Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Saudi Arabia

সৌদিতে ‘আটকে’ গলসির যুবক

স্বামীকে ভিন্‌ দেশ থেকে সুস্থ অবস্থায় ফেরানোর আর্জি নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন স্ত্রী।

সৌদি যাওয়ার আগে। নিজস্ব চিত্র।

সৌদি যাওয়ার আগে। নিজস্ব চিত্র।

কাজল মির্জা
 গলসি শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮ ০৪:১৮
Share: Save:

অভাবের সংসার। মেয়ে বড় হচ্ছে। তাই একমাত্র সম্বল বিঘা দেড়েক জমি বন্ধক রেখে সৌদি আরব পাড়ি দিয়েছিলেন গলসির খেতুড়া গ্রামের মনিরুদ্দিন শেখ। কিন্তু টাকা রোজগার তো দূর পাসপোর্ট কেড়ে নিয়ে তাঁকে মরুভূমিতে ভেড়া চড়ানোর কাজ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কোনও রকমে পালিয়ে বাড়িতে খবর দিয়েছেন ওই নির্মাণ শ্রমিক। স্বামীকে ভিন্‌ দেশ থেকে সুস্থ অবস্থায় ফেরানোর আর্জি নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন স্ত্রী।

জাহানারা বেগম বলেন, ‘‘সৌদি আরবে গিয়ে বিপদে পড়েছেন আমার স্বামী। দেশে ফিরতে চান তিনি। পাসপোর্ট, ভিসা সব কিছু ওখানকার দালাল কেড়ে নিয়েছে। এখান থেকে যিনি পাঠিয়েছিলেন তাঁর ফোনও বন্ধ।” অভিযোগ পেয়ে জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবের আশ্বাস, ‘‘আমরা দ্রুত পদক্ষেপ করব।’’

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮ জুন সৌদি আরব রওনা দেন মনিরুদ্দিন। চাঁদ শেখ নামে এক পরিচিতের কাছ থেকে ওখানে কাজের খোঁজ পান তিনি। চাঁদ সৌদি আরবের বাসিন্দা ইজাহার নামে এক যুবকে ফোন করে মনিরুদ্দিনকে পাঠিয়ে ছিলেন। তবে এখন চাঁদ বা ইজাহার কারও সঙ্গেই যোগাযোগ করা যাচ্ছে না বলে ওই রাজমিস্ত্রির পরিবারের দাবি। মনিরুদ্দিনের ভাই আব্বাসউদ্দিন জানান, ২২ জুন দাদা ও দেশে পৌঁছন। কথা ছিল, ওখানে রাজমিস্ত্রির কাজ দেওয়া হবে। কিন্তু মরুভূমিতে ভেড়া চড়ানোর কাজ দেওয়া হচ্ছে। খেতে দেওয়া হয় না, কিছু বলতে গেলে বেধড়ক মারধর করা হয় বলেও তাঁর অভিযোগ। এমনকি পাসপোর্ট চাইতে গেলেও প্রায় ৮০ হাজার টাকা (৪৬০০ রিয়েল) চাওয়া হচ্ছে বলে দাবি আব্বাসের। জাহানারা বেগম জানান, দু’দিন আগে কোনও রকমে ওখান থেকে পালিয়ে অন্য ডেরায় আশ্রয় নিয়েছেন মনিরুদ্দিন। সেখানকার কিছু বাংলাদেশি যুবকের সাহায্যেই বাড়িতে খবরও পাঠিয়েছেন তিনি। মনিরুদ্দিনের মা নূরনিহার বেগম বলেন, “ছেলের ফোনটাও নিয়ে নিয়েছে। এখন যাঁদের কাছে আছে তাঁদের ফোন থেকেই লুকিয়ে কথা বলছে। বাড়ি ফেরার জন্য কান্নাকাটি করছে ছেলেটা।’’

বুধবার গলসি ২-এর বিডিও শঙ্খ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই পরিবারটি আমার কাছে এসেছিলেন। ওদের পাশে প্রশাসন রয়েছে। পুরো আইনি সহযোগিতা করা হবে।” মনিরুদ্দিনের মেয়ে, সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া সুইটি বলে, ‘‘টাকার দরকার নেই। আব্বা ভাল ভাবে বাড়ি ফিরলেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Saudi Arabia Crisis International Affairs Galsi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE