Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

কাটোয়ায় নৌকা থেকে ঝাঁপ, উদ্ধারে তিন মাঝি

নৌকা থেকে ঝাঁপ দিলেন যাত্রী। আবারও তাঁকে উদ্ধার করে আনলেন মাঝিরা। কাটোয়া ফেরিঘাটে ফের এমন ঘটল শনিবার। গত কয়েক মাসে এই ধরনের ঘটনা ঘটল বার চারেক।

মহিলাকে উদ্ধার করেন এই তিন মাঝি। নিজস্ব চিত্র

মহিলাকে উদ্ধার করেন এই তিন মাঝি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৮ ০১:৪৪
Share: Save:

আরও এক বার নৌকা থেকে ঝাঁপ দিলেন যাত্রী। আবারও তাঁকে উদ্ধার করে আনলেন মাঝিরা। কাটোয়া ফেরিঘাটে ফের এমন ঘটল শনিবার। গত কয়েক মাসে এই ধরনের ঘটনা ঘটল বার চারেক।

কাটোয়ার বল্লভপাড়া ফেরিঘাটে সকাল ৮টা নাগাদ প্রতিদিনের মতোই বেশ ভিড়। কাটোয়া থেকে নৌকায় উঠেছিলেন বছর চল্লিশের মহিলা। যাত্রীরা জানান, নৌকা ছাড়ার পরে জেটি পেরোতেই আচমকা জলে কিছু পড়ার আওয়াজ পাওয়া যায়। দেখা যায়, জলে হাবুডুবু খাচ্ছেন ওই মহিলা। তিন মাঝি নরোত্তম রাজোয়ার, বিশ্বনাথ হালদার ও সূর্যকান্ত হালদার তাঁর হাতের দিকে টিউব ছুড়ে দেন। যাত্রীদের দাবি, তিনি তা ধরেননি। তখনই গঙ্গায় ঝাঁপ দেন বিশ্বনাথ ও নরোত্তম। বছর ছাব্বিশের বিশ্বনাথ জল থেকে টেনে মহিলাকে ঘাটে তোলেন। ততক্ষণে জ্ঞান হারিয়েছেন তিনি।

মাঝিদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন ঘাটের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুরসভার তিন কর্মী নীতেন রায়, ইমরান শেখ ও মনিরুল শেখ। তাঁরা খবর দিলে পুলিশ এসে মহিলাকে নিয়ে যায়। আধ ঘণ্টা পরে জ্ঞান ফেরে তাঁর। তবে তিনি কোনও কথা বলেননি।

পুলিশ জানায়, মহিলার সঙ্গে যে ব্যাগ ছিল, সেটিতে পাওয়া নথি থেকে জানা গেছে তাঁর বাড়ি কাটোয়ার চন্দ্রপুরডাঙায়। জামড়ায় একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সহায়িকার কাজ করেন তিনি। তাঁর স্বামী প্রায় পনেরো বছর ধরে নিখোঁজ। বাপের বাড়িতে দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে থাকেন মহিলা। পরিজনেরা জানান, মহিলা বাসে অঙ্গনওয়াড়ি যাতায়াত করেন। এ দিন কাটোয়ার ফেরিঘাটে কেন এলেন, সে নিয়ে ধন্দ রয়েছে। এ দিন তাঁর ছেলে এসে মহিলাকে বাড়ি নিয়ে যান। দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ছেলে বলে, ‘‘সপ্তাহখানেক ধরে মা কারও সঙ্গে কথা বলছিল না, ঠিকমতো খাওয়াদাওয়াও করছিল না। গুমরে থাকত। কারণ জানতে চাইলেও বলেনি কখনও।’’

বল্লভপাড়ার বাসিন্দা বিশ্বনাথ দিন পনেরো আগেও ডুবন্ত এক ব্যক্তিকে মাঝনদী থেকে উদ্ধার করেছিল। ফেরিঘাটে গত বছরে তিন ডুবন্ত মহিলাকে বাঁচিয়েছিলেন এই ঘাটের মাঝি গৌরাঙ্গ রাজোয়ার, পল্টু হালদারেরা। মাঝিদের কথায়, ‘‘ডুবন্ত মানুষকে বাঁচানোর প্রথাগত কোনও প্রশিক্ষণ নেই আমাদের। তবে সাঁতার জানার জন্য আজ প্রাণ বাঁচাতে পারলাম।’’

মাঝিদের ধন্যবাদ দিয়েছেন ওই মহিলার ছেলেও। ঘাটের ইজারাদার অশোক সরকার বলেন, ‘‘দক্ষ মাঝিদের জন্য আমাদের ঘাটের সুনাম বেড়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suicide Attempt Recovered Boatman Katwa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE