জাহানারা বিবি। নিজস্ব চিত্র
স্বামীকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে আদালত। তবে তাঁর মন মানছে না। ‘চেন-খুনি’ কামরুজ্জামান সরকারের স্ত্রী জাহানারা বিবি সোমবার দাবি করেন, ‘‘বিশ্বাস করি না, ও মানুষ খুন করতে পারে। ওকে রাস্তা থেকে ধরে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়েছে পুলিশ।’’
তিন ছেলে মেয়ে এবং বৃদ্ধা মাকে নিয়ে ১১টার মধ্যেই কালনা আদালতে হাজির হয়েছিলেন জাহানারা। স্বামী গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে কতখানি হয়রানির মুখোমুখি হতে হচ্ছে প্রতিদিন, জানান সে কথা। তাঁর দাবি, সংসারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি জেলে। কোনও রকমে কাগজ কুড়িয়ে, বিড়ি বেঁধে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। ছেলেমেয়েরা স্কুলে পড়লেও সরকারি সাহায্য পান না। কারণ, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরি করা যায়নি। আধার কার্ড, রেশন কার্ডও নেই।
কেন? জাহানারার দাবি, কামরুজ্জামানের সমস্ত পরিচয়পত্র পুলিশের কাছে জমা রয়েছে। তাঁর নিজের রেশন কার্ড রয়েছে শ্বশুরবাড়ি, মুর্শিদাবাদের ঠিকানায়। ফলে, ছেলেমেয়ের কোনও কার্ড বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরি করাতে পারেননি তিনি। ‘লকডাউন’-এর তিন মাস ধরে সরকার বিনা পয়সায় রেশনের জিনিস দিলেও সে সব চাল, আটাও পাননি, দাবি তাঁর।
জাহানারার কথায়, ‘‘অনেকেই বলেন আমার স্বামী নানা জায়গা থেকে প্রচুর জিনিস চুরি করে এনেছে। কিন্তু আমার ঘরে কিছুই নেই। থাকলে এই দুরবস্থায় পড়তে হতো না আমাদের।’’ মেয়ের পাশে দাঁড়িয়ে বৃদ্ধা সাকিল বেওয়া বলেন, ‘‘জামাইকে গ্রেফতার করার পরেও বারবার পুলিশ এসেছে। প্রায় একঘরে হয়ে গিয়েছিলাম। কোনও রকমে চেয়ে-চিন্তে দিন কাটিয়েছি। ছোট নাতি ভাল স্কুলে পড়ত। ওকে সেখানে পড়ানোর সামর্থ্যও আমাদের নেই।’’
বাঁচার লড়াই এতটাই কঠিন যে উচ্চ আদালতে যাবেন কি না, বাকি মামলাগুলি নিয়ে কী ভাবনা রয়েছে, সে সবের কোনও উত্তর দিতে পারেননি জাহানারা। তবে তাঁদের আইনজীবী অরিন্দম বাজপেয়ীর দাবি, ‘‘যে মামলায় কামরুজ্জামানের সাজা হয়েছে, সেখানে নানা ফাঁক-ফোকর রয়েছে। উচ্চ আদালতে সবই তুলে ধরা হবে।’’
জাহানারা শুধু দাবি করেন, ‘‘কোনও প্রমাণ নেই আমার স্বামীর বিরুদ্ধে। ও কোথাও কখনও রাতে থাকেনি। ওকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy