Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

শহরে এলেন, সমাবর্তনে পৌঁছতে পারলেন না পার্থ

আমন্ত্রণে সম্মানীয় অতিথি হিসেবে নাম থাকলেও, সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন না শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাঁর আসার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে না এসে তারাবাগ গেস্ট হাউসে চলে যান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল। —নিজস্ব চিত্র।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৩৪
Share: Save:

আমন্ত্রণে সম্মানীয় অতিথি হিসেবে নাম থাকলেও, সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন না শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

বৃহস্পতিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাঁর আসার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে না এসে তারাবাগ গেস্ট হাউসে চলে যান তিনি। অনুষ্ঠানের সময় সেখানেই ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, রেলগেটে আটকে পড়ায় দেরি হয়ে যাওয়ায় সমাবর্তনে যোগ দিতে পারেননি শিক্ষামন্ত্রী। পরে অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তারাবাগ গেস্ট হাউসে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি ও উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকারের সঙ্গে কিছুক্ষণ বৈঠক করেন তিনি।

এ দিনের অনুষ্ঠানে ১৭০ জনকে পিএইচডি, ২৯ জনকে এমফিল, ৫০ জনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণপদক ও আরও ১৫ জনকে বৃত্তি দেওয়া হয়। তার সঙ্গে সাম্মানিক ডিলিট দেওয়া হয়েছে দিল্লি আইআইটি-র প্রাক্তন শিক্ষক পদ্মশ্রী সুনীতা জৈনকে এবং সাম্মানিক ডিএসসি দেওয়া হয়েছে ইন্ডিয়ান ন্যাশন্যাল সায়েন্স অ্যাকাডেমির সভাপতি, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী রাঘবেন্দ্র গড়গকরকে।

সাম্প্রতিক কালে এ রাজ্যে বেশ কিছু শিক্ষক-নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। ২৬ জানুয়ারির অনুষ্ঠানে শিক্ষায় নৈরাজ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলায় মার খান কাকদ্বীপের স্কুলশিক্ষক গৌতম মণ্ডল। দিন দুয়েক আগে ঘাটালের রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষক অমিত রায়কে স্টাফরুমে ঢুকে মারধর করে ছাত্ররা। তাঁর ‘দোষ’ ছিল, ফেসবুকে মনোনয়ন তোলা নিয়ে টিএমসিপি-র কার্যকলাপের কথা লিখেছিলেন তিনি।

এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী বলেছেন, “ছাত্রদের অধ্যবসায়ের সঙ্গে শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখাতে হবে। তাহলেই শিক্ষকেরা ছাত্রদের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবেন এবং বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করবেন। যা ভবিষ্যতে ছাত্রদের চলার পথকে সুগম করবে।” কলকাতা তথা মুম্বই হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়ও সমাবর্তন উৎসবে বলেন, “রাজনীতি ছাত্রেরা করবে কি না, সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু পঠনপাঠন ও অধ্যবসায়কে বাদ দিয়ে রাজনীতি মনস্ক হওয়া যাবে না।”

আর লিখিত ভাষণে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “ছাত্রদের প্রতিভাকে ধরে রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে ভর্তির সময় সঠিক ভাবে তাদের বাছাই করতে হবে। পাশাপাশি সবচেয়ে সেরা মানুষটিকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করতে হবে। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার উন্নয়নের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়বে।”

এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল সমর্থক কর্মচারী ইউনিয়ানের নেতারা ফুলের তোড়া নিয়ে গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে শিক্ষামন্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। তাঁদের আয়োজনও মাঠে মারা যায়। অবশ্য পার্থবাবুকে এ নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “আমার ভাষণ তো সমাবর্তনে পাঠ করা হয়েছে। আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আমাকে কিছু কাগজপত্র দেওয়া হয়ছিল। বসে বসে সেই কাজই করছিলাম।” উপাচার্য স্মৃতিকুমারবাবু এ নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে চাননি। শুধু বলেন, “তিনি আলাদা করে আমাকে অনুপস্থিতির কোনও কারণ বলেননি। তাঁর লিখিত ভাষণ সমাবর্তনে বিলি করা হয়েছে।”

জেলা পুলিশ সূত্রেও বলা হয়েছে, বীরভূম থেকে ফেরার পথে পার্থবাবুর গাড়ি বর্ধমান-সিউড়ি রোডে তালিত রেলগেটে প্রায় ৪৫ মিনিট আটকে থাকে। তাই সমাবর্তনে পৌঁছতে দেরি হয়ে যায় তাঁর। পরে গেস্ট হাউসে বৈঠকের পরে মধ্যাহ্ন ভোজন সেরে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয়ে যান শিক্ষামন্ত্রী। তৃণমূলের পরিষদীয় সচিব তথা বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামানিককে এ দিন পার্থবাবুর সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। তিনি বলেন, “তাঁর সঙ্গে আমাদের কিছু দলীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE