গণ্ডীবদ্ধ নাপিতপাড়া, সামনে পুলিশ প্রহরা। ছবি: সুব্রত জানা
সাকুল্যে ৫০টি পরিবারের বাস আমতার মেলাইপাড়া সংলগ্ন নাপিতপাড়ায়। এই ছোট্ট মহল্লাতেই ২৯ জন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলল। আক্রান্তদের সিংহভাগই ক্ষৌরকার এবং তাঁদের পরিবারের লোকজন। শুক্রবার বিকেলে তাঁদের রিপোর্ট আসে। সকলেই উপসর্গহীন বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। ফলে, তাঁদের বাড়িতেই চিকিৎসা হবে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে নাপিতপাড়াকে ‘গণ্ডিবদ্ধ’ (কন্টেনমেন্ট) করে দেওয়া হয়েছে। বাইরে থেকে কেউ ওই পাড়ায় যেতে পারবেন না। পাড়ার বাসিন্দারাও কেউ বাইরে বেরোতে পারবেন না আপাতত। তাঁদের জন্য বাইরে থেকে খাবার ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জোগান দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। আক্রান্তদের বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘নতুন নিয়মে উপসর্গহীন করোনা রোগীদের বাড়িতেই চিকিৎসা করতে হবে। নিয়মিত আক্রান্তদের বাড়িতে যাবেন চিকিৎসকেরা। আক্রান্তদের হোম আইসোলেশন-এ রাখা হয়েছে। বাকিদের গৃহ নিভৃতবাসে রাখা হয়েছে। পুরো ব্যবস্থাটির তত্ত্বাবধান করবে স্বাস্থ্য দফতর।’’ আমতা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ধনঞ্জয় বাকুলি বলেন, ‘‘পুরো পাড়া জীবাণুমুক্ত করা হবে। আমতা বাজার সিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
জেলার শহর এলাকায় একই পাড়ায় অনেকের করোনা সংক্রমণের ঘটনা আগে ঘটলেও গ্রামীণ এলাকায় এটা প্রথম বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। কিন্তু কী ভাবে হল সংক্রমণ?
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় করোনা সংক্রমণের ঘটনা প্রথম জানা যায় সপ্তাহখানেক আগে। দফতরের উদ্যোগে যক্ষ্মারোগীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ আছে কিনা, তা জানতে আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে দিন পনেরো আগে শিবির হয়। সেখানে নাপিতপাড়ার এক যুবক আসেন। পাঁচলায় তাঁর একটি সেলুন আছে। তিনি নিয়মিত যক্ষ্মার চিকিৎসা করান। পরীক্ষার রিপোর্টে তাঁর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। স্বাস্থ্য দফতর তাঁকে ফুলেশ্বরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। ওই যুবকের সংক্রমণ ধরা পড়ার পরেই নাপিতপাড়ার সব বাসিন্দার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হয়। রিপোর্টে দেখা যায়, আরও ২৮ জনের করোনা পজ়িটিভ। আক্রান্তদের মধ্যে ১৪ জন মহিলা আছেন।
এরপরেই সাড়া পড়ে যায় জেলা প্রশাসনের অন্দরে। শনিবার এলাকায় আসেন জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর এবং পুলিশের পদস্থ কর্তারা। দফায় দফায় তাঁরা বৈঠক করেন। নাপিতপাড়ার সামনে পুলিশ প্রহরা বসানো হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানান, আক্রান্ত ক্ষৌরকাররা বিভিন্ন সেলুনে কাজ করেন। কারও নিজের সেলুন আছে। তাঁদের কারও অবস্থা গুরুতর হলে হাসপাতালে পাঠানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy