Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
প্রশ্নে রানিগঞ্জের পুরনো বাড়ি

ছাদ ধসে জখম দুই নির্মাণকর্মী

এলাকাবাসী জানান, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বাড়িটির ছাদ ভাঙার কাজ করছিলেন বল্লভপুর ইউনিয়নপাড়ার বাসিন্দা নিমার্ণকর্মী সূরয কুমার ও হালদারবাঁধ এলাকার প্রণব কেওড়া। আচমকা বাড়ির ছাদ ধসে যায়।

বিপত্তি: ছাদ ভেঙে দুর্ঘটনা রানিগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র

বিপত্তি: ছাদ ভেঙে দুর্ঘটনা রানিগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৫১
Share: Save:

প্রায় ছ’দশকের পুরনো বাড়ি মেরামতির সময়ে ছাদ ধসে জখম হলেন দু’জন নির্মাণকর্মী। বৃহস্পতিবার রানিগঞ্জের হাটিয়াতলাওয়ের ঘটনা। এই পরিস্থিতিতে শহরের বিপজ্জনক বাড়িগুলির অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এলাকাবাসী জানান, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বাড়িটির ছাদ ভাঙার কাজ করছিলেন বল্লভপুর ইউনিয়নপাড়ার বাসিন্দা নিমার্ণকর্মী সূরয কুমার ও হালদারবাঁধ এলাকার প্রণব কেওড়া। আচমকা বাড়ির ছাদ ধসে যায়। দু’জনেই ইট, চাঙড়ের নীচে চাপা পড়েন। বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে আলুগড়িয়া ব্লক স্বাস্থ্যকন্দ্রে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁদের বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। বাড়ির মালিক রামবচন সিংহ জানান, দুই ঠিকাকর্মী ঘর ভাঙছিলেন। আচমকা বিপত্তি ঘটে।

এই ঘটনা সামনে আসার পরে শহরের বিপজ্জনক বাড়িগুলির অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আসানসোল পুরসভা সূত্রে জানা যায়, রানিগঞ্জের মোট ৪৬টি বাড়ি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। পুরসভার তরফে ইন্দ্রজিৎ

কোনার জানান, তিলক রোড, আব্দুল রহমান রোড, জওহরলাল নেহরু রোড, সিআর রোড, এমজি রোড, কুমারবাজার লেন, এনএসবি রোড, গির্জাপাড়া মেদিনীপুর রোড, অন্নপূর্ণা লেন, মির্জা গালিব স্ট্রিট, সিহারসোল নারকেলবাগান-সহ শহরের নানা জায়গায় বাড়িগুলি রয়েছে। বছর দুয়েকের মধ্যে কুমারবাজার সাহেববাঁধ, তিলক রোড, বড়বাজার, সিআর রোডে মোট চারটে বাড়ির একাংশ ভেঙে গিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, বাড়িগুলি সংস্কার করা হচ্ছে না কেন? পুরসভার দাবি, শরিকি বিবাদ, ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালার মধ্যে মতান্তর-সহ নানা কারণে সংস্কারের কাজ থমকে রয়েছে। বাড়ি মালিকদের একটা বড় অংশ জানান, কমবেশি ছ’দশকেরও বেশি আগে বাড়িগুলি তৈরি হয়েছে। এই ধরনের বাড়িগুলিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ন্যূনতম ভাড়ায় বাস করছেন ভাড়াটিয়ারা। তাঁরা বাড়ি ছাড়তে চাইছে না। আবার কেউ কেউ বাড়ি ছাড়ার জন্য নগদ অর্থ দাবি করছে। এ ছাড়া শরিকি বিবাদও রয়েছে।

আসানসোল পুরসভার চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, বার বার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাড়িগুলি সংস্কারের আর্জি জানিয়েছে পুরসভা। কিন্তু তাতে মাত্র ১০টি বাড়ির মালিক পুরসভার সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এ ছাড়া পুরনো বাড়ি ভাঙার মত পরিকাঠামো বা পুরোসভার আইন়ি ক্ষমতাও সীমাবদ্ধ বলে জানা গিয়েছে। অমরনাথবাবুর অবশ্য দাবি, “আমরা জানিয়ে দিয়েছি, কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় পুরসভার নয়। এর পরেও সাড়া মিলছে না। কী করা যায় বাড়িগুলি নিয়ে, এ বিষয়ে বিকল্প উপায় কী হতে পারে, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।’’

এ ভাবে ছাদ ধসে জখম হওয়ার ঘটনা সামনে আসায় নাগরিক-নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। রানিগঞ্জ চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি সন্দীপ ভালোটিয়া বলেন, “এর আগে সিআর রোডে সীতারামজি ভবন লাগোয়া একটি চার তলার বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ায় জখম হয়েছিলেন এক রিকশা চালক ও এক সাইকেল আরোহী। প্রয়োজনে জনস্বার্থে আদালতের দ্বারস্থ হওয়া দরকার পুরসভার। এ ছাড়া বিপত্তি ঠেকানো যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Injury Construction Worker Roof Collpase
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE