Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

হামলা, পাল্টা হামলায় তপ্ত আকন্দারা

গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এলাকার এক তৃণমূল নেতা বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীকে নিয়ে অভিযুক্ত যুবকের বাড়িতে চড়াও হন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৯ ০১:০২
Share: Save:

তৃণমূলের এক নেতার বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এলাকায় দাপাদাপি এবং প্রধানের বাড়িতে পাল্টা হামলার অভিযোগে তেতে উঠল কাঁকসার মলানদিঘি পঞ্চায়েতের আকন্দারা গ্রাম। সোমবার রাতে পুলিশের বড় বাহিনী, কমব্যাট ফোর্স এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মঙ্গলবারও গ্রামে টহল চলে। তবে কোনও পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত রবিবার। এলাকার কিছু বাসিন্দার অভিযোগ, সে দিন গ্রামের এক স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে এলাকারই এক যুবক। ঘটনার পরে মেয়েটির পরিবারের তরফে অভিযোগও করা হয় কাঁকসা থানায়। ওই যুবককে আটক করে পুলিশ। তখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও সোমবার ফের এলাকা অশান্ত হয়ে ওঠে।

গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এলাকার এক তৃণমূল নেতা বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীকে নিয়ে অভিযুক্ত যুবকের বাড়িতে চড়াও হন। ওই যুবকের আত্মীয়দের বাড়িতেও যান ওই নেতা ও তাঁর দলবল। গ্রামের বাসিন্দা পূর্ণিমা হাজরা, চায়না হাজরাদের অভিযোগ, ‘‘অভিযুক্তকে পুলিশ আটক করেছে। তার পরেও এই হামলার কারণ কী? শুধু বাড়িতে হামলা চালানো নয়, কয়েকজনকে মারধরও করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁদের।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেলে এই ঘটনার পরে রাত গড়াতেই এলাকার কিছু লোকজন চড়াও হয় মলানদিঘি পঞ্চায়েতের প্রধান পীযূষ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে। প্রধানের অভিযোগ, তাঁর বাড়ির দরজা-জানলা ভাঙা হয়। বাড়ির উঠোনে থাকা গাড়ি, জলের পাম্পও ভাঙচুর করা হয়। পরিবারের কয়েকজনকে মারধরও করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন পীযূষবাবু। রাস্তার মোড়ের কাছে তৃণমূলের কার্যালয়েও ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ।

পীযূষবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘ঘণ্টাখানেক ধরে বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। পরে পুলিশ এলাকায় আসায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এই ঘটনার পিছনে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা জড়িত।’’ যদিও গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, হামলাকারীরাও তৃণমূলের সমর্থক। গ্রামের ওই তৃণমূল নেতা বেশ কয়েক মাস ধরেই বাসিন্দাদের নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করতেন বলে অভিযোগ। বিজেপি কর্মী সন্দীপ ঘোষ খুনে জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে মাসখানেক জেল-হাজতে থাকার পরে এখন জামিনে মুক্ত। তাঁর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়েই কিছু বাসিন্দা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে দাবি ওই গ্রামবাসীদের।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার পর থেকে পলাতক ওই নেতা। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। এক জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ দু’পক্ষের দশ জন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

তৃণমূল জেলা (শিল্পাঞ্চল) কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য অভিযোগ, ‘‘বিজেপি মানুষকে ভুল বুঝিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রশাসন যথাযথ তদন্ত করলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’ কাঁকসার বিজেপি নেতা রমন শর্মার পাল্টা দাবি, ‘‘এই ঘটনা তৃণমূলের প্রতি মানুষের ক্ষোভের প্রকাশ। বিজেপি কোনও ভাবে এর সঙ্গে জড়িত নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Violence Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE