Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
প্রশ্নে বেসরকারি হাসপাতাল

তরুণের মৃত্যু ডেঙ্গিতে বলায় চাপানউতোর

হাসপাতালে তরুণের অ্যালাইজা পরীক্ষা করানো হয়নি বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন যুক্তিতে ডেঙ্গির কথা লিখলেন।

এই ডেথ সার্টিফিকেট ঘিরেই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

এই ডেথ সার্টিফিকেট ঘিরেই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৮ ০১:৩২
Share: Save:

একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে কাঁকসায়। মৃত সঞ্জয় চৌধুরী (১৮) ত্রিলোকচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের পলাশডাঙার বাসিন্দা। কিন্তু মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। সঞ্জয়ের ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘ডেঙ্গি শক সিনড্রোম’ লিখেছে মলানদিঘির এক বেসরকারি হাসপাতাল। যদিও ওই হাসপাতালে তরুণের অ্যালাইজা পরীক্ষা করানো হয়নি বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন যুক্তিতে ডেঙ্গির কথা লিখলেন।

পলাশডাঙার বাসিন্দা রাজকুমার চৌধুরীর ছেলে সঞ্জয় পানাগড় হিন্দি হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরে সঞ্জয় জ্বরে ভুগছিল। সেই সঙ্গে তলপেট ফুলে গিয়েছিল। ব্যথাও হচ্ছিল। রাজকুমারবাবু জানান, জ্বর কমছে না দেখে ছেলেকে দিন দশেক আগে পানাগড় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় ১৭ অগস্ট মলানদিঘির একটি বেসরকারি হাসপাতালে সঞ্জয়কে স্থানান্তরিত করানো হয়। রাজকুমারবাবুর বক্তব্য, ‘‘হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও ছেলের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। ২০ অগস্ট তার মৃত্যু হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, ডেঙ্গির কারণে ছেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে।’’ বেসরকারি ওই হাসপাতাল থেকে দেওয়া ‘ডেথ সার্টিফিকেটে’-ও ডেঙ্গির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

যদিও এই মৃত্যুকে কোনও ভাবেই ডেঙ্গি বলতে রাজি নন প্রশাসনের নানা স্তরের কর্তারা। বিডিও (কাঁকসা) অরবিন্দ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই তরুণের চিকিৎসা সংক্রান্ত রিপোর্টগুলি খতিয়ে দেখা হয়েছে। তা দেখে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গিতে নয় ওই পড়ুয়ার ‘মাল্টি অর্গ্যান ফেলিওর’ হয়েছিল। সেটা কী কারণে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এটা ডেঙ্গি নয়, তা নিশ্চিত।’’ ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ওই বেসরকারি হাসপাতালে অ্যালাইজা পরীক্ষা করা হয়নি। শুধুমাত্র প্রাথমিক কিছু পরীক্ষার ফলের উপরে নির্ভর করেই ডেঙ্গি লেখা হয়েছে। অ্যালাইজা পরীক্ষায় এনএস ওয়ান পজিটিভ হলে, সে ক্ষেত্রেই একমাত্র ডেঙ্গির সম্ভাবনা রয়েছে বলে বোঝা যায়।

রাজকুমারবাবু জানান, বেসরকারি হাসপাতালের তরফে তাঁকে জানানো হয়, প্লেটলেটের পরিমাণ কমে ১৬ হাজার হয়ে গিয়েছিল। যদিও ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ১৮ অগস্ট ওই হাসপাতালেরই পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, সঞ্জয়ের প্লেটলেটের পরিমাণ এক লক্ষের বেশি ছিল। বিষয়টি নিয়ে সিএমওএইচ দেবাশিস হালদার বলেন, ‘‘অ্যালাইজা পরীক্ষা হয়নি বলেই জেনেছি। ওই হাসপাতালের থেকে সমস্ত রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। সে সব খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া জানতে ফোন করা হলেও উত্তর মেলেনি। উত্তর আসেনি এসএমএস-এরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death certificate dengue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE