Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

অনুদান না আসায় সমস্যা প্রতিবন্ধী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে

দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে বেতন পাচ্ছেন না শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। প্রায় আট মাস বন্ধ মিড-ডে মিল। রাজ্য সরকারের জনশিক্ষা প্রসার দফতর অনুমোদিত আসানসোলের শ্রীমা প্রতিবন্ধী কল্যাণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এই পরিস্থিতি কবে ঘুচবে, সে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে অভিভাবকেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:২১
Share: Save:

দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে বেতন পাচ্ছেন না শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। প্রায় আট মাস বন্ধ মিড-ডে মিল। রাজ্য সরকারের জনশিক্ষা প্রসার দফতর অনুমোদিত আসানসোলের শ্রীমা প্রতিবন্ধী কল্যাণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এই পরিস্থিতি কবে ঘুচবে, সে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে অভিভাবকেরা। প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসক তথা আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত অবশ্য দ্রুত এই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

এই প্রতিবন্ধী কেন্দ্রটির কাছে গচ্ছিত সরকারি নথি থেকে জানা গিয়েছে, ১৯৮৮ সালে কেন্দ্রটি তৈরি হয়। প্রতিষ্ঠা করেন আসানসোলের প্রাক্তন বিধায়ক গোপিকারঞ্জন মিত্র। তিনি প্রথমে নিজের বাড়িতে কেন্দ্রটি শুরু করলেও পরে আসানসোলের মসজিদ বাড়ি লেনের বাসিন্দা আভা চৌধুরী তাঁর বাড়িটি এই কেন্দ্রকে দান করেন। সরকারি নথি থেকে আরও জানা যায়, ২০১০ সালের ১৬ নভেম্বর রাজ্যের জনশিক্ষা প্রসার দফতর এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিকে অনুমোদন দেয়। গত চার বছরে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামগ্রিক উন্নতির জন্য সরকারের তরফে একাধিক বার আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, শিক্ষক-শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মীদের জন্য এখনও সরকার নির্ধারিত বেতন পরিকাঠামো চালু করা হয়নি। তাঁরা যে সামান্য বেতন পেতেন, গত ২৮ মাস ধরে সেই টাকাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বন্ধ রয়েছে পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলও।

তবে এক দিনের জন্যও প্রশিক্ষন কেন্দ্রটি বন্ধ হয়নি। পড়ুয়ারা প্রতি দিন কেন্দ্রে আসে। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরাও নিয়মিত আসেন। শিক্ষক মাধব রায় বলেন, “আমরা কার্যত পেটে গামছা বেঁধে কাজ করছি। কেন্দ্র সরকারি স্বীকৃতি পাওয়ার পরে দিন ফেরার আশায় বুক বেঁধেছিলাম। কিন্তু এখন অবস্থা আরও খারাপ।” তাঁদের দাবি, পরিস্থিতির বদল চেয়ে অনেক বার প্রশাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু ফল হয়নি।

প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, এটির পূর্বতন পরিচালন সমিতির বিরুদ্ধে অতীতে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রটির ভবন নির্মাণের জন্য পাওয়া সরকারি অনুদান ও পড়ুয়াদের পোশাকের জন্য পাওয়া টাকা খরচের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তার পরেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকেরা লাগাতার আন্দোলন শুরু করেন। তাঁরা পরিচালন সমিতি ভেঙে দেওয়ার দাবি তোলেন। বছর দেড়েক আগে সরকার কেন্দ্রটির পরিচালন সমিতি ভেঙে দিয়ে আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসককে প্রশাসক নিয়োগ করে। যিনিই অতিরিক্ত জেলাশাসক হয়েছেন, পদাধিকার বলে এই কেন্দ্রের প্রশাসক নিযুক্ত হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত তিন জন প্রশাসক হিসেবে এই কেন্দ্রের মাথায় বসেছেন। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হয়নি বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় তাঁরা ফের আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে হুঁশিয়ারি শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের।

প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রশাসক তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত নানা সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, কেন্দ্রটির শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকার কারণেই সমস্যা মেটানো যাচ্ছে না। তিনি বলেন, “পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল বন্ধ থাকা ঠিক নয়। দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।” তবে কেন সরকারি অনুদান আর আসছে না, তার কোনও সদুত্তর মেলেনি প্রশাসকের কাছ থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE