Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

জল-আলো নেই নতুন ভবনে, বিপাকে আইটিআই

নতুন ভবন হয়েছে। কিন্তু সেখানে আর পরিকাঠামো কিছু তৈরি হয়নি। পড়ুয়ার তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা কম। নেই যথেষ্ট সংখ্যক শিক্ষাকর্মী। সমস্যা মেটাতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বারবার আবেদন করলেও ফল মেলেনি বলে অভিযোগ রূপনারায়ণপুরের আইটিআই-এর। রূপনারায়ণপুরে ১৯৬৫ সালে রাজ্য সরকারের অনুদানে তৈরি হয় এই প্রতিষ্ঠানটি। স্থানীয় তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষিত করে শিল্পাঞ্চলে নানা সংস্থায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাই ছিল উদ্দেশ্য।

তৈরি হয়েও পড়ে। নিজস্ব চিত্র।

তৈরি হয়েও পড়ে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:১০
Share: Save:

নতুন ভবন হয়েছে। কিন্তু সেখানে আর পরিকাঠামো কিছু তৈরি হয়নি। পড়ুয়ার তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা কম। নেই যথেষ্ট সংখ্যক শিক্ষাকর্মী। সমস্যা মেটাতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বারবার আবেদন করলেও ফল মেলেনি বলে অভিযোগ রূপনারায়ণপুরের আইটিআই-এর।

রূপনারায়ণপুরে ১৯৬৫ সালে রাজ্য সরকারের অনুদানে তৈরি হয় এই প্রতিষ্ঠানটি। স্থানীয় তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষিত করে শিল্পাঞ্চলে নানা সংস্থায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাই ছিল উদ্দেশ্য। শুরুতে কলেজটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিন্দুস্তান কেব্লসের তত্ত্বাবধানে চলত। ব্যয়ভার অবশ্য বহন করত রাজ্য। পরে কেবল কারখানা রুগ্ণ হতে থাকায় রাজ্য সরকার এটির তত্ত্বাবধান শুরু করে। জানা গিয়েছে, হিন্দুস্তান কেব্লস, চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা, ইস্কোর কুলটি ও বার্নপুর কারখানা, ইসিএল, বিসিসিএল-সহ নানা সংস্থায় নিযুক্ত হয়েছেন এখান থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তেরা। প্রায় ৯ একর জমির উপরে দশটি ওয়ার্কশপ নিয়ে তৈরি হয় প্রতিষ্ঠানটি। আইটিআই সূত্রে জানা যায়, গত চার বছরে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। তাই পরিকাঠামো উন্নয়ন জরুরি হয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি প্রায় দু’কোটি টাকা ব্যয়ে একটি নতুন দোতলা ভবন তৈরি করা হয়েছে। পঠনপাঠনের জন্য সেখানে ১২টি বড় শ্রেণিকক্ষ তৈরি হয়েছে। কয়েকটি ওয়ার্কশপও তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু জলের ব্যবস্থা, বিদ্যুতের বন্দোবস্ত, ছাত্রছাত্রীদের বসার জন্য পর্যাপ্ত টেবিল-চেয়ার কিছুই নেই। আইটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস ছয়েক আগে জেলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নতুন ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন করেন। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকায় ভবনটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। কাজ চালাতে হচ্ছে সেই পুরনো ভবনেই। কলেজের সুপারিন্টেন্ডেন্ট দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট দফতরে পরিকাঠামো উন্নয়নের উপযুক্ত ব্যবস্থার আবেদন করেছি। আশা করি কিছু একটা হবে।”

দেবাশিসবাবু জানান, শুধু পরিকাঠামোর অভাব নয়, আছে আরও নানা সমস্যা। এই মুহূর্তে প্রতিষ্ঠানে পাঁচটি বিভাগের মোট ১৪টি ইউনিটে ২৮৪ জন প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তাঁর অভিযোগ, “এত জন ছাত্রছাত্রীকে পড়ানোর জন্য যত জন শিক্ষক দরকার, তা নেই। আমরা যৎসামান্য সাম্মানিক দিয়ে অস্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করে কোনও রকমে পঠনপাঠন চালিয়ে যাচ্ছি। প্রয়োজনের তুলনায় অন্তত পাঁচ জন শিক্ষাকর্মী কম আছেন। চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরও অভাব আছে।” আইটিআই কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, আর্থিক সহায়তাও নিয়মিত মেলে না। হস্টেল ও ওয়ার্কশপ চালাতে মাসে প্রায় ৬০ হাজার টাকা বিদ্যুতের বিল মেটাতে হয়। মাঝে-মাঝে বিল বাকি পড়ে যায়। এক বার তা বেশ কিছু দিন বাকি থাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল। আইটিআই কর্তৃপক্ষের দাবি, এই খরচ বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। আর্থিক কারণেই নতুন ভবনে জল-আলোর ব্যবস্থা করা যায়নি বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।

এলাকাবাসীর দাবি, এই প্রতিষ্ঠানে দূরদূরান্ত থেকে পড়ুয়ারা আসেন। শিল্পাঞ্চলের তরুণ-তরুণীদের নানা শিল্প সংস্থায় চাকরি পাওয়া বা স্বনির্ভর হওয়ার জন্য বড় ভরসা এই আইটিআই। তাই সেটির উন্নয়ন প্রয়োজন। বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়ের আশ্বাস, “সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আর্জি জানাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

iit water problem asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE