Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বৃষ্টির জল ধরে রেখে ব্যবহার গোঘাটের স্কুলে

কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ‘সুইড’ থেকে ভূগর্ভস্থ জলস্তরের নিরিখে সম্প্রতি গোঘাট ২ নম্বর ব্লককে ‘ক্রিটিকাল ব্ল্যাক জোন’ চিহ্নিত করা হয়েছে। জল সঙ্কট মেটাতে ‘সুইড’-এর রাজ্য দফতর থেকে এলাকায় বৃষ্টির জল ধরে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে অনেক দিন ধরেই।

উদ্যোগ: এই ট্যাঙ্কেই ভরা হবে বৃষ্টির জল। নিজস্ব চিত্র

উদ্যোগ: এই ট্যাঙ্কেই ভরা হবে বৃষ্টির জল। নিজস্ব চিত্র

পীযূষ নন্দী
গোঘাট শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৩৫
Share: Save:

জল সমস্যার সমাধানে বৃষ্টির জল ধরে রাখার প্রকল্প শুরু হল গোঘাটের কামারপুকুর নয়নতারা বালিকা বিদ্যালয়ে। স্কুলেই বসানো হয়েছে পাঁচ হাজার লিটারের চারটি ট্যাঙ্ক। এই ট্যাঙ্কগুলির মাধ্যমেই ছাদের জল ধরে রেখে ব্যবহার করা হবে স্কুলের দৈনন্দিন নানা কাজে।

কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ‘সুইড’ থেকে ভূগর্ভস্থ জলস্তরের নিরিখে সম্প্রতি গোঘাট ২ নম্বর ব্লককে ‘ক্রিটিকাল ব্ল্যাক জোন’ চিহ্নিত করা হয়েছে। জল সঙ্কট মেটাতে ‘সুইড’-এর রাজ্য দফতর থেকে এলাকায় বৃষ্টির জল ধরে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে অনেক দিন ধরেই। এবার ওই দফতরের উদ্যোগেই এবং একটি ট্রাস্টের আর্থিক সহায়তায় কামারপুকুরের ওই স্কুলে জল সংরক্ষণ প্রকল্প রূপায়িত হল।

স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি জগবন্ধু ঘোষ বলেন, “এই বর্ষা থেকেই বৃষ্টির জল সঞ্চয় করা হবে। ওই জলেই স্কুলের বাগান পরিচর্যা, আনাজ চাষ হবে। মিড ডে মিলের পর থালা-বাসন ধোয়ার কাজেও এই জল ব্যবহার করা যাবে। ছাত্রীরা হাত ধুতেও পারবে।’’

জল সংরক্ষণ ও জল সঞ্চয় কর্মসূচি নিয়ে এলাকায় প্রচার চলছে দেদার। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বেশ কিছু পুকুর খনন ও সংস্কার, চেক বাঁধ নির্মাণ হয়েছে। তবে অভিযোগ, বৃষ্টির জল সংরক্ষণের বিষয়টি অবহেলিত থেকে গিয়েছে বরাবর। ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০১০ সালে রাজ্য সরকার নির্দেশ দেয়, পঞ্চায়েত দফতর, অন্য সরকারি কার্যালয়, স্কুল, শিশু-শিক্ষাকেন্দ্র, মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র ইত্যাদি যে ভবনগুলিতে বড় পাকা বা টিনের ছাদ রয়েছে সেখানে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের জন্য জলাধার নির্মাণ করতে হবে। পান করা ছাড়া অন্য দৈনন্দিন কাজে ওই জল ব্যবহার করা যাবে বলে প্রচার এবং কর্মশালাও হয়। কিন্তু তারপরেও সেভাবে প্রকল্পের বাস্তবায়ন হয়নি বলে অভিযোগ।

গোঘাটের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক শ্যামল রায় বলেন, “বৃষ্টির জল সংরক্ষণের ক্ষেত্রে প্রশাসনের তেমন উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ১০০ দিনে কাজে ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্পে কিছু কাঠামো নির্মাণ হলেও যথাযথ রূপায়িত হয়নি কোথাও।’’

এই প্রকল্প নিয়ে আরও তৎপর হওয়া উচিত ছিল বলে স্বীকার করে নেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রকল্প নির্মাণে খরচও বেশি নয়। ১০ হাজার লিটার ক্ষমতাসম্পন্ন একটি জলাধার-সহ প্রকল্পটির সম্পূর্ণ খরচ ৩০ হাজার টাকার মধ্যে। প্রকল্পটি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চাপ সৃষ্টি করলে সাফল্য না মেলার কারণ ছিল না।’’

এই পরিস্থিতিতে নয়নতারা বালিকা বিদ্যালয়ের উদ্যোগ এলাকায় আরও প্রকল্প তৈরিতে উৎসাহ দেবে বলেই মনে করছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ভাস্বতী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “গোঘাট ২ নম্বর ব্লকে ভূগর্ভস্থ জলস্তর সঙ্কটজনক। নতুন নলকূপ বসানোয় বিধি নিষেধ রয়েছে। এই অবস্থায় আমাদের স্কুলে জল সংরক্ষণ প্রকল্পটি এলাকায় উৎসাহ জোগাবে বলে আশা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School Rain Water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE