হানা: কালনার আড়তে কর্তাদের পরিদর্শন। নিজস্ব চিত্র
তখন সকাল দশটা। আলুর মান পরীক্ষায় কালনা ২ ব্লকের সেনেরডাঙার একটি আড়তে পৌঁছে গিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা। আড়তে ঢোকার আগে মাটির হলুদ রং দেখেই তাঁদের সন্দেহ হয়, এখানে রংমাখানো আলু রয়েছে। ভিতরে ঢুকে তল্লাশি শুরু করতেই মেলে বস্তাবন্দি রংমাখানো আলু। ডেকে পাঠানো হয় আড়তদারকে। তিনি সটান অস্বীকার করেন। তবে আলু দেখিয়ে হাতেনাতে প্রমাণ করে দেন কর্তারা। জিভ কাটেন ওই আড়তদার।
সেনেরডাঙার পরের গন্তব্য পাতিলপাড়া। সেখানে আবার মেলে বস্তার পর বস্তা ভরা রং। আড়তে কাজকরা অনেক শ্রমিক জিজ্ঞাসাবাদে মেনেও নেন, এই রং লাগানো হয় আলুতে। উদ্ধার হয় মোট ৬২ বস্তা রং। দুই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধেই কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করে জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটি।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হিমঘর থেকে আলুর বস্তা বের করে তাতে রং মিশিয়ে বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করার রেওয়াজ বহুদিনের। ব্যবসায়ীদের দাবি, হলুদ এই রং মেশানে আলুর উজ্জলতা বাড়ে। পাশাপাশি আলুর গায়ে কোনও দাগ বা কোনও অংশ নষ্ট হয়ে গেলেও ক্রেতারা সহজে বুঝতে পারেন না। ফলে সরকারি ভাবে ক্ষতিকারক এই রং নিষিদ্ধ করার পরেও বাজারে এই আলুর চাহিদা রয়েছে ভালই।
বৃহস্পতিবার পূর্বস্থলীর নাদনঘাটে একটি দ্বিতল বাজার উদ্বোধনে গিয়েছিলেন রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত। সেখানেই,আলুতে রং মিশিয়ে যাঁরা কারবার করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে হাজির জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটির সম্পাদক শুভ্রাংশু সিংহরায়কে এ ব্যাপারে অভিযান চালানোরও নির্দেশ দেন। পরের দিনই শুরু হয়ে যায় অভিযান। আলুতে রং মেশানোর কারবার কোন কোন এলাকায় চলছে তা নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করে নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটি। শুক্রবার সকালে শুভ্রাংশুবাবু ছাড়াও ওই অভিযানে ছিলেন সহকারী কৃষি বিপণন আধিকারিক গৌতম দাস, নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটির ইন্সপেক্টর প্রণব ঘোষ, হিসাবরক্ষক শ্যামল ভট্টাচার্য।
শুভ্রাংশুবাবু বলেন, ‘‘ওই দুই ব্যবসায়ী স্বীকার করেছেন তারা এ রাজ্যের বাজারে রং করা আলু পাঠাতেন না। তবে তাদের রং মেশানো আলু যেত বিহার, অসমের মতো রাজ্যগুলিতে। অভিযান লাগাতার চলবে।’’ কালনা থানা জানিয়েছে, ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy