Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Death

বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু শ্বশুরবাড়িতে

মৃতের দাদা রাজদীপ পাল স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেন। তাঁর দাবি, ঝিলিকের বাঁ হাতে বড় ক্ষত ছিল। শরীরের বিভিন্ন জায়গাতেও আঘাতের চিহ্ন ছিল। শ্বশুরবাড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই বোন আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ রাজদীপের। তার ভিত্তিতেই ইন্দ্রজিৎকে ধরা হয়। বাকি অভিযুক্তেরা পলাতক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৮ ০০:৩৮
Share: Save:

কেউ আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছেন। কারও মৃত্যু হয়েছে গলায় দড়ি দিয়ে। রবিবার রাত থেকে মঙ্গলবারের মধ্যে জেলায় একাধিক বধূ-মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

মেমারির নবপল্লিতে শ্বশুরবাড়িতে ঝিলিক পাল (২৯) নামে এক যুবতীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তাঁর স্বামীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। রবিবার গভীর রাতে পুলিশ ইন্দ্রজিৎ পাল নামে ওই তাঁর বাড়িই থেকেই ধরে। সোমবার তাঁকে বর্ধমান আদালতে তোলা হলে ১০ জুন পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম)। পুলিশ সূত্রের খবর, ঝিলিকের বাপের বাড়ি বর্ধমান শহরের কালনাগেটে। বছরচারেক আগে ইন্দ্রজিতের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বাপের বাড়ির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে ঝিলিকের অশান্তি বাধত। রবিবার সকালে ঝিলিকের ঝুলন্ত দেহ মেলে।

তাঁকে উদ্ধার করে মেমারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। মৃতের দাদা রাজদীপ পাল স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেন। তাঁর দাবি, ঝিলিকের বাঁ হাতে বড় ক্ষত ছিল। শরীরের বিভিন্ন জায়গাতেও আঘাতের চিহ্ন ছিল। শ্বশুরবাড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই বোন আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ রাজদীপের। তার ভিত্তিতেই ইন্দ্রজিৎকে ধরা হয়। বাকি অভিযুক্তেরা পলাতক।

একই ভাবে স্ত্রীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে বর্ধমান থানার কৃষ্ণপুর এলাকা থেকে শেখ ইমরান নামে এক যুবককে বর্ধমান মহিলা থানার পুলিশ সোমবার গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, গলসি থানার শিড়রাই গ্রামের চায়না খাতুনের সঙ্গে বছর তিনেক আগে ইমরানের বিয়ে হয়। বিয়েতে চাহিদা মতো পণ দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই বাপেরবাড়ি থেকে আরও টাকা আনার জন্য শ্বশুরবাড়ি চাপ দিত। টাকা দিতে না পাড়ায় চায়নার উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলত। গত ৯ মে কীটনাশক খান। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে তিনি মারা যান সোমবার। মৃতার মা জোলেমা বিবির অভিযোগের ভিত্তিতে ইমরান ধরা পড়ে। ইমরানের হয়ে এ দিন কোনও আইনজীবী দাঁড়াননি। ধৃতকে ১০ জুন পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শ্বশুরবাড়িতেই আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছেন আসমা কাজী (৩৮) নামে এক যুবতী। তাঁর বাড়ি গলসির পুরষায়। মৃতের ছেলে সাহিন কাজীর দাবি, মঙ্গলবার সকালে রান্না করার সময় কোনও ভাবে আগুন লেগে যায়। তাঁকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যালে নিয়ে আসা হলেও কিছুক্ষণ পরে আসমা মারা যান। তবে এতটি নিছক দুর্ঘটনা না পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে, তা পুলিশের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

গত ১৪ মে শ্বশুরবাড়িতে আগুন পুড়ে গিয়েছিলেন বৈশাখী বাগ (২২)। ওই দিনই তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। দু’সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে সোমবার বিকেলে মারা যান ওই তরুণী। তাঁর বাপের বাড়ি হাটগোবিন্দপুরে। পুলিশ সূত্রের খবর, বছর পাঁচেক আগে মণ্ডলগ্রামে বৈশাখীর বিয়ে হয়। তিনি। পারিবারিক অশান্তির জেরেই বৈশাখী আত্মঘাতী হয়েছেন বলে পুলিশের অনুমান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Bride Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE