পাঁচ বছরের মেয়েকে অসৎ উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুনের অভিযোগ ছিল দূর সম্পর্কের এক মামার বিরুদ্ধে। চার বছর জেল খাটার পরে ওই মামলায় বেকসুর খালাস পেয়ে গেলেন তিনি। মঙ্গলবার কাটোয়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক শ্যামসুন্দর চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে বেকসুর খালাস পান মঙ্গলকোটের উজিরপুরের বাসিন্দা গোপাল বেসরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১৩ই জুলাই উজিরপুরে অভিযোগ হয় ওই ঘটনার। পাঁচ বছরের ওই শিশুকন্যার মা অভিযোগ করেন, ১২ই জুলাই সন্ধ্যায় বাড়ির বারান্দায় তাঁর দুই মেয়ে দিদার কাছে শুয়েছিল। ঘরে সাত মাসের ছেলেকে নিয়ে ছিলেন তিনি। অভিযোগ, রাত ৯টা নাগাদ তাঁর স্বামী ক্লাব থেকে বাড়ি ফিরে দেখেন পাঁচ বছরের বড় মেয়ে বারান্দায় নেই। রাতে খোঁজাখুঁজি করেও মেয়েকে পাননি তাঁরা। পরের দিন গ্রামের নতুনপুকুর পাড়ে গরু চরাতে গিয়ে নগ্ন অবস্থায় ওই নাবালিকার দেহ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। শিশুটির মা অভিযোগ করেন, মেয়েকে যতক্ষণ পাওয়া যাচ্ছিল না ততক্ষণ বাড়িতে ছিল না তাঁর পিসির ছেলে গোপাল বেসরাও। তিনিই জানান, আদতে গলসির বড়মুড়ের বাসিন্দা বছর পঁচিশের গোপাল উজিরপুরে তাঁদের বাড়িতেই খাওয়াদাওয়া করতেন। থাকতেন পাশের একটি ক্লাবে। পরে ১৪ জুলাই মৃতদেহের ময়না-তদন্তের পর ওই নাবালিকার বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করা হয় তাকে।
চার বছর ধরে চলা মামলায় নাবালিকার মা, বাবা, দিদা-সহ মোট ১৬ জন স্বাক্ষ্যপ্রদান করেন। ৯০ দিনের মাথায় চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী অফিসার প্রশান্ত ভান্ডারি। ঘটনার দিন ঘুমন্ত নাবালিকাকে তুলে আনতে গেলে সে জেগে যাওয়ায় তারই পরনের পোশাক পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বলে মাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দেন অভিযুক্ত গোপাল। এ দিন সরকারিপক্ষের আইনজীবি প্রসেনজিৎ সাহা জানান, প্রতক্ষ্যদর্শীর অভাবেই গোপাল খালাস পেল। যদিও আসামী পক্ষের আইনজীবি রবিশঙ্কর দাসের কথায়, ‘‘পুলিশি তদন্তে গাফিলতির জন্য বিনা অপরাধে সাজা খাটল ছেলেটা।’’ তাঁর যুক্তি, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে দেহ উদ্ধারের কমপক্ষে ৪৮ ঘন্টা আগে মৃত্যু হয়েছে নাবালিকার। অর্থাৎ মৃত্যুর সময় দাঁড়াচ্ছে ১২ ই জুলাই দুপুর ১২টা। তাঁর দাবি, পুলিশ ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের সাথে আলোচনা না করেই তদন্ত শেষ করেছে। এ দিন আদালতের বাইরে দাঁড়িয়ে গোপাল বেসরা বলেন, ‘‘রায়ে আমি খুশি।’’ যদিও ওই শিশুটির পরিবারের কেউই এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy