Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Death

দামোদরে তলিয়ে মৃত তিন পড়ুয়া

কুঠিডাঙার বাসিন্দা ভগীরথ ঘোষ জানান, এ দিন ভোর ৫টা নাগাদ তিনি নদের পাড়ে প্রাতর্ভ্রমণে গিয়েছিলেন। দেখেন কয়েকজন কিশোর নদে স্নান করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। শেষ পর্যন্ত সে দলের দু’জন পাড়ে বসে থাকে।

বাঁ দিক থেকে, শিবু, সৌরভ ও সব্যসাচী

বাঁ দিক থেকে, শিবু, সৌরভ ও সব্যসাচী

নিজস্ব সংবাদদাতা
অণ্ডাল শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২০ ০৫:৫৪
Share: Save:

শিবের মাথায় জল ঢালার জন্য জল আনতে গিয়ে দামোদর নদে তলিয়ে গেলেন দুর্গাপুরের গোপালমাঠ এলাকার চার পড়ুয়া। প্রায় ১১ ঘণ্টার চেষ্টায় তিন জনের দেহ দামোদর থেকে তোলা সম্ভব হয়। চতুর্থ জনের সন্ধান মেলেনি। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে, অণ্ডালের শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের কুঠিডাঙা মেলামাঠের কাছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন শিবু দাস (১৯), সৌরভ মণ্ডল (১৯) ও সব্যসাচী মুখোপাধ্যায় (১৯)। পুলিশ জানায়, তলিয়ে যাওয়া রাহুল মাড্ডির খোঁজে তল্লাশি চলছে।

কুঠিডাঙার বাসিন্দা ভগীরথ ঘোষ জানান, এ দিন ভোর ৫টা নাগাদ তিনি নদের পাড়ে প্রাতর্ভ্রমণে গিয়েছিলেন। দেখেন কয়েকজন কিশোর নদে স্নান করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। শেষ পর্যন্ত সে দলের দু’জন পাড়ে বসে থাকে। বাকিরা নদে ঝাঁপ দেয়। তিনি বলেন, “আমি ওদের ঘাট ছেড়ে অন্য দিকে যেতে বারণ করেছিলাম। কিন্তু ওরা আমার কথা না শুনে ঘাট থেকে অনেকটা দূরে চলে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওরা তলিয়ে যায়।’’ এই দৃশ্য দেখে স্থানীয় বাসিন্দা তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের ‘কো-মেন্টর’ কাঞ্চন মিত্রকে ফোন করেন ভগীরথবাবু।

কাঞ্চনবাবু জানান, তিনি অণ্ডাল থানায় খবর দিয়ে স্থানীয় তিন যুবককে নিয়ে নদে নেমে উদ্ধার কাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে আসে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের উদ্ধারকারী দল। সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় তিনশো মিটার দূর থেকে শিবুর দেহ উদ্ধার হয়। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে মেলে সৌরভের দেহ। বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ সব্যসাচীর দেহ উদ্ধার হয়।

গোপালমাঠের মোহনপুরের বাসিন্দা গৌতম মণ্ডল জানান, তাঁর ছেলে গৌরব ও প্রতিবেশী ইন্দ্রনীল মণ্ডল-সহ ছ’জন গোপালমাঠ শিব মন্দিরে শিবের মাথায় জল ঢালার জন্য দামোদর নদে জল নিতে যায়। এর আগের সোমবারও ওরা একই ভাবে নদে স্নান করে জল নিয়ে গিয়েছেন। রাহুল দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। বাকি পাঁচ জন এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন। কেউ সাঁতার জানতেন না। গৌরব ও ইন্দ্রনীল পাড়ে বসেছিলেন। গৌরব জানান, তাঁদের কাছে মোবাইল ছিল না। বন্ধুরা তলিয়ে যাচ্ছে দেখে দৌড়ে গিয়ে কাছাকাছি এক জনের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে তিনি তাঁর বাবা গৌতমবাবুকে ফোন করেন। গৌতমবাবু বলেন, “ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ গৌরব ফোন করে জানায়, চার জন এক সঙ্গে ঝাঁপ দিয়েছিল। জলে তলিয়ে গিয়েছে। উঠে আসতে পারেনি। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবেশীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছই।’’

বিডিও (অণ্ডাল) ঋত্বিক হাজরা জানান, ব্লকের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের উদ্ধারকারী দল উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। নদের নির্দিষ্ট ঘাটে স্নান করা নিয়ে প্রচার চালানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE