অনিয়ম: নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করেই শহরের সেতুগুলি দিয়ে চলে ভারী মালবাহী গাড়ি। ফাইল চিত্র
ইচ্ছেমতো বোঝাই করে দেদার ছুটছে বালি, পাথরের গাড়ি। কালনায় এসটিকেকে রোড ধরে রাতের অন্ধকারে বেআইনি ভাবে এই রকম পরিবহণ চলছে বলে অভিযোগ। প্রশাসনের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত ৮টার পরে কালনার বৈদ্যপুর মোড়ে দাঁড়ালেই বালি, পাথরের ট্রাকগুলি দেখা যায়। গভীর রাত পর্যন্ত এই পরিবহণ চলে। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, রাতের বেশির ভাগ ট্রাকে নির্মাণকাজের নানা সামগ্রী থাকে। অতিরিক্ত পাথর তুলে বিপ্পজনক ভাবে চলে বেশ কিছু গাড়ি। ভোরে বালি বোঝাই ট্রাক যাতায়াত করে।
বৈদ্যপুর মোড়ে একটি ট্র্যাফিক পোস্ট রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের দাবি, সেখানে বিভিন্ন গাড়ি দাঁড় করিয়ে পরীক্ষা করা হয়। নানা ত্রুটির জন্য চালকদের জরিমানাও করা হয়। কিন্তু, রাতে বালি, পাথরের ট্রাকগুলি নিয়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। শুধু কালনা নয়, নাদনঘাট, মন্তেশ্বর, পূর্বস্থলীর রাস্তা দিয়েও রাতে অবাধে ট্রাকগুলি যাতায়াত করে বলে অভিযোগ। গাড়ি চালকদের দাবি, রামপুরহাট, পাঁচামি, পাকুড়, নলহাটি থেকে পাথর বোঝাই করে ট্রাকগুলি কলকাতা-সহ নানা জায়গায় যায়। বালির ট্রাকগুলি জেলার নানা ঘাট থেকে যায়।
এই রাস্তা ধরে নিয়মিত যাতায়াত করা যাত্রীদের দাবি, দিনের বেলা পরিবহণ দফতর, মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকেরা অভিযান চালান। কিন্তু রাতে সেই নজরদারি থাকে না। তাই বালি, পাথরের কারবাবিরা এই সময়েই পরিবহণ করেন। এই কারবারের সঙ্গে জড়িত এক যুবকের দাবি, ‘‘নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট পরিমাণ পাথর, বালি নিয়ে গেলে লাভ হয় না। তাই বাড়তি মাল চাপাতে হয়। তবে তা পার করাতে অন্য কিছু খরচ করতে হয়।’’ গাড়ি পিছু নানা জায়গায় প্রতি মাসে কিছু টাকা দিতে হয় বলেও ওই যুবকের দাবি।
বালি-পাথরের ট্রাকের দৌরাত্ম্যে ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অনেকে। কালনার বাসিন্দা রমেশ সূত্রধর বলেন, ‘‘কেন অভিযান চালিয়ে রাতের অন্ধকারে এই পরিবহণ বন্ধ করা হচ্ছে না, জানি না!’’ প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, রাতে অভিযান চালানো কিছুটা ঝুঁকির। বছরখানেক আগে রাতে পরিবহণ দফতরের অভিযান চলাকালীন একটি গাড়ি থেকে গুলি পর্যন্ত ছোড়া হয়। আবার অনেক সময় অভিযানে গিয়ে দেখা যায়, কোনও ভাবে আগে থেকেই কারবারিরা খবর পেয়ে সতর্ক হয়ে গিয়েছে।
মহকুমা প্রশাসনের তরফে অবশ্য জানানো হয়, বেআইনি পরিবহণ বন্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। মোটা অঙ্কের জরিমানাও করা হয়। মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রাতে এই রকম পরিবহনের বিষয়টি জানা নেই। তবে প্রশাসনের তরফে কোনও অভিযানে সাহায্য চাওয়া হলে তা আমরা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy