Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Lockdown

‘ঘনিষ্ঠদের’ কুপন, দুর্গাপুর পঞ্চায়েতে তালা ঝোলালেন পরিযায়ীরা, সরব উপপ্রধানও

কয়েকদিন আগে গলসির জয়কৃষ্ণপুরে পরিযায়ীদের ‘ফুড কুপন’ দেওয়া নিয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছিল।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২০ ০২:৪৮
Share: Save:

পরিযায়ী শ্রমিকদের ‘ফুড কুপন’ নিয়ে বেনিয়মের অভিযোগ তুলে পূর্ব বর্ধমানের মেমারির চোতখণ্ড গ্রামে দুর্গাপুর পঞ্চায়েত অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন কয়েকজন বাসিন্দা। বিক্ষোভের জেরে সোমবার দুপুরে জিটি রোড বেশ কিছুক্ষণ অবরুদ্ধ হয়ে যায়। যাত্রীবাহী, পণ্যবাহী গাড়ি আটকে পড়ে। প্রধানকে না পেয়ে মূল দরজায় তালাও ঝোলান বিক্ষোভকারীরা। পরে মেমারি থানার পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে তালা খোলার ব্যবস্থা করে।

কয়েকদিন আগে গলসির জয়কৃষ্ণপুরে পরিযায়ীদের ‘ফুড কুপন’ দেওয়া নিয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছিল। রবিবার ভাতারের বামশোর গ্রামের পরিযায়ী শ্রমিকেরাও রেশন থেকে সরকার নির্ধারিত খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছেন না বলে বাদশাহী রোড অবরোধ করেন। সোমবার মেমারির দুর্গাপুর পঞ্চায়েতে পরিযায়ীদের ‘ফুড কুপন’ বিলি করা নিয়ে নাম জড়ায় প্রধানের। ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধানও প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন।

তৃণমূলের উপপ্রধান নিতাই ঘোষের অভিযোগ, “সবচেয়ে বেশি বেনিয়ম আলিপুর ও সোমনাই গ্রামে। সে জন্যই মানুষ পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। কারও সঙ্গে আলোচনা না করে ‘ফুড কুপন’ বিলি হয়েছে। প্রধান ও তাঁর এক সহযোগী পঞ্চায়েত সদস্য স্বজনপোষণ করে ওই ‘ফুড কুপন’ বিলি করেছেন।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘এ দিন যাঁরা পঞ্চায়েত ঘেরাও করেন, তাঁরা প্রধানকে না পেয়ে তালা দিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁদের বলেছি, একটি তালিকা করে আমাকে দিলে আমি ব্লক ও খাদ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলব। দেখি, কতটা, কী করতে পারি!’’

জেলাশাসকের কাছেও প্রধানের বিরুদ্ধে আমপানের ত্রাণ বিলি, বাংলা আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন উপপ্রধান ও কয়েকজন সদস্য। তাঁদের দাবি, কোন ঠিকাদারকে কাজ দেওয়া হবে, উন্নয়নের কাজ কী ভাবে হবে, তা নিয়ে আলোচনা করেন না প্রধান। তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর কাছেও প্রধান দলবিরোধী কাজ করে হেনস্থা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন দলের একাংশ।

বিক্ষোভকারীদের মূল অভিযোগ, যাঁরা নিভৃতবাস কাটিয়ে বাড়িতে বসে রয়েছেন, তাঁরা ‘ফুড কুপন’ পাননি। অথচ, প্রধান-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল সমর্থকদের কাছে ‘ফুড কুপন’ চলে গিয়েছে। বেচা হুঁই, শেফালি বাগদের দাবি, “পরিযায়ী শ্রমিক নয়, এমন লোক কুপন দেখিয়ে রেশনে ১০ কেজি চাল নিচ্ছে। আর আমাদের বাড়ির লোকেরা পরিযায়ী শ্রমিক হয়েও ‘ফুড কুপন’ পায়নি।’’

তবে প্রধান শিখা রায় ও সহযোগী পঞ্চায়েত সদস্যের ফোন বন্ধ থাকায় বহু চেষ্টা করেও এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। মেমারি ১ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি মধুসূদন ভট্টাচার্য বলেন, “ওই পঞ্চায়েতে একটা ঘটনার কথা শুনেছি। তবে ঠিক কী হয়েছে জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’

বিডিও ( মেমারি ১) বিপুল কুমার মণ্ডলের আবার দাবি, “পরিযায়ীরা ‘ফুড কুপন’ নিয়ে সমস্যার জন্য দেখা করতে গিয়েছিলেন কি না, জানি না। তবে জব-কার্ডের আবেদন করার জন্য গিয়েছিলেন বলে শুনেছি। কিন্তু প্রধান সেই সময়ে ছিলেন না।’’

এ দিন সন্ধ্যায় মেমারির আমাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজড়া গ্রামেও ‘ফুড কুপন’ না পাওয়ার প্রধানের বাড়ির সামনে ঘেরাও-বিক্ষোভ চলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Lockdown Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE