Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

টাকা নিয়ে বচসায় চড়ে মৃত্যু স্ত্রীর, ধরা দিলেন বৃদ্ধ

গোরুর দুধ বিক্রির টাকা কার কাছে থাকবে সেই নিয়ে ঝগড়া। রেগে বছর দশেকের ছোট স্ত্রীকে চড় কষালেন ৬৭ বছরের স্বামী। মৃত্যু হল স্ত্রীর। তার পরেই সোজা মঙ্গলকোটা থানায় গিয়ে অপরাধ স্বীকার করলেন স্বামী। মঙ্গলবার সকালে মঙ্গলকোটের কুলসুনো গ্রামে নিহত ওই প্রৌঢ়ার নাম রেণুকা দাস (৫৮)। পরে বিকেল নাগাদ তাঁর স্বামী, অভিযুক্ত মুক্তিপদ দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতকে বুধবার আদালতে তোলা হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:২৩
Share: Save:

গোরুর দুধ বিক্রির টাকা কার কাছে থাকবে সেই নিয়ে ঝগড়া। রেগে বছর দশেকের ছোট স্ত্রীকে চড় কষালেন ৬৭ বছরের স্বামী। মৃত্যু হল স্ত্রীর। তার পরেই সোজা মঙ্গলকোটা থানায় গিয়ে অপরাধ স্বীকার করলেন স্বামী।

মঙ্গলবার সকালে মঙ্গলকোটের কুলসুনো গ্রামে নিহত ওই প্রৌঢ়ার নাম রেণুকা দাস (৫৮)। পরে বিকেল নাগাদ তাঁর স্বামী, অভিযুক্ত মুক্তিপদ দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতকে বুধবার আদালতে তোলা হবে।

কুলসুনো গ্রামের দাসপাড়ায় সাঁকো পুকুরের পাড়ে থাকতেন ওই বৃদ্ধ দম্পতি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোরে পুকুরপাড়েই ঝগড়া শুরু হয় তাঁদের। তখনই মুক্তিপদবাবু স্ত্রী রেণুকাদেবীর গালে চড় মারেন। সঙ্গে সঙ্গে পুকুর পাড়ে পড়ে যান রেণুকাদেবী। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। তারপর মুক্তিপদবাবু গ্রাম থেকে হাঁটতে হাঁটতে বেরিয়ে এসে কুলসুনো থেকে বাসে উঠে নতুনহাট স্কুল মোড়ে নামেন। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে মঙ্গলকোট থানায় পৌঁছে গিয়ে অপরাধ স্বীকার করেন তিনি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পড়শিরা পুকুরপাড়ে রেণুকাদেবীর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। মুক্তিবাবুর খোঁজ শুরু হয়। খবর দেওয়া হয় মঙ্গলকোট থানায়। পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠায়।

মঙ্গলকোট থানার এক পুলিশ কর্তা জানান, মুক্তিপদবাবু থানায় ঢুকে হাতজোড় করে বলেন, “স্যার, আমি আমার বউকে মেরে ফেলেছি। বাড়ির সামনের পুকুর পাড়ে আমার বউয়ের দেহ পড়ে রয়েছে।” এই কথা শুনে চমকে গিয়ে ডিউটি অফিসার তাঁকে প্রশ্ন করেন, “আপনি এই ঘটনা ঘটালেন কী ভাবে?” তখন মুক্তিপদ দাবি করেন, কয়েকদিন ধরেই তাঁদের মধ্যে অশান্তি চলছিল। মঙ্গলবার সকালে বাড়ির পাশের পুকুরে মুখ ধুতে গেলে রেণুকাদেবী তাঁর হাতের আঙুল কামড়ে দেন। তখনই রেগে গিয়ে স্ত্রীকে চড় মারেন তিনি। তারপর পুকুর পাড়ে পড়ে গিয়েই মারা যান তাঁর স্ত্রী। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় মুক্তিপদবাবু জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়িতে একটি কালো রঙের গরু রয়েছে। সেই গরুর দুধ বিক্রির টাকা রাখা এবং গরুর দেখভাল করা নিয়ে তাঁদের মধ্যে প্রায়ই অশান্তি হতো। এ দিনের ঘটনাও তারই জের।

পাড়ায় নিরীহ মানুষ বলে পরিচিত মুক্তিপদবাবু তাঁর স্ত্রীকে খুন করেছেন শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা অবাক হয়ে গিয়েছেন। মুক্তিপদবাবুর পড়শি নবকুমার দাস বলেন, “মুক্তিপদবাবু নিজের হাতে চড় মেরে রেণুকাদেবী মেরে ফেলেছেন এটা বিশ্বাস করতে পারছি না।” ওই দম্পতির বড় ছেলে ধানু দাস কেতুগ্রামের গঙ্গাটিকুরিতে ও ছোট ছেলে মদন দাস মঙ্গলকোটের কৈচরে থাকেন। এ দিন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পুলিশ মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে ধানু দাসের আক্ষেপ, “আমরা কর্মসূত্রে পাঁচ বছর ধরে বাড়িতে থাকি না। তাই বাবা-মায়ের মধ্যে কী কারণে বিবাদ ছিল বলতে পারব না। তবে বাবা খুবই ভেঙে পড়েছেন। কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল ভাবতেই পারছি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

muktipada das renuka das katwa murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE