Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ছাত্র-মৃত্যুতে নার্সিংহোমের দুই কর্তা ধৃত

বীরভূমের মেধাবী মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার করা হল বর্ধমানের অন্নপূর্ণা নার্সিংহোমের মালিক অনিমেষ মল্লিক ও ম্যানেজার শেখ রাহুল ইসলামকে। রবিবার পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করেছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কিছু নথিপত্রও।

বর্ধমানের নার্সিংহোমে পুলিশ। শনিবার রাতে। নিজস্ব চিত্র

বর্ধমানের নার্সিংহোমে পুলিশ। শনিবার রাতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৮ ০২:২৪
Share: Save:

বীরভূমের মেধাবী মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার করা হল বর্ধমানের অন্নপূর্ণা নার্সিংহোমের মালিক অনিমেষ মল্লিক ও ম্যানেজার শেখ রাহুল ইসলামকে। রবিবার পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করেছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কিছু নথিপত্রও।

বর্ধমানের নবাবহাটের কাছে ওই নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন বীরভূমের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অরিজিৎ দাস। তাকে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় কলকাতায়। অভিযোগ, সাধারণ এসি অ্যাম্বুল্যান্সকেই ‘আইসিসিইউ’ বলে সাজানো হয়েছিস। এসি সারাইয়ের মিস্ত্রিকে ‘ডাক্তার’ সাজিয়ে তাতে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় অরিজিতের।

পূর্ব যাদবপুর থানায় গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করে অরিজিতের পরিবার। পুলিশ ওই অ্যাম্বুল্যান্সের চালক এবং ওই এসি সারানোর মিস্ত্রিকে গ্রেফতার করে। শনিবার রাতে কলকাতা থেকে পুলিশের একটি দল ওই নার্সিংহোমে তদন্তের জন্য পৌঁছয়। গভীর রাত পর্যন্ত তদন্ত চলে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।

রবিবার বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়ও বলেন, ‘‘ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ জেলাশাসকও এ ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। বর্ধমানে বিভিন্ন নার্সিংহোম ও অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের মধ্যে ‘চক্র’ চলার অভিযোগ উঠছে বারবার। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সে নিয়ে তদন্ত হবে বলে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক আশ্বাস দেন।

পূর্ব যাদবপুর থানা সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ পাওয়ার পরে অ্যাম্বুল্যান্সের কাগজপত্র, সেটির মালিক কে, আদৌ ওই আইসিসিইউ অ্যাম্বুল্যান্সে যাবতীয় সরঞ্জাম ছিল কি না, অ্যাম্বুল্যান্সটির জন্য কোনও টেকনিসিয়ান নির্দিষ্ট ছিলেন কি না, সে সব খতিয়ে দেখা শুরু হয়। পুলিশের একটি দল গোটা বিষয়টির তদন্তে বর্ধমানে পৌঁছয়। পুলিশ জানায়, ওই কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় অন্নপূর্ণা নার্সিংহোমের গাফিলতি ধরা পড়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষই অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, এসি সারাইয়ের মিস্ত্রি ওই ব্যক্তিকে নার্সিংহোমের কর্মীরাই অ্যাম্বুল্যান্সে উঠতে বলছেন, সেটাও ধরা পড়েছে ফুটেজে। প্রমাণ হিসেবে সিসিটিভি ফুটেজ-সহ কিছু কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নার্সিংহোমের বাইরে ভিকি নামে এক যুবক অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া দেওয়ার ‘দালাল’ হিসেবে কাজ করেন বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। সেই যুবকের খোঁজ করা হচ্ছে। ধৃত অনিমেষ ও রাহুলকে এ দিন আলিপুর আদালতে তোলা হলে ২২ মার্চ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Student Doctor Nursing Home ICCU
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE