উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে ছেলের অ্যাডমিট কার্ড না মেলায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষকদের খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক অভিভাবকের বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটে কাঁকসার গোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। সোমবার বিকেলে অভিযুক্ত অভিভাবক তপন কুমার পালকে গ্রেফতার করে কাঁকসা থানার পুলিশ।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, গোপালপুরের বাসিন্দা তপনবাবুর ছেলে উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম ফিলআপ করেননি। মাস খানেক আগে ফর্ম ফিলআপের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পর আচমকা একদিন তপনবাবু প্রধান শিক্ষকের ঘরে ঢুকে ছেলের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করিয়ে দিতে বলেন। প্রধান শিক্ষক অতুল মজুমদার বলেন, “আমি ওই অভিভাবককে বোঝানোর চেষ্টা করি যে ফর্ম ফিলআপ না করলে স্কুলের তরফে কিছু করা সম্ভব নয়। ওনাকে সংসদে গিয়ে খোঁজ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।” এর কয়েকদিন পর তপনবাবু ফের স্কুলে এসে দাবি করতে থাকেন, তিনি সংসদে গিয়ে জেনেছেন যে তাঁর ছেলে ‘সিসি’ পরীক্ষার্থী হিসাবে পরীক্ষা দিতে পারে। বিগত এক বছর ধরে তপনবাবুর ছেলে স্কুলে আসে না বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি। সে টেস্ট পরীক্ষাও দেয়নি বলে জানা গেল। এ দিকে সমস্ত পরীক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ড এসে গেলেও তাঁর ছেলের না আসায় তপনবাবু শনিবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ ফের স্কুলে আসেন। এ বার তপনবাবু অভিযোগ করতে থাকেন, স্কুলের গাফিলতিতেই ছেলে পরীক্ষা দিতে পারবে না। তারপরই তপনবাবু প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য সহ শিক্ষকদের গালিগালাজ করতে থাকেন বলে অভিযোগ। এমনকী শিক্ষকদের খুনের হুমকিও দেন বলে অভিযোগ। অতুলবাবুর অভিযোগ, “আমাকে ও সহ শিক্ষকদের গুলি করে মারার হুমকি দিচ্ছিলেন ওই অভিভাবক। পরিচালন সমিতির সঙ্গে আলোচনা করে পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।” স্কুলের শিক্ষকেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান প্রধান শিক্ষক।
এ দিকে অভিযুক্ত তপনবাবু এলাকায় সক্রিয় সিপিএম কর্মী বলেই পরিচিত। সোমবার সকালে তৃণমূলের তরফে গোপালপুর এলাকায় একটি ধিক্কার মিছিলও বের করা হয়। স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রমেন্দ্রনাথ মণ্ডলের দাবি, বছর দেড়েক আগে আমাদের একটি মিছিলেগুলি চালানোর ঘটনায় তপনবাবু ও তাঁর ছেলে অভিযুক্ত। সোমবার বিকেলে পেশায় গোপালপুর পঞ্চায়েতের কর্মী তপনবাবুকে গ্রেফতার করে কাঁকসা থনার পুলিশ। তৃণমূল নেতা তথা কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, “শিক্ষা ক্ষেত্রে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা যে সিপিএমের পুরনো অভ্যাস এই ঘটনাতেই তা ফের প্রমাণিত।”
কাঁকসার প্রাক্তন সিপিএম জোনাল সম্পাদক তথা দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডল অবশ্য বলেন, “আলোচনার ম্যধ্যমেই সমস্যা মেটানো উচিত। শিক্ষাক্ষেত্রে গোলমাল পাকানোর ঘটনা দল অনুমোদন করে না। প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy