Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সুপ্রিম-রায়ে উচ্ছ্বাস তৃণমূলের

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা আসনগুলির ফল ঘোষণা করা যাবে। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পরে দু’রকমের প্রতিক্রিয়া পশ্চিম বর্ধমানে। উচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে শাসক দলের নেতা, কর্মীদের মধ্যে। উল্টো দিকে, বিরোধীরা মহামান্য আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েও না খুশ। 

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৮ ০১:২৮
Share: Save:

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা আসনগুলির ফল ঘোষণা করা যাবে। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পরে দু’রকমের প্রতিক্রিয়া পশ্চিম বর্ধমানে। উচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে শাসক দলের নেতা, কর্মীদের মধ্যে। উল্টো দিকে, বিরোধীরা মহামান্য আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েও না খুশ।

চলতি বছর মে মাসে রাজ্যের ৬৬ শতাংশ আসন, যেগুলিতে ভোট হয়েছিল, সেগুলির ফল ঘোষণা করা হয়। কিন্তু বাকি ৩৪ শতাংশ আসন নিয়ে জটিলতা শুরু হয়। বিরোধীরা শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করে। ই-মেলে জমা দেওয়া মনোনয়নপত্রকে বৈধতা দেওয়ার আর্জি জানায়। গোটা রাজ্যের মতো পশ্চিম বর্ধমানেও ভোট না হওয়া পঞ্চায়েত আসনের সংখ্যা ছিল প্রচুর। প্রশাসন সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত স্তরে জেলার মোট ৮৩৩টি আসনের মধ্যে ভোট হয়েছিল ৩০১টিতে। পঞ্চায়েত সমিতিতে ১৬৬ আসনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় মাত্র ৬৬টি আসনে। জেলা পরিষদের ১৭টির মধ্যে অবশ্য ১৬টিতেই লড়াই হয়েছিল।

এই বড় অংশের আসনে ভোট না হওয়ার কারণ হিসেবে সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করে। ওই ৩৪ শতাংশ আসনের ভবিষ্যৎ নিয়ে লড়াই গড়িয়েছিল আদালতেও। এ দিন রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে স্বস্তি দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা আসনগুলির ফল ঘোষণা করা যাবে।

দেশের শীর্ষ আদালতের এই রায় শুনে বিরোধীরা অবশ্য নানা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। বিজেপি-র জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের কথায়, ‘‘শীর্ষ আদালতের রায় শিরোধার্য। কিন্তু তার পরেও বলছি আমরা খুশি নয়। মানুষের গণতন্ত্র রক্ষিত হল না।’’ প্রায় একই কথা বলেছেন সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীও। তাঁর কথায়, ‘‘আদালতের রায় স্বাগত। কিন্তু আমার মতে, এই রায়ে অনেকেই আশাহত হবেন।’’ একই কথা বলেছেন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীও। এ দিনও বিজেপি, সিপিএম বা কংগ্রেসের অভিযোগ, জোর করে তাঁদের ভোটে লড়তে দেয়নি তৃণমূল। আরও অভিযোগ, হুমকি, মারধর করে অনেক জায়গায় বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করা হয়েছে। তাঁদের আরও অভিযোগ, তাঁদের জেতা প্রার্থীরা এখনও সন্ত্রাসের কারণে ঘরছাড়া। সন্ত্রাসের অভিযোগ করে সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের বক্তব্য, ‘‘যদি ফের ওই আসনগুলোতে নির্বাচন হত, তা হলেও কি মানুষকে ভোট দিতে দেওয়া হত?’’

যদিও বিরোধীদের এ সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে খুশির হাওয়া শাসক শিবিরে। জানা গিয়েছে, রায় শোনার পরেই পঞ্চায়েতগুলিতে প্রধান ও উপপ্রধান ঠিক করার প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে তৃণমূলে। তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আদালতের রায়ে মানুষ খুশি। উন্নয়নের কাজ আরও ত্বরান্বিত হবে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘দলীয় ভাবে আমরা সবরকম ভাবে প্রস্তুত। সরকারের বিজ্ঞপ্তি জারির পরে স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগী হলেই যাবতীয় প্রক্রিয়া শুরু হবে। আদালতের রায় মানুষের ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়েছে। সেই সঙ্গে বিরোধীরাও বুঝুন, বিভ্রান্তি ছড়ালে চলবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE