Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

তিন বছর পড়ে টাকা, বাড়ি-বাড়ি শৌচাগার স্বপ্নই

বাসিন্দাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েও শৌচাগার তৈরিতে ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে দাঁইহাট পুরসভার বিরুদ্ধে। উপভোক্তাদের অভিযোগ, তিন বছর ধরে পুরসভার ঘরে তাঁদের টাকা পড়ে রয়েছে। অথচ পুরসভা শৌচাগার তৈরি করে দিচ্ছে না, আবার টাকা ফেরতও দিচ্ছে না। তবে পুরসভার দাবি, সরকারি অনুদান বন্ধ থাকায় ওই শৌচাগারগুলি তৈরি করা যায় নি। বাসিন্দারা চাইলে টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলেও পুরসভার আশ্বাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দাঁইহাট শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:০৭
Share: Save:

বাসিন্দাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েও শৌচাগার তৈরিতে ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে দাঁইহাট পুরসভার বিরুদ্ধে। উপভোক্তাদের অভিযোগ, তিন বছর ধরে পুরসভার ঘরে তাঁদের টাকা পড়ে রয়েছে। অথচ পুরসভা শৌচাগার তৈরি করে দিচ্ছে না, আবার টাকা ফেরতও দিচ্ছে না। তবে পুরসভার দাবি, সরকারি অনুদান বন্ধ থাকায় ওই শৌচাগারগুলি তৈরি করা যায় নি। বাসিন্দারা চাইলে টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলেও পুরসভার আশ্বাস।

দাঁইহাট পুরসভার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের এখনও বিলের ধারে শৌচকাজ সারতে হয়। শহরের ভিতর বা বস্তি এলাকায় কমিউনিটি শৌচাগারও নেই। পুরসভা সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে জনস্বাস্থ্যের দিক থেকে পিছিয়ে পড়া এই শহর কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যূনতম মূল্যে শৌচাগার প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত হয়। পুরসভা সমীক্ষা করে দেখে, শহরে প্রায় দেড় হাজার বাড়িতে শৌচাগার নেই। প্রাথমিক পর্যায়ে ৪৬৬টি বাড়িতে শৌচাগারের অনুমোদন দেয় সরকার। তবে দাঁইহাট পুরসভার নির্বাহী বাস্তুকার তুহিনকুমার পাল বলেন, “শৌচাগার তৈরির জন্য অনেক পরিবারের দাবি রয়েছে।”

২০১১ সালের ২ নভেম্বর শৌচাগার তৈরির জন্য আনুমানিক ৪৭ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার অনুমোদন আসে। তার মধ্যে ১০ লক্ষ ৬৫ হাজার ৯৭৫ টাকা পুরসভার অ্যাকাউন্টে জমা হয়ে যায়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আইএলসিএস প্রকল্পের নিয়ম হল, শৌচাগার তৈরির মোট খরচ দশ হাজার টাকার মধ্যে উপভোক্তা দেবে হাজার টাকা। বাকি টাকার ৭৫ শতাংশ কেন্দ্র ও ২৫ শতাংশ রাজ্য দেবে। সেই নিয়ম মেনে ওই বছরেই উপভোক্তাদের কাছে শৌচাগার তৈরি বাবদ টাকা জমা নেয় পুর কর্তৃপক্ষ। দাঁইহাটের ভাগীরথী তীরবর্তী কালীতলা পাড়ার লক্ষ্মী রাজোয়ার কিংবা চৌধুরী পাড়ার প্রসেনজিৎ চৌধুরীরা বলেন, “বেশিরভাগ মানুষ দিনমজুর। অনেক কষ্ট করে পুরসভায় এক হাজার টাকা করে জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু তিন বছর কেটে গেলেও শৌচাগার হয়নি।” স্থানীয় মিঠুন রাজোয়ার, রানো রাজোয়ার, লালু চৌধুরীদের ক্ষোভ, “গঙ্গার ধারই আমাদের ভরসা। পুর এলাকাতে থেকেও মনে হয় যেন পঞ্চায়েতে থাকি।” স্থানীয় বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, পুরসভার অনুমতির সাপেক্ষে অনেকেই ঋণ করে শৌচাগার তৈরি করে নিয়েছেন, কিন্তু তাঁরাও টাকা পাননি। পুরসভার দাবি, সম্পূর্ণ না হলেও ৪০০০ টাকা করে বেশ কিছু পরিবারকে শৌচাগার তৈরির জন্য দেওয়া হয়েছে।  শৌচাগার তৈরির দাবি নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূলও। দলের যুব নেতা সুমন দাসের অভিযোগ, কংগ্রেস পরিচালিত পুরবোর্ডের অকর্মণ্যতার জন্যই শৌচাগার তৈরির প্রকল্প সফল হল না। যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ কংগ্রেস পুরপ্রধান সন্তোষ দাস। তিনি বলেন, “রাজের কাছে ৩৬ লক্ষ টাকার উপর পাওনা রয়েছে। সেই টাকা আটকে থাকার জন্যই সমস্যা। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যে সব পরিবারকে অনুদান দিতে পারিনি, তাঁরা চাইলে আমরা টাকা ফেরত দিয়ে দেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

toilet dainhaat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE