Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

জেলা জুড়ে পালিত হল বিবেক চেতনা উৎসব

এ দিন দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে যুব কল্যাণ দফতরের সহযোগিতায় এবং দুর্গাপুর পুরসভার উদ্যোগে আয়োজিত হয় ‘বিবেক চেতনা উৎসব’। উপস্থিত ছিলেন মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা, পুরসভার কমিশনার অমিতাভ দাস, মেয়র পারিষদরা।

শোভাযাত্রা: দুর্গাপুরের সগরভাঙায়। নিজস্ব চিত্র

শোভাযাত্রা: দুর্গাপুরের সগরভাঙায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৪৩
Share: Save:

নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুক্রবার পশ্চিম বর্ধমান জেলার বিভিন্ন প্রান্তে পালিত হল স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন।

এ দিন দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে যুব কল্যাণ দফতরের সহযোগিতায় এবং দুর্গাপুর পুরসভার উদ্যোগে আয়োজিত হয় ‘বিবেক চেতনা উৎসব’। উপস্থিত ছিলেন মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা, পুরসভার কমিশনার অমিতাভ দাস, মেয়র পারিষদরা। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের কৃতীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতে স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডে দুর্গাপুর বিবেকানন্দ সাংস্কৃতিক মঞ্চের পক্ষ থেকে খোলা জায়গায় শুয়ে থাকা মানুষজনদের এবং ‘দুর্গাপুর বিবেকানন্দ ভাব সমাজে’র পক্ষ থেকে গ্রামীণ দুঃস্থ মানুষজনকে সাহায্য করা হয়। রাগাশ্রয়ী ও ভক্তিমূলক সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়াও পরিবেশিত হয় নাটক ‘চম্পকনগরীর কান্না’। ডিপিএল টাউনশিপের বি-জোন আদিবেদী’র পক্ষ থেকে টাউনশিপ থেকে বাঁকুড়ার রামহরিপুরের শ্রীরামকৃষ্ণ সেবাশ্রম পর্যন্ত সাইকেল র‌্যালির আয়োজন করা হয়। উদ্যোক্তাদের পক্ষে উমাপদ দাস জানিয়েছেন, দিনটি কেন্দ্রীয় সরকার ‘যুব দিবস’ হিসেবে পালন করার কথা ঘোষণা করেছে। সে কথা মাথায় রেখে স্বামীজির বাণীপ্রচারের মাধ্যমে ১৬০টি সাইকেলের র‌্যালি বের হয়। এর সূচনা করেন রামহরিপুর রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী মুক্তিপ্রদানন্দ। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে ম্যারাথন দৌড় হয় সগরভাঙা থেকে। মুচিপাড়া হয়ে বিধাননগরে শেষ হয় এই দৌড়। পাশাপাশি দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি পালিত হয়।

সগরভাঙা তরুণ সঙ্ঘের পক্ষ থেকে সগরভাঙা চিলড্রেন পার্কে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। দুর্গাপুর শাস্ত্রীয়, উপশাস্ত্রীয় সমাজের পক্ষ থেকে ডিএসপি টাউনশিপের বি-জোনের বিধানভবনে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। ৬টি সাংস্কৃতিক সংস্থার শিল্পীরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। দিনটি উপলক্ষে ভিড়িঙ্গি কালীবাড়ি কর্তৃপক্ষের তরফে সগরভাঙা কুষ্ঠকলোনির বাসিন্দা ও দুঃস্থ মানুষজনকে সাহাস্য করা হয়।

দুর্গাপুর ছাড়াও পাণ্ডবেশ্বর, জামুড়িয়া, চিত্তরঞ্জন, আসানসোলেও এই দিনটি মহাসমারোহে পালিত হয়। পাণ্ডবেশ্বরে স্বামী বিবেকানন্দ জীবন ও বাণীচর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সংস্থার সম্পাদক জীতেন চট্টোপাধ্যায় জানান, পাণ্ডবেশ্বর এরিয়া মোড়ে স্বামীজির আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দিরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বসেআঁকো, আবৃত্তি, ক্যুইজ প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়েছিল। বুদবুদের আমরা ক’জন স্পোর্টিং ক্লাবের পক্ষ থেকে বুদবুদ গ্রামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। একই সঙ্গে ভগিনী নিবেদিতার জন্ম সার্ধশতবার্ষিকীও পালন করা হয় বলে জানিয়েছেন ক্লাবের সম্পাদক নীলোৎপল পাল। অন্ডাল স্বামী বিবেকানন্দ ভাব প্রচার সমিতি বিবেকানন্দর জন্মদিন উপলক্ষে মিছিলের আয়োজন করে। এ দিন অন্ডাল মোড় থেকে মিছিল শুরু হয়ে শেষ হয় অন্ডাল ডাকঘর মোড়ে। এলাকার পড়ুয়া-সহ সবস্তরের বাসিন্দারা মিছিলে সামিল হন।

এ ছাড়া রানিগঞ্জে পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ উপলক্ষে ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে বিবেকানন্দর প্রতিকৃতি নিয়ে একটি মিছিলের আয়োজন করা হয়। শিশুবাগান থেকে মিছিল শুরু হয়ে শেষ হয় রানিগঞ্জবাজারে। এলাকার পড়ুয়ারা সামিল হয়েছিল। জামুড়িয়ার চাঁদা মোড়ে একটি বেসরকারি স্কুল বিজ্ঞান বিষয়ক একটি প্রদর্শনী আয়োজন করেছিল। পড়ুয়ারা বিজ্ঞান বিষয়ক নানা প্রদর্শনীতে যোগ দেয়। চিত্তরঞ্জনের রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ পাঠচক্রের উদ্যোগে বিবেকানন্দর জন্মদিন উপলক্ষে দুঃস্থদের সাহায্য করা হয়। পাশাপাশি বর্তমান সমাজে বিবেকানন্দর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনাচক্র আয়োজিত হয়। ঝাড়খণ্ডের জামতারা রামকৃষ্ণ মঠের অধ্যক্ষ সনকানন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পিছিয়ে নেই আসানসোলও। এ দিন সকালে আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের উদ্যোগে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। আসানসোলের বিএনআর মোড় থেকে শুরু হয়ে রামকৃষ্ণ মিশন স্কুল পর্যন্ত যাওয়া এ দিনের শোভাযাত্রায় যোগ দেন আশ্রমের সম্পাদক স্বামী সোমাত্মানন্দ, রাজ্যের মন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটক প্রমুখ। আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন স্কুল-সহ শিল্পাঞ্চলের একাধিক স্কুলের পড়ুয়ারাও এ দিনের শোভাযাত্রায় যোগ দেয়।

এ দিন পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের উদ্যোগে রেলের বিবেকানন্দ ইন্সস্টিটিউটের প্রেক্ষাগৃহে দিনটি মর্যাদায় পালিত হয়েছে। স্বামীজির মূর্তি মাল্যদান করেন আসানসোলের ডিআরএম প্রশান্তকুমার মিশ্র। উপস্থিত ছিলেন এডিআরএম আরকে বার্নোবাল। ভারত স্কাউটস অ্যান্ড গাইডের আসানসোল জেলা সংগঠনের উদ্যোগেও একটি শোভাযাত্রা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE