Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

আয়োজন কয়েক ঘণ্টায়, ঘুম থেকে তুলে বিয়ের খবর যুবককে

জয়দেব তখন বাড়িতে ঘুমোচ্ছিলেন। ঘুম থেকে তুলে ঘটনার কথা জানিয়ে বলা হয়, বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হবে তাঁকে।

হাসপুকুরে ব্যবসায়ীর বাড়ির সামনে বাঁধা হচ্ছে প্যান্ডেল। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল

হাসপুকুরে ব্যবসায়ীর বাড়ির সামনে বাঁধা হচ্ছে প্যান্ডেল। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
কালনা শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৫৪
Share: Save:

শুক্রবারও বাড়ির সামনের জায়গাটা ছিল ফাঁকা। শনিবার সেখানে তড়িঘড়ি বাঁধা হয়েছে প্যান্ডেল। বাড়ির কর্তা নারায়ণ পাল একের পর এক ফোন করে চলেছেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন আত্মীয়দের। বছর পঁয়ষট্টির ধানচালের ব্যবসায়ী নারায়ণবাবু একা নন, গোটা পরিবার ব্যস্ত অনুষ্ঠানের আয়োজনে। কালনার পূর্ব সাতগাছিয়ার হাসপুকুরে গোটা ঘটনায় বিস্ময়ের রেশ কাটছে না প্রতিবেশীদের মধ্যেও।

নারায়ণবাবু জানান, শুক্রবার সকালে এলাকার ধানচালের ব্যবসায়ী গোবিন্দ পাল ও হরেকৃষ্ণ মণ্ডল তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁরা জানান, কালনার কাঠিগঙ্গার ব্যবসায়ী অসীম কুণ্ডু সমস্যায় পড়েছেন। তাঁর মেয়ে সায়নীর বিয়ের কথা ছিল এ দিন। কিন্তু বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পাত্রপক্ষ জানিয়েছে, তারা বিয়েতে রাজি নয়। শেষ মুহূর্তে এমন খবর শুনে ভেঙে পড়েছেন অসীমবাবু। গোবিন্দবাবুরা নারায়ণবাবুর কাছে তাঁর ছোট ছেলে জয়দেবের সঙ্গে অসীমবাবুর মেয়ের বিয়ে দেওয়া সম্ভব কি না, তা বিবেচনা করার অনুরোধ জানান।

নারায়ণবাবু জানান, আচমকা এমন প্রস্তবে কিছুটা হতচকিত হয়ে পড়েন তিনি। হাতে এত কম সময়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সব আয়োজন করতে হবে। কিন্তু শেষমেশ ঠিক করেন, তিনি অমত করবেন না। জয়দেব তখন বাড়িতে ঘুমোচ্ছিলেন। ঘুম থেকে তুলে ঘটনার কথা জানিয়ে বলা হয়, বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হবে তাঁকে। খানিক পরেই পাত্রীর বাড়িতে যান ব্যবসায়ী জয়দেব। বিয়েতে মত দেন পাত্রীও। ফের শুরু হয়ে যায় বিয়ের তোড়জোড়।রাতে কাঠিগঙ্গায় বিয়ের অনুষ্ঠান হয় নির্বিঘ্নে। শনিবার বিকেল পর্যন্ত চলে বিয়ের নানা অনুষ্ঠান।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

নারায়ণবাবু বলেন, ‘‘বাড়ির ছোট ছেলের বিয়েতে খানিক ধূমধাম না হলে মানায় না। কৃষ্ণনগর, কলকাতা, নবদ্বীপ, হাঁসখালি, বগুলা-সহ নানা জায়গায় আত্মীয়েরা রয়েছেন। তাঁদের ফোনেই নিমন্ত্রণ সারছি। সব মিলিয়ে সোমবার প্রীতিভোজে ছ’শোর বেশি নিমন্ত্রিত আসবেন।’’ তিনি জানান, আত্মীয়েরা বিয়ের খবর শুনে হকচকিয়ে যাচ্ছেন। দ্রুত সব কিছু আয়োজন করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। নারায়ণবাবুর বড় ছেলে দিলীপ বলেন, ‘‘সময় বেশি ছিল না। তার মধ্যেই ভাইকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আমরা গোটা পরিবার ওদের পাশে রয়েছি।’’

ব্যবসায়ী হরেকৃষ্ণবাবু কালনা ২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষও। তিনি বলেন, ‘‘কাঠিগঙ্গার পরিবার শেষ মুহূর্তে সমস্যায় পড়ে গিয়েছিল। ভেঙে পড়েছিলেন অসীমবাবু। জয়দেব রাজি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বিয়ে ভাল ভাবেই মিটেছে।’’ স্বস্তি ফিরেছে কুণ্ডু বাড়িতেও। অসীমবাবু বলেন, ‘‘প্রথমে কিছুটা ভেঙে পড়েছিলাম। পরে পরিচিতদের মাধ্যমেই সন্ধান পাই জয়দেবের। আমরা পরিবারের সকলেই খুশি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Marriage Bride-Groom
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE