Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

খামার বন্ধ, বাজারে চড়ছে মুরগির মাংসের দর

দেশে ও রাজ্যে করোনা-সংক্রমণের শুরুর দিকে কাঁকসায় একশো টাকায় তিনটি গোটা মুরগি মিলছিল বলে জানান ক্রেতারা। কিন্তু মার্চের শেষ থেকে আচমকা দর বাড়তে শুরু করে।

বন্ধ কাঁকসার মুরগি খামার। নিজস্ব চিত্র

বন্ধ কাঁকসার মুরগি খামার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২০ ০০:৫৯
Share: Save:

‘লকডাউন’-এর দিন যত গড়াচ্ছে, তত পাল্লা দিয়ে চড়ছে ‘ব্রয়লার’ মুরগির দর। এমনটাই অভিযোগ কাঁকসার নানা এলাকার ক্রেতাদের। তবে বিক্রেতাদের দাবি, জোগান কমে যাওয়ার কারণে দর বাড়ছে।

দেশে ও রাজ্যে করোনা-সংক্রমণের শুরুর দিকে কাঁকসায় একশো টাকায় তিনটি গোটা মুরগি মিলছিল বলে জানান ক্রেতারা। গ্রামে-গ্রামে গাড়ি করে মুরগি বিক্রি করা হচ্ছে, এ ছবিও দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু মার্চের শেষ থেকে আচমকা দর বাড়তে শুরু করে। অনাদি মণ্ডল, তপন ঘোষ-সহ নানা এলাকার ক্রেতারা জানান, পানাগড় বাজার, মিনিবাজার, রেলপাড়-সহ কাঁকসার নানা এলাকায় মুরগির মাংস ১৮০ থেকে ২২০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরো বিক্রেতারা জানান, কাঁকসা ব্লকে মুরগির জোগান কম থাকায় বাইরে থেকে আনতে হচ্ছে। ফলে, দর বাড়ছে। স্থানীয় বিক্রেতা বাচ্চু গড়াই বলেন, ‘‘বীরভূম থেকে মুরগি এনেছি। যে ভাবে দর বাড়ছে, তাতে কত দিন দোকান খোলা রাখতে পারব জানি না।’’

কিন্তু কাঁকসায় মুরগির জোগান কম কেন?

বিভিন্ন মুরগি প্রতিপালকেরা জানান, করোনা-সংক্রমণ পর্বের একেবারে প্রথম দিকে ‘গুজব’ ছড়ায়, মুরগির মাংস থেকে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। তখন মুরগির মাংস অনেকেই কিনছিলেন না। ফলে, কম দরে মুরগি বিক্রি হয়েছে। এখন দর চড়ার কয়েকটি কারণ জানিয়েছেন তাঁরা—

প্রথমত, এখন অনেকে পরিবহণ সমস্যা-সহ নানা কারণে মুরগি প্রতিপালনের কাজ করছেন না। দ্বিতীয়ত, এলাকার যাঁদের মুরগির খামার রয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। এমনই একটি বেসরকারি সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকসা ব্লকে ৪০ দিনে প্রায় আড়াই লক্ষ মুরগি প্রতিপালন করা হয়। মার্চের শেষ থেকে বহু খামারই সব মুরগি বিক্রি করে দিয়েছে। নতুন করে প্রতিপালন হয়নি। তৃতীয়ত, এই মুহূর্তে খামারগুলিতে পৌনে দু’লাখের মতো মুরগি প্রতিপালন করা হচ্ছে। কিন্তু, ব্রয়লার মুরগি বাজারে আনতে অন্তত ৪০ দিন সময় লাগে। ফলে, এই মুহূর্তে যে মুরগিগুলি খামারে রয়েছে, সেগুলি বাজারে আসতে সময় লাগবে।

তবে জোগানে টানের অন্যতম কারণ ‘গুজব’, দাবি মুরগি প্রতিপালকদের সংগঠন এবং প্রশাসনের। ‘পশ্চিম বর্ধমান জেলা পোলট্রি ফেডারেশন’-এর সম্পাদক অখিল সাহা বলেন, ‘‘গুজবের জন্য বহু চাষি খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। তাই জোগানের সমস্যা।’’ জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের উপ-অধিকর্তা তপন রায় বলেন, ‘‘গুজবের জেরে অনেকেই মুরগি মাংস খাওয়া থেকে বিরত ছিলেন। তাই লোকসানের ভয়ে বহু মুরগি প্রতিপালক খামার বন্ধ করেন। তাই সমস্যা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chicken West Bengal Lockdown Kanksa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE