Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Mine

খনিগর্ভে মৃত্যু কর্মীর, নালিশ গাফিলতির

সকাল ১১টা ২০-তে আচমকা পাশেই কয়লার দেওয়াল খসে পড়ে। দেওয়াল চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু  হয় গোপালবাবুর।

খনিতে দুর্ঘটনার পরে বিক্ষোভ পরাশকোলে। নিজস্ব চিত্র।

খনিতে দুর্ঘটনার পরে বিক্ষোভ পরাশকোলে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
অণ্ডাল শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২০ ০০:৫৫
Share: Save:

খনিগর্ভে কয়লার দেওয়াল চাপা পড়ে কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু হল গোপাল গোপ (৪৮) নামে অণ্ডালের হরিশপুরের বাসিন্দা এক খনিকর্মীর। মঙ্গলবার ইসিএল-এর কাজোড়া এরিয়ার পরাশকোল কোলিয়ারির (ইস্ট) ঘটনা।

কোলিয়ারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে ভূগর্ভে ২৫ নম্বর ‘লেভেল’-এর ফাঁকা অংশে বালি ভরাটের জন্য পাইপ জোড়ার কাজ করতে যাচ্ছিলেন গোপালবাবু। সঙ্গে ছিলেন ওভারম্যান রামস্বরূপ দাস, খনিকর্মী দয়াময় কুণ্ডু, নিত্যানন্দ ঝা, সন্তোষ ধোবি। ওই সহকর্মীরা সংবাদমাধ্যমের একাংশকে জানান, গোপালবাবু বরাবরের মতোই দলটির আগে-আগে যাচ্ছিলেন। সকাল ১১টা ২০-তে আচমকা পাশেই কয়লার দেওয়াল খসে পড়ে। দেওয়াল চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গোপালবাবুর। এর পরেই কাজ বন্ধ রেখে মৃতের নিকটাত্মীয় হিসেবে পরিবারেরর এক জনকে চাকরি ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে শ্রমিক সংগঠনগুলি বিক্ষোভ দেখাতেশুরু করে।

এ দিকে, ঘটনার পরেই কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। বিএমএস নেতা শ্রীমন্ত চট্টোপাধ্যায় জানান, বালি ভরাটের আগে ‘রুফ বোল্টিং’ (কয়লা কাটার পরে সুড়ঙ্গের ছাদে লম্বা বোল্ট (রড) ঢুকিয়ে প্লেট দিয়ে শক্ত করে বাঁধা হয়, যা কয়লা বা পাথরের ছাদের স্তরকে ধরে রাখে) করা হচ্ছে না। পাশাপাশি, নিয়ম অনুযায়ী সুড়ঙ্গের দু’পাশের দেওয়ালের আলগা অংশকে লম্বা শাবল দিয়ে ফেলে দেওয়ার কাজও হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এআইটিইউসি নেতা রামচন্দ্র সিংহ, সিটু নেতা জয়ন্ত রায়, কেকেএসসি নেতা হরেরাম সিংহদের এক সুরে অভিযোগ, প্রতি বছর কোটি-কোটি টাকা সুরক্ষা সপ্তাহ পালন করা হলেও, আদতে কাজের কাজ কিছুই হয় না। খনির আধিকারিকেরা পরিস্থিতির নিরীক্ষণ করেন না। ঘটনাচক্রে, চলতি বছরের মে-তে এই কোলিয়ারিতেই কয়লার চাঁই পড়ে মারা যান এক খনিকর্মী।

অভিযোগ অস্বীকার করে ইসিএল-এর এক আধিকারিক জানান, সব সময় আলগা অংশ কোথায় রয়েছে, তা বোঝা যায় না। তা ছাড়া, অনেক সময়ে হাওয়ার সংস্পর্শে নতুন করে আলগা অংশ তৈরি হয়ে বিপত্তি ঘটে। সংস্থার সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায়ের দাবি, ‘‘দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা সবাই খনিতে নেমে সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেন। তবে কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে। বিধি মেনে মৃতের স্ত্রীকে চাকরিতে নিয়োগ করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণও দ্রুত দেওয়া হবে।’’ বিকেলের দিকে কোলিয়ারির স্বাভাবিক কাজকর্ম ফের শুরু হয়।

এ দিকে, মৃত কর্মীর বাড়ি, হরিশপুরের বাসিন্দা তপনকুমার পাল জানান, আগামী ডিসেম্বরে গোপালবাবুর ছোট মেয়ের বিয়ের ঠিক হয়েছে। সে জন্য তোড়জোড়ও চলছে। তার আগে এই ঘটনা। ঘটনার কথা জানার পরে কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই গোপালবাবুর স্ত্রী অপর্ণাদেবী ও তাঁর ছোট মেয়ে সুনীতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mine Death Andal Slide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE