Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বিআইএফআর থেকে মুক্ত, খুশির হাওয়া ইসিএলে

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে বিআইএফআর থেকে মুক্ত হল রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা ইসিএল। বুধবার দিল্লিতে বিআইএফআর সরকারি ভাবে এ কথা ঘোষণা করেছে বলে ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে। সংস্থার সিএমডি রাকেশকুমার সিংহ এ জন্য শ্রমিক-কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।

বিআইএফআরে ইসিএল নিয়ে বৈঠকের পর।

বিআইএফআরে ইসিএল নিয়ে বৈঠকের পর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:০৬
Share: Save:

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে বিআইএফআর থেকে মুক্ত হল রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা ইসিএল। বুধবার দিল্লিতে বিআইএফআর সরকারি ভাবে এ কথা ঘোষণা করেছে বলে ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে। সংস্থার সিএমডি রাকেশকুমার সিংহ এ জন্য শ্রমিক-কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।

কোল ইন্ডিয়া সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৭২ সালে দেশের কোকিং কোল কোম্পানিগুলি প্রথমে রাষ্ট্রায়ত্তকরণ হয়। ১৯৭৩ সালে ইসিএল-সহ দেশের সব ক’টি নন-কোকিং কোল সংস্থাকে রাষ্ট্রায়ত্তকরণ করা হয়। ১৯৭৫ সালে দেশের পাঁচটি কয়লা সংস্থাকে একত্রিত করে কোল ইন্ডিয়া গঠন করা হয়। কোল ইন্ডিয়ার অধীনস্থ সংস্থা ইসিএল জন্মলগ্ন থেকেই খুঁড়িয়ে চলছিল। কয়লা শিল্প রাষ্ট্রায়ত্তকরণের পর থেকে কখনও লাভের মুখ দেখেনি ইসিএল। ক্রমাগত লোকসানে চলা এই সংস্থাটি ১৯৯৯ সালে বিআইএফআর-এর অধীনে চলে যায়। কর্তৃপক্ষ থেকে সাধারণ শ্রমিক-কর্মী কেউই তখন ভাবতে পারেননি, আবার লাভজনক করে তোলা যাবে এই সংস্থাকে। বের করে আনা সম্ভব বিআইএফআর থেকে। সংস্থার সিএমডি রাকেশকুমার সিংহ বলেন, “সেই অসাধ্য সাধন করেছেন সাধারণ শ্রমিক-কর্মীরা। আমি সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।”

ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানান, গত চারটি অর্থবর্ষে ইসিএল প্রচুর লাভ করেছে। যা আগের সমস্ত দায়কে ছাপিয়ে গিয়েছে। গত অর্থবর্ষে সংস্থার লাভের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা। এই অবস্থায় ইসিএলকে বিআইএফআর থেকে বের করে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেন কোল ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে এই লাভের ধারা ধরে রাখার জন্য কয়লাখনিগুলি আধুনিকীকরণের ব্যবস্থা করেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ। নীলাদ্রিবাবু জানান, ঝাঁঝরা, শোনপুর বাজারি, রাজমহলের মতো লাভজনক খনিগুলিতে সুসংহত খনন প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে। এত দিন যে কাজ হাতে করে করা হত, তা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে করার ব্যবস্থা হয়েছে। অলাভজনক অথচ সম্ভাবনাময় খনিগুলিতে বেসরকারি ঠিকা সংস্থাকে দিয়ে কয়লা তোলার ব্যবস্থা করা হয়। এর ফলে এক দিকে যেমন ইসিএলের লাভের ধারা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে, তেমনই এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড, এই দুই রাজ্যে ভূগর্ভস্থ ও খোলামুখ মিলিয়ে ১০৫টি খনি আছে ইসিএলের। শ্রমিক-কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার।

খারাপ সময় কাটিয়ে ওঠার পরেও ইসিএলের লাভের ধারা বজায় রাখার ব্যাপারে মাঝে-মাঝে আশঙ্কায় ভোগেন সংস্থার কর্তারা। কারণ, নানা অছিলায় সংস্থার উৎপাদন প্রক্রিয়া বন্ধ করে আন্দোলনে নামেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শ্রমিক সংগঠনগুলি। সংস্থার স্বার্থে ভবিষ্যতে এই ধরনের আন্দোলন না করার আবেদন জানানো হয়েছে কর্তৃপক্ষের তরফে।

ইসিএলের লাভের ধারা যাতে বজায় থাকে সে দিকে খেয়াল রাখার কথা তাঁরাও মাথায় রাখছেন বলে দাবি করেছেন আইএনটিইউসি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, সিটু নেতা বংশগোপাল চৌধুরীরা। বিআইএফআর থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সংস্থার শ্রমিক-কর্মীদের অভিনন্দন জানান তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bifr ecl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE