কালনায় টোটো। —নিজস্ব চিত্র।
পুরসভার অনুমোদন আছে এমন রিকশা চালকেরাই শুধুমাত্র টোটো চালাতে পারবেন— পুরসভার তরফে এমনই ঘোষণা করা হল কালনায়। লাইসেন্স ছাড়া যাঁরা টোটো চালাবেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। শুক্রবার এই ঘোষণার পরে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে কালনা শহরের টোটো চালকদের মধ্যে। ঘোষণার প্রতিবাদে মহকুমাশাসক ও পুরসভায় স্মারকলিপিও দিয়েছেন তাঁরা।
টোটো চালকেরা জানান, মাস চারেক ধরে শহরের রাস্তায় টোটো চলাচল শুরু হয়েছে। বর্তমানে শহরে প্রায় ৭০টি টোটো চলে। ফলে গতি বেড়েছে শহরের। বাইরে থেকেও অনেক বেশি লোক নানা প্রয়োজনে শহরে আসছেন বলে তাঁদের দাবি। চালকদের দাবি, তাঁরা আইন মেনেই গাড়িগুলি কিনেছেন। বেশির ভাগ গাড়ি মালিকই নিম্ন মধ্যবিত্ত অথবা দরিদ্র পরিবারের। গাড়ি কিনতে ব্যাঙ্ক ঋণ অথবা বাজার থেকে চড়া সুদে টাকা নিতে হয়েছে বলেও তাঁদের দাবি। এই পরিস্থিতিতে পুর প্রশাসন আচমকা গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিলে পথে বসতে হবে বলেও আশঙ্কা তাঁদের।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের রিকশা চালকদের টোটো কিনে দেওয়ার একটা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রিকশা চালক, চার ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠকও হয়েছে। বৈঠকে ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, ব্যাঙ্ক ঋণের জন্য এককালীন নগদ ২০ হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা করে জমা দিলে তারা রিকশ চালকদের হাতে টোটো দিবেন। তবে মাসের টাকা যাতে সময়ে জমা পরে সে ব্যাপারে পুরসভাকে বিশেষ ভূমিকা নিতে হবে। পুরসভার দাবি, এই পদ্ধতিতে অনেকটা এগিয়েও গিয়েছেন তাঁরা। তবে সমস্যা দেখা দিয়েছে অন্য জায়গায়। পুরসভা সূত্রে খবর, রিকশা চালকদের হাতে টোটো পৌঁছনোর আগেই ক্রমাগত বেড়ে চলেছে আবেদনকারীর সংখ্যা। ব্যক্তিগত উদ্যোগে টোটো কেনার জন্যও অনেকে আবেদন করছেন। পুরসভার আশঙ্কা, এতে শহরের চাহিদার তুলনায় গাড়ি বেশি পথে নামার সম্ভবনা তৈরি হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সময়ে ব্যাঙ্ক ঋণ শোধ করার ক্ষেত্রেও মুশকিল হবে বলে তাঁদের দাবি। পুরপ্রধান বলেন, “লাইসেন্স থাকা রিকশা চালকদের আগে টোটো গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে। তবে ইতিমধ্যে যাঁরা এই গাড়ি কিনে ফেলেছেন তাঁদের কথাও ভাবা হচ্ছে। তাঁদের একটি তালিকাও জমা দিতে বলা হয়েছে।”
এ দিন ঘোষণার কথা জানাজানি হতেই প্রথমে ক্ষোভ ছাড়ায় কালনা খেয়াঘাটে। সকাল দশটা নাগাদ টোটো চালকদের একটি দল পুরপ্রধান বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর বাড়ির সামনে হাজির হন। পুরপ্রধান তাঁদের জানান, পুরসভায় বেলা ১২টা নাগাদ তিনি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন। পরে টোটো চালকেরা মহকুমাশাসকের কাছেও তাঁদের দাবি জানান। মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy