শঙ্খশুভ্র ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
পুরমন্ত্রী তথা জেলা পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে জনসংযোগ করছেন বর্ধমান পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলরেরা। জরুরি ভিত্তিতে কোথায়, কী কাজ করতে হবে তার তালিকা তৈরি করছেন। সোমবার সন্ধ্যায় শাঁখারিপুকুরের অরুণ দাস সরণির কাছে বস্তিতে জনসংযোগ করার সময়ে দলের কর্মীদের হাতেই মার খাওয়ার অভিযোগ করেছেন ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর শঙ্খশুভ্র ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, রবিবার বিকেলেও জনসংযোগ করার সময়ে দলের এক গোষ্ঠীর হাতে হেনস্থা হন তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা সভাপতি তথা প্রাণিসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “পর্যবেক্ষককে পুরো ঘটনা জানিয়েছি। দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।’’
পেশায় চিকিৎসক শঙ্খশুভ্রবাবু সোমবার রাতেই বর্ধমান থানায় নির্দিষ্ট করে পাঁচ জনের নামে অভিযোগ করেছেন। ওই পাঁচ জনের সঙ্গে আরও অনেকে ছিল বলেও তিনি জানিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্গাপদ দাস ও আপু সাহা নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ধৃতেরা বর্ধমান পুরসভার এক প্রভাবশালী নেতার অনুগামী বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে শঙ্খশুভ্রবাবু জানিয়েছেন, দলের নির্দেশে সোমবার রাত সওয়া ৮টা নাগাদ কর্মসূচি করছিলেন তিনি। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শাঁখারিপুকুরের একটি বস্তির কাছে কয়েকজন লাঠি, শাবল, বাঁশ, টাঙি-সহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁর উপর ‘চড়াও’ হয়। তাঁর অভিযোগ, “আমাকে এলোপাথাড়ি মারার সময়ে নিমাই মজুমদার ওরফে মন্টু নামে এক জন টাঙির বাড়ি মারে। কোনও রকমে বেঁচে যাই। অন্যেরা আমার বুকের উপরে বসে খুন করার উদ্দেশে শ্বাসরোধ করতে যায়। দলের কর্মী খোকন ঘোষ বাঁচাতে এলে তাঁকেও মারধর করা হয়। চিৎকারে আশেপাশের লোকজন বেরিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।’’
এ দিন ছোটনীলপুরের কবরখানার সামনে বাড়িতে বসে শঙ্খশুভ্রবাবুর দাবি, “প্রাণ ফিরে পেলেও প্রচণ্ড ভয়ে আছি। ঘটনার পরে কোনও রকমে দলের শহর সভাপতি অরূপ দাসকে ফোন করি। উনি বিভিন্ন জায়গায় ফোন করে লোকজন পাঠিয়ে আমাকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করেন। পরে পুলিশ এসে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। জেলা সভাপতি খুব সহানুভূতি দেখিয়েছেন। তাঁর নির্দেশেই বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেছি।’’ তাঁর অভিযোগ, “দলের এক প্রভাবশালী নেতার মদতেই আমার উপর আক্রমণ করা হয়েছে, সেটা সবাই জানে।’’ যদিও এ ব্যাপারে কোনও কথা বলতে রাজি হননি শহর সভাপতি।
আর এক বিদায়ী কাউন্সিলর রত্না রায়ও রবিবার বিকেলে জনসংযোগ করতে গিয়ে দলের কর্মীদের হাতে হেনস্থা হয়েছেন বলে অভিযোগ। তিনিও বর্ধমান থানায় একটি অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, বিভিন্ন পাড়ায় প্রচার ও কোথায় কী কাজ বাকি দেখে ফেরার সময় লস্কর দিঘির কাছে তাঁকে আটকানো হয়। ‘হেনস্থা’ করা হয়। প্রচারের ছবিও মুছে দেওয়া হয়েছে। এ দিন জেলা তৃণমূল দফতরের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “কোথায় কোথায় প্রচার করছি, সেই ছবি জমা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ছবি মুছে প্রমাণ করতে চাইছে, আমি প্রচার করিনি। পর্যবেক্ষককে সব জানিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy