তৃণমূল কর্মীদের উল্লাস। নিজস্ব চিত্র
জেলার সাতটি পঞ্চায়েতে সোমবার বোর্ড গঠন হয়েছে। কোথাও দীর্ঘ কয়েক বছর পরে বোর্ড গঠন করেছে তৃণমূল। কোথাও ক্ষমতা ধরে রেখেছে বিরোধী দল। তবে এই বোর্ড গঠনকে ঘিরে কোনও গোলমালের খবর নেই।
এ দিন সালানপুর ব্লকের সালানপুর, এথোড়া ও আল্লাডি, রানিগঞ্জ ব্লকের আমরাসোঁতা, অণ্ডালের শ্রীরামপুর ও কাঁকসার আমলাজোড়া পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন হয়েছে। সালানপুরের তিনটি পঞ্চায়েতের মধ্যে এই প্রথমবার সালানপুর ও এথোড়া পঞ্চায়েতে একক ভাবে বোর্ড গঠন করতে পেরেছে তৃণমূল। গত বারের মতো এ বারও আল্লাডির ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছে তারা। এ দিন দুপুরে সালানপুর ও এথোড়ার বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র তৃণমূল কর্মী-সদস্যদের মধ্যে বাড়তি উৎসাহ দেখা গিয়েছে। প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচনের অনুষ্ঠান দেখতে হাজির হয়েছিলেন গ্রামের সাধারণ মানুষজনও। সালানপুর পঞ্চায়েতের ৮টি আসনের মধ্যে ৭টি গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। একটি আসন পেয়েছে সিপিএম। কোনও বিরোধিতা ছাড়াই প্রধান নির্বাচিত হন দীপালি বাউরি। উপপ্রধান হন প্রলয় চট্টোপাধ্যায়। দীপালিদেবী বলেন, ‘‘গ্রামের নিকাশি, সাফাই ও রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করাই আমার প্রথম কাজ।’’ প্রশাসন সূত্রে খবর, ১৯৮৪ সালে পঞ্চায়েত গঠনের পরে প্রথমবার ভোটে যেতে কংগ্রেস। পরের বার থেকে টানা চার বার সিপিএমই এই পঞ্চায়েতের দখল নিজেদের হাতে রেখেছিল। দীপালিদেবীর অভিযোগ, ‘‘বিগত বছরগুলিতে সাধারণ বাসিন্দারা নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।’’ তিনি জানান, বহু বছর থেকে অর্ধনির্মিত অবস্থায় পড়ে থাকা সালানপুরের জল প্রকল্পটি চালু করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি ডালমিয়া সেচ প্রকল্পটিও চালু করা হবে। প্রাক্তন সিপিএম প্রধান রুপেশ বাউরি বলেন, ‘‘আমরা সব সময় বিরোধীদের নিয়েই চলেছি। কাজ না হওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। এ বার কীভাবে ভোট হয়েছে, তা সাধারণ মানুষ ভালই জানেন।’’
এই প্রথমবার একক ক্ষমতায় এথোড়া পঞ্চায়েতে বোর্ড দখল করেছে তৃণমূল। পাঁচটি আসনের মধ্যে তিনটিতে তৃণমূল ও দু’টি আসন পেয়েছে বিজেপি। সদস্যরা প্রধান হিসেবে মিঠু ভট্টাচার্যের নাম প্রস্তাব করেন। এখানেও কোনও বিরোধিতা ছাড়াই তিনিই আনুষ্ঠানিক ভাবে দায়িত্ব নেন। এথোড়ার উপপ্রধান হন অজয় ভট্টাচার্য। গত বারের মতো এ বারও আল্লাডি পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়েছে তৃণমূল। প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন মহম্মদ সেলিম মিঞা। উপপ্রধান হন পার্বতী কিস্কু। এই পঞ্চায়েতের ৯টি আসনের সব ক’টিতেই জিতেছে তৃণমূল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সদ্য নির্বাচিত জেলাপরিষদ সদস্য মহম্মদ আরমান।
আমলাজোড়া পঞ্চায়েতে নির্বিঘ্নে বোর্ড গঠন করল তৃণমূল। বোর্ড গঠন উপলক্ষে পুলিশের কড়াকড়ি ছিল সকাল থেকেই। এই পঞ্চায়েতেই ২১টি আসনের সবকটিতে ভোট হয়। সব আসনেই জয়ী হন তৃণমূলের প্রার্থীরা। প্রধান হয়েছেন চয়নিকা পাল। উপপ্রধান হয়েছেন হৃদয় বাগদি। গোলমাল এড়াতে জয়ী সদস্যদের ছাড়া অন্য কাউকে পঞ্চায়েতের কাছাকাছি আসতে দেওয়া হয়নি প্রশাসনের তরফে। কাঁকসার বিডিও অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, নির্বিঘ্নেই বোর্ড গঠন হয়েছে। সর্বসম্মতিক্রমে প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচিত করা হয়েছে।
রানিগঞ্জের আমরাসোঁতা পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়ল বামেরা। আসানসোল-দুর্গাপুর খনি এলাকায় একমাত্র এই পঞ্চায়েতটি বামেদের হাতে রয়েছে। ৫টি আসনের ৪টি পেয়েছে তারা। সিপিএমের নিনেশ বাউরি প্রধান ও সিপিআই-এর মুন্নি বেগম উপপ্রধান নির্বাচিত হন। বোর্ড গঠনের আগে স্থানীয় সিটু কার্যালয় প্রাঙ্গণে সভা হয়। ছিলেন বিধায়ক রুনু দত্ত, সিপিএমের জেলা কমিটির সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় ও রাজ্য নেতা আভাষ রায়চৌধুরী। শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের ৫টি আসনেই জয়ী হয় তৃণমূল। শিপ্রা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধান ও শঙ্কর ঘোষ উপপ্রধান নির্বাচিত হন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy