Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জেলায় আলুর দাম বেঁধে দিল প্রশাসন

রাজ্য জুড়ে আলুর দাম বাড়তেই জেলার হিমঘরে মজুদ আলু ভিন রাজ্যে পাঠানো যাবে না বলে নিদান দিলেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। বৃহস্পতিবার একাধিক আলু ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সেখানে আলুর দামও বেঁধে দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৪ ০১:১৬
Share: Save:

রাজ্য জুড়ে আলুর দাম বাড়তেই জেলার হিমঘরে মজুদ আলু ভিন রাজ্যে পাঠানো যাবে না বলে নিদান দিলেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। বৃহস্পতিবার একাধিক আলু ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সেখানে আলুর দামও বেঁধে দেন। তবে বৈঠকের পরেই বর্ধমানের ফল ও সব্জি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক চন্দ্রবিজয় যাদব রীতিমতো প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, তাঁদের পক্ষে জেলাশাসকের নির্ধারিত দরে আলু বিক্রি করা সম্ভব হবে না। কারণ কিলো পিছু ১৪ টাকার বেশি দামেই আলু কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।

এ দিন আসানসোল, দুর্গাপুর, মেমারি, বর্ধমান ইত্যাদি এলাকার ন’জন আলু, পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ওই বৈঠক চলে প্রায় দেড় ঘণ্টা। বৈঠকে জেলাশাসক প্রস্তাব দেন, আলু কিলো পিছু ১৪ টাকা দরে বিক্রি করতে হবে। পাশাপাশি পাইকারি ব্যবসায়ীদের জানানো হয়, ২০০০ হাজার কুইন্ট্যালের বেশি আলু ও ৫০০ কুইন্ট্যালের বেশি পেঁয়াজ মজুত করা যাবে না। খুচরো ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ওই মজুতের পরিমাণ ৫০ কুইন্ট্যাল আলু ও ২০ কুইন্ট্যাল পেঁয়াজ।

এ দিন শহরের বাজার ঘুরে দেখা গিয়েছে, ১৬-২০ টাকা কেজি দরে জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে। চন্দ্রমুখী মিলছে ২৪ থেকে ২৬ টাকায়। যা সরকারি নির্ধারিত আলুর দামের চেয়ে অনেকটাই বেশি। জেলা কৃষি বিপণন দফতরের দাবি, জেলার বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৩০ টাকা কেজিতে। তবে বর্ধমানের বিভিন্ন বাজারে ২০ থেকে ২৪ টাকার ভেতর পেঁয়াজের দাম ঘোরাফেরা করেছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। তাঁরা জানান, এই পেঁয়াজ আসছে বিহার ও রাজস্থান থেকে।

জেলাশাসক বলেন, “ব্যবসায়ীদের স্পষ্ট জানানো হয়েছে রাজ্যর বাইরে আলু পাঠানো যাবে না। আমাদের জেলার সঙ্গে ভিন রাজ্যের যে সমস্ত চেকপোস্ট রয়েছে সেগুলিতে নজরদারি চালানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” এছাড়া নির্দিষ্ট করে দেওয়া পরিমাণের বেশি আলু কারও কাছে মিললে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান জেলাশাসক। তিনি জানান, বাজারে ঘুরে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও কৃষি বিপণন দফতরের কর্মীরা কোথাও নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি আলু, পেঁয়াজ মজুত হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখবেন।

তবে ব্যবসায়ীদের ওই দামে বিক্রি করা নিয়ে আপত্তি প্রসঙ্গে জেলাশাসক বলেন, “ব্যবসায়ীরা তাঁদের আপত্তির কথা আমাকে বলেছেন। আমি বলেছি, আপনাদের বক্তব্য লিখিত ভাবে জানান। কেন ১৪ টাকায় আলু বিক্রি করতে পারবেন না, তা বিস্তারিত ভাবে লিখুন। আমরা সেইবক্তব্য রাজ্য সরকারের কাছে পাঠাবো। তারপরে রাজ্য সরকার যা নির্দেশ দেবে, তাই মেনে চলতে হবে ওঁদের।”

জেলায় বিভিন্ন হিমঘরে আপাতত ৬ লক্ষ ৬৮ হাজার আলু মজুত রয়েছে বলে জানান কৃষি বিপণন দফতরের সহ-ডিরেক্টার সন্দীপ দাস। তাঁর দাবি, “যে পরিমাণ আলু মজুত রয়েছে, তাতে জেলায় আলুর অভাব দেখা দেবে না। এমনকী আলু বীজের ক্ষেত্রেও অভাব ঘটবে না। কিন্তু বাইরের রাজ্যে আলুর দাম বেশি হওয়ায়, এখানকার ব্যবসায়ীরা বাইরে আলু পাঠাচ্ছেন। তাতেই আলুর দাম বাড়ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

potato price specific burdwan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE