Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

প্রধান পদে হারলেন দল মনোনীত সদস্য 

১৯৮৩-র পরে এই প্রথম এখানে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করল তৃণমূল। সেই মতো খান্দরা পঞ্চায়েতে দল প্রধান ও উপপ্রধান হিসেবে দু’জনকে মনোনীতও করে।

এলাকায় চলছে পুলিশি টহল। খান্দরায়। —নিজস্ব চিত্র।

এলাকায় চলছে পুলিশি টহল। খান্দরায়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
অণ্ডাল শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৩৪
Share: Save:

১৯৮৩-র পরে এই প্রথম এখানে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করল তৃণমূল। সেই মতো খান্দরা পঞ্চায়েতে দল প্রধান ও উপপ্রধান হিসেবে দু’জনকে মনোনীতও করে। কিন্তু সোমবার সেই মনোনীত প্রার্থী হেরে গেলেন তৃণমূলেরই অন্য এক জনের কাছে। উপপ্রধান পদে দলের মনোনীত প্রার্থীও উপপ্রধান হতে পারেননি বলে জানা গিয়েছে। এর জেরে দলের অন্দরের কোন্দলই প্রকাশ্যে এল বলে মনে করছেন তৃণমূলের স্থানীয় কর্মীদের একাংশ।

পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২২টি সংসদ। সব কটিতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতে তৃণমূল। তৃণমূলের অণ্ডাল ব্লক কমিটি সূত্রে জানা যায়, খান্দরা সংসদ থেকে নির্বাচিত আশিস ভট্টাচার্যকে প্রধান ও সিদুলি সংসদ থেকে নির্বাচিত তপন ধাঙড়কে উপপ্রধান হিসাবে মনোনীত করা হয়। সেই মতো এই কথা নির্বাচিত সদস্যদেরও জানানো হয় বলে জানা গিয়েছে।

কিন্তু সোমবার বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হতেই দেখা যায় অন্য ছবি। প্রধান হিসেবে খান্দরার আশিস ভট্টাচার্যের নাম প্রস্তাব করেন মিতালি চৌধুরী। প্রস্তাব সমর্থন করেন কৃষ্ণদেব রাম। সঙ্গে সঙ্গে সিদুলির ৬ নম্বর সংসদ থেকে জিতে আসা বসন্ত বাড়ুই সিদুলির শ্যামল অধিকারীর নাম প্রস্তাব করেন। এই প্রস্তাব সমর্থন করেন সিদুলির ৪ নম্বর সংসদ থেকে জিতে আসা উমেশ যাদব। এর পরে ‘প্রিসাইডিং অফিসার’ প্রধান পদে সদস্যদের মধ্যে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেন। সেখানেই ১৩-৯ ভোটের ব্যবধানে আশিসবাবুকে হারিয়ে দেন শ্যামলবাবু। তার পরে শ্যামলবাবু উপপ্রধান হিসেবে সদ্য নির্বাচিত লখিন্দর মাড্ডির নাম প্রস্তাব করেন। সেই প্রস্তাব সমর্থন করেন আশিসবাবু। এর পরে অন্য কোনও নাম প্রস্তাব না হওয়ায় উপপ্রধান পদে শপথ নেন লখিন্দরবাবু।

পঞ্চায়েতে বিরোধী প্রার্থী নেই। কিন্তু বোর্ড গঠন উপলক্ষে খান্দরা পঞ্চায়েত দফতরে মোতায়েন করা হয় প্রচুর পুলিশকর্মী। তৃণমূল কর্মীদের সূত্রে জানা যায়, আশিসবাবু ও শ্যামলবাবু দলের অন্দরে পরস্পরের বিরোধী বলেই পরিচিত। এ দিন দু’পক্ষেরই অনেক অনুগামী এসেছিলেন পঞ্চায়েত দফতরে।

যদিও কোনও রকম কোন্দলের কথা স্বীকার করেননি কেউই। শ্যামলবাবু বলেন, “বরাবর বামেদের দখলে থাকা এই পঞ্চায়েতে প্রথম থেকেই সিদুলি থেকে প্রধান ও খান্দরা থেকে উপপ্রধান মনোনীত করা হত। এ বার দল উল্টো সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এটা মানতে পারেননি নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যেরা। আমার সঙ্গে আশিসের কোনও দ্বন্দ্ব নেই। একসঙ্গে কাজ করব।” আশিসবাবুরও কথায়, ‘‘দলে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। প্রধানের সঙ্গে সব রকম সহযোগিতা করব।” তৃণমূলের অণ্ডাল ব্লক সভাপতি অলোক মণ্ডলও বলেন, “যা হয়েছে, দলের অন্দরেই হয়েছে। কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।’’

তবে এ দিনও সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছে সিপিআই ও সিপিএম। সিপিআই নেতা রাজু রাম ও সিপিএম নেতা তুফান মণ্ডলেরা জানান, এ বারের ভোটেও সবক’টি সংসদে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু শাসক দলের সন্ত্রাসের জেরে তাঁদের প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছিলেন। যদিও সন্ত্রাসের অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।

এ দিন দক্ষিণখণ্ড ও মদনপুর পঞ্চায়েতেও বোর্ড গঠন করল তৃণমূল। দক্ষিণখণ্ডে রুমা বাউরি প্রধান ও অনন্ত ঘোষ উপপ্রধান পদে শপথ নিয়েছেন। মদনপুরে ঝর্ণা সহিস ও রাজেন প্রসাদ যথাক্রমে প্রধান ও উপপ্রধানের দায়িত্ব নিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Panchayat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE