রোজই ভোর ভোর ঝাউডাঙা ঘাটে এসে দোকান খুলি। আশপাশে বহু গোয়ালার বাস থেকেই ভোর থেকেই বিক্রিবাটা শুরু হয়ে যায়। বুধবারও ৬টা বাজার একটু পরেই ঘাটে এসে যাই। দোকান খুলতে খুলতে আরও মিনিট দশেক। তখনও ঘন কুয়াশায় পাশের মানুষটাকেই ঠিকমতো ঠাহর করা যাচ্ছিল না। আচমকা মাঝনদী থেকে জলে ভারি কিছু পড়ে যাওয়ার শব্দ পাই। একেবারে নদীর ধারে এসে কুয়াশায় চোখ সইয়ে নিয়ে দেখি, মাঝনদীতে বড় একটা জাহাজ। তার কয়েক হাত দূরে একটু আগে ছেড়ে যাওয়া নৌকাটা ঘুরপাক খাচ্ছে। কী করব বুঝে ওঠার আগেই উল্টে যায় নৌকাটি। মাঝি, যাত্রীরা সবাই হাবুডুবু খেতে থাকে। নৌকাতেই কয়েকটা মাদুরের গাঁটরি ছিল। সেগুলো ধরেই কোনওরকমে সাঁতরাতে শুরু করে ওরা। চেঁচিয়ে কিছু বলছিলও। কিন্তু হাওয়ায় তোড়ে কিছুই শোনা যাচ্ছিল না। একে একে দু’জন পারে উঠে আসে। মাঝিকেও দেখা যায়। কিন্তু আর একটি ছেলে তখনও খাবি খাচ্ছিল। এই তিন জনকে ধাতস্থ করতে করতেই সেই ছেলেটিও পারে পৌঁছয়। পাড়ে এসেই জ্ঞান হারায় সে। ধরে তুলতেই বুকটা কেঁপে ওঠে আমার। এ তো আমার ভাই, নিমাই। ছুটে গিয়ে দেখি নিমাইয়ের বুকে, পেটে আঘাত লেগেছে। কথাও বলতে পারছে না। সবাইকে নিয়ে যাওয়া হয় পাশের বাড়িতে। সেঁক দিয়ে একটু সুস্থ করে ভাইকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আর একটু হলে জাহাজের ধাক্কায় বেঘোরে মারা যেত ছেলেটা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy