বধূ মৃত্যুর পরে হাসপাতাল চত্বরে জটলা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
বোন অসুস্থ, খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দুই দাদা দেখেন, তরুণীর নিথর দেহ। অভিযোগ, তখন কথা কাটাকাটি হলে হাসপাতাল চত্বরেই দুই দাদাকে মারধর করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। শুক্রবার ইসিএলের অন্ডালের ছোড়া হাসপাতালের ঘটনা। পরিবারের দাবি, পণের দাবিতে বধূকে খুন করা হয়েছে। কন্যা সন্তান হওয়ায় অত্যাচার আরও বেড়েছিল বলেও অভিযোগ। পুলিশ জানায়, গ্রেফতার করা হয়েছে বধূর স্বামী ও শ্বশুরকে।
জামুড়িয়ার কেন্দার বাসিন্দা, কৃষণ চট্টোপাধ্যায় জানান, ২০১৫-র ডিসেম্বরে তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কা (২২) ও ছোড়ার খনিকর্মী সন্তু মুখোপাধ্যায় মণ্ডলের বিয়ে হয়। বধূর বাড়ির অভিযোগ, বিয়ের পরে থেকেই নানা অজুহাতে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রিয়াঙ্কাকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনতে বলতেন। চলত নির্যাতনও। আগামী সোমবার প্রিয়ঙ্কার মেয়ের মুখে ভাতের দিন ঠিক হয়েছিল। সেই উপলক্ষেও টাকা আনার জন্য প্রিয়ঙ্কাকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। প্রিয়াঙ্কার বাবা অসীমবাবুর অভিযোগ, ‘‘কন্যা সন্তানের জন্মের পরে মেয়ের উপরে অত্যাচার আরও বাড়ে। সন্তু ও তার ঘরের লোকজন মেয়েকে খুন করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’’
কৃষণবাবু জানান, বৃহস্পতিবার রাত সা়ড়ে ন’টা নাগাদ প্রিয়াঙ্কা বাপের বাড়িতে ফোন করে ছোড়ায় আসতে বলেন। অভিযোগ, তখন সন্তু ফোন কেড়ে নিয়ে বলেন, ‘‘স্বামী-স্ত্রী’র ঝগড়া, আসতে হবে না।’’ শুক্রবার সকাল ছ’টা নাগাদ সন্তু ফের কৃষণবাবুকে ফোনে জানান, স্ত্রী অসুস্থ, ছোড়া হাসপাতালে ভর্তি।
এর পরেই কৃষণবাবু ও বধূর পিসতুতো দাদা চিরঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালে যান। দু’জনের দাবি, ‘‘বোনের গলায় গলায় ফাঁসের চিহ্ন ছিল। সন্তুরা দেহ অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে আমরা বাধা দিই।’’ অভিযোগ, এর পরেই সন্তু-সহ শ্বশুরবাড়ির লোক জন মারধর করে কৃষণবাবুদের। কৃষণবাবুর দাবি, ‘‘মারধরে আমার নাক ও চিরঞ্জীবের মাথা ফেটে গিয়েছে।’’ বিক্ষোভ দেখানো হয় স্থানীয় বনবহাল ফাঁড়িতে। পরে সিআইএসএফ ও অন্ডাল থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। গ্রেফতার করা হয় সন্তু ও বধূর শ্বশুর উত্তমবাবুকে। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত শাশুড়ি, ননদ ও দেওর পলাতক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy