n গ্রামে উপেন্দ্রনাথের মূর্তি। নিজস্ব চিত্র
করোনার টিকা কবে আসবে, সে নিয়ে কৌতূহল এখন অনেকেরই। এমন পরিস্থিতিতে পূর্বস্থলীতে মানুষের মুখে ফিরছে এক বিজ্ঞানীর নাম। এক সময়ে কালাজ্বরের ওষুধ আবিষ্কার করে স্বস্তি এনে দিয়েছিলেন বাঙালি বিজ্ঞানী উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী। তাঁর পৈতৃক বাসভূমি পূর্বস্থলী ২ ব্লকে সরডাঙায়। সেখানে তাঁর নামে পাকা রাস্তা এবং ভবন তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে পঞ্চায়েত সমিতি। পূর্বস্থলী ২ পঞ্চায়েত সমিতির দাবি, সে জন্য প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা খরচ করা হবে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিজ্ঞানীর বাবা নীলমণি ব্রহ্মচারী পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। তার নামেই পূর্বস্থলীর চুপি এলাকায় রয়েছে নীলমণি ব্রহ্মচারী ইনস্টিটিউশন। রেলে চাকরির সুবাদে তিনি থাকতেন বিহারে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, সরডাঙা গ্রামে এক সময়ে প্রচুর ভূসম্পত্তি ছিল ব্রহ্মচারী পরিবারের। তার বেশিরভাগই এখন নেই। তবে এখনও ওই পরিবারের একটি মন্দির রয়েছে। উপেন্দ্রনাথের নামে একটি ক্লাব রয়েছে এলাকায়। ২০০৮ সালে বিজ্ঞানীর একটি আবক্ষ মূর্তি বসানো হয় ক্লাবের সামনে।
পঞ্চায়েত সমিতি জানায়, সরডাঙা গ্রামে উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী ও তাঁর পরিবারের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। এলাকার মানুষ চান, কালাজ্বরের ওষুধ আবিষ্কারকের গ্রামে তাঁর স্মৃতিতে কিছু গড়ে উঠুক। ইতিমধ্যে গ্রামের কিছু মানুষ সে জন্য তিন শতক জমিও দিয়েছেন প্রশাসনকে। পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারা জানান, এলাকায় ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে একটি পাকা রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। সেটির নামকরণ হবে বিজ্ঞানীর নামে। এ ছাড়া, যে জমিটি বাসিন্দারা সরকারকে দিয়েছেন, সেখানে তাঁর নামেই একটি ভবন তৈরি করা হবে। বিজ্ঞানীর ব্যবহৃত নানা জিনিসপত্র সেখানে রাখার চেষ্টা হবে, যাতে নতুন প্রজন্ম তা দেখে ইতিহাস মনে রাখতে পারে।
পূর্বস্থলী ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরডাঙা গ্রামের সঙ্গে উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারীর স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। এলাকার মানুষও দীর্ঘদিন ধরে চাইছিলেন, এখানে কিছু করা হোক। কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।’’ তিনি জানান, এক সময়ে সকলকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দেওয়া কালাজ্বরের ওষুধ আবিষ্কার করে মানুষকে রোগমুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন উপেন্দ্রনাথবাবু, তা এলাকাবাসীর কাছে গর্বের। করোনা-পরিস্থিতিতে তাঁর সেই কীর্তি আরও বেশি করে স্মরণ করছেন সরডাঙার মানুষ। তাঁকে সম্মান জানাতেই পঞ্চায়েত সমিতি এমন পরিকল্পনা নিয়েছে। পূর্বস্থলী ২ বিডিও সৌমিক বাগচি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতির পরিকল্পনা শুনেছি। বিশদে খোঁজ নিচ্ছি। পরিকল্পনাটি রূপায়ণ হলে খুব ভাল কাজ হবে।’’
স্থানীয় বাসিন্দা তথা পঞ্চায়েতের কর্মী পীযূষ দে বলেন, ‘‘সরডাঙা গ্রামে যাতে এ ধরনের উদ্যোগ হয়, দীর্ঘদিন ধরেই আমরা সে চেষ্টা করছি। পঞ্চায়েত সমিতির পরিকল্পনায় এলাকার মানুষ খুশি।’’ ব্রহ্মচারী পরিবারের এক সদস্য সুনীল ব্রহ্মচারীর কথায়, ‘‘আমাদের পরিবারের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে সরডাঙা গ্রামে। সরকারের তরফে পরিবারের কৃতীর নামে কিছু হলে, আমরাও খুশি হব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy