আহত ছাত্রনেতা। —নিজস্ব চিত্র।
দুই ছাত্রকে ভর্তি নেওয়ার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএমসিপি-র একাংশের বিক্ষোভ চলছিল। আধিকারিকদের রাত পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখার ঘটনাও ঘটে। সেই ঘটনার বিরোধিতা করে ওই দুই ছাত্র যে টিএমসিপি-র অংশই নন, তা জানিয়ে দেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক অশোক রুদ্র। এ বার ওই আন্দোলনে সামিল না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক রিন্টু লায়েককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল শেখ সুখচাঁদ-সহ জনা দশেকের বিরুদ্ধে। ফের প্রকাশ্যে এসে গেল টিএমসিপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় শনিবার রাতেই রিন্টুকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে পরে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে স্থানান্তর করা হয়। রিন্টু নিজে তো বটেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ এবং নেতাজি ছাত্রবাসের ৪৬ জন আবাসিকও থানায় এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে উপাচার্য, জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপারের কাছেও। অভিযুক্ত শেখ সুখচাঁদের অবশ্য যোগাযোগ করা যায়নি। ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক দীপক পাত্রও বলেন, “আমিও ঘটনাটি শোনার পরে সুখচাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি। কিন্তু আমার ফোনও ধরেননি।”
রিন্টুর অভিযোগ, আগামী ৩১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীনবরণ উৎসব হওয়ার কথা। সেই নিয়েই শনিবার রাতে একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তাতে যোগ দিতেই নেতাজি ছাত্রাবাস থেকে মোটরবাইক নিয়ে বের হন রিন্টু। এরপরেই শেখ সুখচাঁদ, শেখ বাপন-সহ প্রায় ১০ জন তাঁকে ঘিরে ধরেন বলে অভিযোগ। এরপরে লাঠি, উইকেট এবং রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে তাঁর দাবি। হাঁটুর উপর পরপর রড দিয়ে আঘাতও করা হয়। পরে তাঁর চিৎকারে ওই ছাত্রাবাসের অন্য আবাসিকেরা বের হলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় রিন্টুকে। খবর পেয়ে তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ও সভাপতি প্রদীপ বাজপেয়ী।
আমিরুলেরও অভিযোগ, “সুখচাঁদ এমবিএ টু্যরিজমে ভতির্র্ হওয়ার জন্য যে আন্দোলন করছিলেন, তাতে যোগ দিতে তিনি রিন্টু-সহ আমাদের সকলকেই ডাকেন। কিন্তু সেই আবেদন রিন্টু সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন বলে ওঁর ওপরে রাগ ছিল সুখচাঁদের। সেই রাগের কারণেই ওঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে।” ছাত্র সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক প্রসেনজিৎ মাজিরও দাবি, “ওই হামলার ঘটনার কথা আমরা সোমবার উপাচার্যকে লিখিত ভাবে জানাব। দোষীদের সাজার দাবিতে আমরা আন্দোলনও করব।”
শনিবার রাতেই অবশ্য রিন্টুর উপর হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদকের নেতত্বে রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ বর্ধমান থানা ঘেরাও করেন একদল ছাত্র। পুলিশ দোষীদের গ্রেফতার করার আশ্বাস দেওয়ার পরে ঘেরাও ওঠে। বর্ধমান থানা সূত্রে বলা হয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy