ, ‘‘রাস্তাটি সাত ফুট চওড়া হলে গ্রামের চাষিরা গাড়িতে করে মাঠ থেকে ফসল আনার সুবিধা পেতেন। কদম্বা গ্রামে তৃণমূলের বুথ সভাপতি একটি জায়গা জবরদখল করে রাখায় রাস্তার কিছুটা অংশ সাড়ে তিন ফুট চওড়া হয়ে যায়। তার প্রতিবাদ করায় আমাদের লোকজনের উপরে হামলা চালিয়েছে শাসক দল। প্রশাসনকে সামনে রেখে বেআইনি ভাবে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।’’
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনের ঘটনায় এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য, বুথ সভাপতি-সহ আহত হয়েছে তাঁদের জনা ছ’য়েক নেতা-কর্মী। আহতদের দুপুরে হাসপাতালে দেখে যান কালনা ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রণব রায়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েত যাতে রাস্তাটি তৈরি করতে না পারে, কিছু সমাজবিরোধী সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। এ দিন রাস্তাটির কাজ শুরু হতেই তারা অশান্তি পাকায়। তাদের হামলায় দলের নেতা-কর্মীরা আহত হয়েছেন। তবে গ্রামবাসী এক হয়ে রাস্তার কাজ শেষ করিয়েছেন।’’ তিনি দাবি করেন, পায়ে হাঁটার রাস্তা তৈরি হচ্ছিল। যে জায়গাটি নিয়ে আপত্তি করা হয়েছে সেখানে বুথ সভাপতির প্রায় একশো বছরের পুরনো বাড়ি রয়েছে। কারও বাড়ি ভেঙেই পঞ্চায়েত রাস্তা তৈরিতে রাজি নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy