Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
bardhaman

খনি চালান নেতা, নালিশ কর্মীদের

অভিযোগকারীদের তালিকায় রয়েছেন, সমিতির কর্মাধ্যক্ষ (মৎস্য ও প্রাণী) চিন্তা রুইদাস,  কর্মাধ্যক্ষ (নারী ও শিশুকল্যাণ) দীপ্তি মাজি। রয়েছেন সমিতির সদস্য চায়না কর্মকার, এগারা পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান রুমা বাউরি, রতিবাটি পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান সৌমেন সিংহ, বেশ কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্য-সহ ৪০ জন তৃণমূল সমর্থক।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:১৪
Share: Save:

তৃণমূল পরিচালিত রানিগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিনোদ নুনিয়া অবৈধ কয়লা খনি চালাচ্ছেন—জেলাশাসকের (পশ্চিম বর্ধমান) কাছে এমনই নানা অনিয়মের অভিযোগ জানিয়েছেন তৃণমূলেরই নেতা-কর্মীদের একাংশ।
অভিযোগকারীদের তালিকায় রয়েছেন, সমিতির কর্মাধ্যক্ষ (মৎস্য ও প্রাণী) চিন্তা রুইদাস, কর্মাধ্যক্ষ (নারী ও শিশুকল্যাণ) দীপ্তি মাজি। রয়েছেন সমিতির সদস্য চায়না কর্মকার, এগারা পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান রুমা বাউরি, রতিবাটি পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান সৌমেন সিংহ, বেশ কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্য-সহ ৪০ জন তৃণমূল সমর্থক। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ৪০ জন গত ২১ জুলাই অভিযোগপত্রটি জমা দিয়েছেন।
অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে, বিনোদবাবু নিজের সংসদে (২ নম্বর সংসদ, কোয়ারডি ৯ নম্বর) অবৈধ ভাবে কয়লা খনি চালাচ্ছেন। পাশাপাশি, ঘূর্ণিঝড় আমপানের ক্ষতিপূরণের জন্য ভুয়ো তালিকা তৈরি, অবৈধ ভাবে বালি, মাটি কেটে ইটভাটার মালিকদের বিক্রি করা-সহ আরও নানা অভিযোগ করা হয়েছে বিনোদবাবুর বিরুদ্ধে। অভিযোগকারীদের দাবি, বিনোদবাবুকে সভাপতির পদে রেখে দলীয় ভাবে এবং প্রশাসনিক ভাবে ঠিক মতো তদন্ত করা সম্ভব নয়। কারণ, তাতে তদন্ত ‘প্রভাবিত’ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অন্যতম অভিযোগকারী তথা তৃণমূল নেতা তরুণ মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘বিনোদবাবু রতিবাটি পঞ্চায়েত এলাকার গাছ কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন। এই অভিযোগ বন দফতরেও জানানো হয়েছে।’’
এ দিকে, তৃণমূলের অন্দর মহলের খবর, দলীয় হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে ছড়িয়ে পড়া তালিকায় দেখা যাচ্ছে, সম্প্রতি তৃণমূলের জেলা কমিটিতে ঠাঁই পেতে চলেছেন বিনোদবাবু। এই পরিস্থিতিতে বিনোদবাবুকে দলের আরও গুরুত্ব দিলে আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভা এলাকায় দল সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে ‘নেতিবাচক’ ধারণা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূল নেতা, কর্মীদের একাংশের। যদিও, হোয়াটস অ্যাপে ছড়িয়ে পড়া ওই তালিকা সম্পর্কে দলীয় গ্রুপেই তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি লিখেছিলেন, ‘‘এটা অনুমোদিত কমিটি নয়।’’
তবে বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে বিরোধীরা। রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্ত, বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়েরা প্রায় এক সুরেই বলেন, ‘‘তৃণমূল যে এলাকায় অবৈধ কয়লা, বালি কারবারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত, বিনোদবাবুর বিরুদ্ধে তাঁর দলের লোকজনের অভিযোগেই তা স্পষ্ট।’’
যদিও যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই বিনোদবাবু বলছেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে ওঠা কোনও অভিযোগেরই ভিত্তি নেই। দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব সবটাই জানেন। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’’ তবে কারা যড়যন্ত্র করছেন, সে বিষয়ে ভেঙে কিছু বলতে চাননি বিনোদবাবু। এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য যোগাযোগ করা হলে জিতেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘কোনও মন্তব্য করব না।’’ মন্তব্য করতে চাননি জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজিও।
বেআইনি খনির যে অভিযোগ উঠেছে, তার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ কি করা হবে? এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায়। যদিও তাঁর মন্তব্য, ‘‘বেআইনি কয়লার কারবারের সম্পর্কে অভিযোগ পেলে আমরা অভিযান চালিয়ে থাকি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman Coal Mininig
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE