Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মেমারির বধূ খুনে গ্রেফতার স্বামী-সহ তিন জন

এ দিন হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার ফকির বাজার লেনের বাসিন্দা শ্যামলী যাদব পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে জানান, মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে কেউ চুরি করতে যায়নি। কোনও চোর তাঁর মেয়েকে মারেনি। পণের দাবিতেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন বছর আঠারোর মেয়েকে মেরে ফেলেছে।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৭:১০
Share: Save:

ফোন করে বাপের বাড়িতে খবর দেওয়া হয়েছিল, চুরি আটকাতে গিয়ে তাঁদের মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। সোমবার ভোরে ওই তরুণীর পরিবার অভিযোগ করেছে, পণের দাবিতেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন খুন করেছে বছর আঠারোর সোনিয়া ঘাঁটিকে। পরে পুলিশ ওই বধূর স্বামী অভিজিৎ ঘাঁটি, শ্বশুর কেনারাম ঘাঁটি ও শাশুড়িকে রীতাদেবীকে গ্রেফতারও করে।

এ দিন হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার ফকির বাজার লেনের বাসিন্দা শ্যামলী যাদব পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে জানান, মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে কেউ চুরি করতে যায়নি। কোনও চোর তাঁর মেয়েকে মারেনি। পণের দাবিতেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন বছর আঠারোর মেয়েকে মেরে ফেলেছে। রবিবার দুপুরে মেমারির জাবুইডাঙা থেকে ওই তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহের পাশে একটি বেল্ট মেলে। পুলিশের অনুমান, ওই বেল্ট দিয়েই অন্তঃসত্ত্বা বধূটিকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ঘরের ভিতর একটি আলমারি খোলা অবস্থায় ছিল। শ্বশুরবাড়ির লোকজন দাবি ছিল, বাড়ি ফাঁকা ভেবে কয়েকজন চোর বাড়িতে ঢুকেছিল। সেই সময় উঠোনে রান্না করছিলেন সোনিয়া। আলমারি থেকে গয়না বের করার সময় সোনিয়া বাধা দেওয়ায় দুষ্কৃতীরা তাঁর গলায় বেল্ট পেঁচিয়ে ধরেন। তাতেই শ্বাসরোধ হয়ে সোনিয়া মারা যান বলেও দাবি করেন তাঁরা।

তবে শুরু থেকেই খটকা ছিল পুলিশের। ধৃত তিন জনের সঙ্গে আরও ছ’জনকে জেরার জন্য মেমারি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ দিন ভোরে সোনিয়ার মা শ্যামলীদেবী পুলিশকে জানান, মাস পাঁচেক আগে তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় পণের দাবি না থাকলেও এক মাস পর থেকেই কোনও সময় আলমারি তো কোনও সময় ফ্রিজের দাবি করা হত। ওই সব জিনিস তাঁরা দিতে পারেনি বলে মেয়েকে নির্যাতন করা হয়েছে বলেও তাঁর অভিযোগ। পুলিশের দাবি, শ্যামলীদেবী জানিয়েছেন, মাস খানেক আগে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। তখন মেয়ের শাশুড়ি তাঁর কাছ থেকে মেয়ের জন্য গয়নাও চেয়েছিলেন। এ দিন তিনি বলেন, “মেয়েকে খুন করার পরে ওর শ্বশুরবাড়ির লোকজন চুরির ঘটনা সাজিয়েছিল। আমার বিশ্বাস, ওই রকম কোনও ঘটনাই হয়নি। শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরাই আমার মেয়েকে মেরে দিয়েছে।’’

এ দিন আদালতে তোলা হলে মৃতার শ্বশুর-শাশুড়িকে জেল হাজত দেন বিচারক। আর অভিজিৎতে তিন দিনের পুলিশ হেফাজত দেওয়া হয়। পুলিশের দাবি, স্বামীকে জেরা করলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Arrest Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE